———–জন্মদিনে স্মরণঃ অড্রে হেপবার্ন———-
স্বর্ণালী যুগে সৌন্দর্যের প্রতিমূর্তি বলতে যা বোঝায়, কিংবদন্তি ব্রিটিশ অভিনেত্রী অড্রে হেপবার্ন ছিলেন ঠিক তাই। ‘রোমান হলিডে’ কিংবা ব্রেকফাস্ট অ্যাট টিফানি’স-এর মতো সিনেমা দিয়ে হেপবার্ন জায়গা করে নিয়েছিলেন সিনেমা অনুরাগীর হৃদয়ে। লিউডে হেপবার্ন একজন চলচ্চিত্র ও ফ্যাশন আইকন হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন। তিনি আমেরিকান ফিল্ম ইনস্টিটিউট কর্তৃক মার্কিন চলচ্চিত্র ইতিহাসের তৃতীয় সেরা নারী কিংবদন্তি হিসেবে স্বীকৃতি পান। আন্তর্জাতিক সেরা পোশাক-পরিধানকারী তালিকা হল অফ ফেমেও স্থান পান। হলিউড কাঁপানো অভিনেত্রীর মূল নাম এন্ড্রি ক্যাথেলিন রুস্তান। ছদ্মনাম এডডা বান হেমেত্রা। বাবা ইংলিশ ব্যাংকার জোসেফ ভিক্টর এন্তোনি রোস্তনের একমাত্র কন্যা ছিলেন তিনি। মা ইলা ভ্যান হেমেস্ত্রা। ১৯৩৫ থেকে ১৯৩৮ সাল পর্যন্ত তিনি পড়েছেন ইংল্যান্ডের মিস রিগান স্কুলে। শৈশব কেটেছে হল্যান্ডে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তিনি জার্মানিতে ছিলেন। জার্মান সীমান্তের অর্নহেমেও থেকেছেন কিছুদিন। ১৯৪৮ সাল। একজন ফটোগ্রাফারেরর মডেল হিসেবে কাজ করতে শুরু করেন হেপবার্ন। ব্রিটিশ থিয়েটারে কোরাস গার্লের কাজ কিছুদিন করার পর ব্রিটেনে কয়েকটি সিনেমায় কাজ করেন।
জীবনের মোড় ঘুরে যায় বিখ্যাত রোমান্টিক ছবি ‘রোমান হলিডে’তে অভিনয়ের পর। একই সঙ্গে অস্কার, গ্রেমি, এমি এবং টনি এওয়ার্ড। ‘রোমান হলিডে’ ছাড়াও ‘সাবরিনা’, ‘দ্য নানস স্টোরি’, বিখ্যাত কমেডি ছবি ‘দ্য চারার্ডস’, ‘ওয়েট আনটিল ডার্ক’-এর মতো ছবিতে অভিনয় করেছেন। অভিনয় করেছেন ‘ওয়ার অ্যান্ড পিস’-এও। লন্ডনের তরুণ শিল্পপতি জেমস হ্যানসনকে প্রথম দেখাতেই প্রেমে পড়েন হেপবার্ন। বিয়ে করেন তারা। তবে সেটা বেশি দিন টেকেনি। এভাবে একে একে প্রযোজক মাইকেল বাটলার, উইলিয়াম হোলডেন, অভিনেতা মেল ফেরার, ইতালিয়ান মনোবিদ আন্দ্রে ডট্টির সঙ্গে বিয়ে হলেও কোনোটাই টেকেনি বেশিদিন। দুই ছেলে লুকা এবং সিন। সিনেমা জীবনের মাঝামাঝি সময়েই সমাজ সেবামূলক কাজে জড়িয়ে পড়েন হেপবার্ন। কাজ করতে থাকেন শিশুদের নিয়ে। শিশুদের স্কুল এবং তাদের উন্নয়নে ফান্ড গড়েন, যুক্ত হন ইউনিসেফের সঙ্গেও।
পুরস্কারের তালিকায় রয়েছে- দ্য গ্রেড মুভি রাইড, রোমান হলিডের জন্য একাডেমী অ্যাওয়ার্ড, গোল্ডেন অ্যাওয়ার্ড, টনি অ্যাওয়ার্ড, গ্রামি অ্যাওয়ার্ড এবং অ্যামি অ্যাওয়ার্ড। ইউনিসেফের প্রেসিডেন্সিয়াল অ্যাওয়ার্ডও পেয়েছেন তিনি। ২০১০ সালে প্রকাশিত হয় শতাব্দীর সবচেয়ে আবেদনময়ী সুন্দরীদের তালিকা। আর বিংশ শতাব্দীর সেরা সুন্দরী নির্বাচিত হন অড্রে হেপবার্ন। হালের হলিউড সুন্দরী অ্যাঞ্জেলিনা জোলি, হ্যালিবেরি ও স্কারলেট জোহানসনের মতো অপরূপাদের পেছনে ফেলে দিলেন তিনি। ঘন বাদামি চুল আর সুঠাম শারীরিক কাঠামোর অধিকারী ছিলেন অড্রে হেপবার্ন। উনিসেফের শুভেচ্ছা দূত হিসেবে বাংলাদেশে এসেছিলেন অড্রে হেপবার্ন। ঢাকায় তিনি আসেন ১৯৮৯ সালের ১৮ অক্টোবর। এক সপ্তাহ থেকে চলে যান ২৪ অক্টোবর। বাংলাদেশে ইউনিসেফের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড ঘুরে দেখেন তিনি।
২০ জানুয়ারি ১৯৯৩ সালে হেপবার্ন অ্যাপেন্ডিশিয়াল ক্যানসারের কারণে ঘুমের ভেতর মৃত্যুবরণ করেন।
অড্রে হেপবার্ন ১৯২৯ সালের আজকের দিনে (৪ মে) বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে জন্মগ্রহণ করেন।
Be First to Comment