Press "Enter" to skip to content

স্ট্যানলি কুবরিক মার্কিন চলচ্চিত্র পরিচালক। এই পরিচয়ই শেষ নয়, কুবরিক একাধারে চিত্রনাট্যকার, প্রযোজক, চিত্রগ্রাহক, সম্পাদক ও আলোকচিত্রী…….।

Spread the love

জন্মদিনে স্মরণঃ স্ট্যানলি কুবরিক

বাবলু ভট্টাচার্য : স্ট্যানলি কুবরিক মার্কিন চলচ্চিত্র পরিচালক। এই পরিচয়ই শেষ নয়, কুবরিক একাধারে চিত্রনাট্যকার, প্রযোজক, চিত্রগ্রাহক, সম্পাদক ও আলোকচিত্রী।

তার বাবার নাম জ্যাক লিওনার্ড কুবরিক ও মায়ের নাম জারট্রুডে।

১৯৪৫ সালে হাই স্কুল পাস করার পর উচ্চ শিক্ষা নিতে চেয়েছিলেন কুবরিক। কিন্তু একে তো তার রেজাল্ট খারাপ, তার ওপর তখন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ থেকে ফিরে আসা অসংখ্য স্কুলপাস ছাত্রের চাপ। সব মিলিয়ে তাই আর উচ্চ শিক্ষা নেওয়া সম্ভব হয়নি তখন।

ফ্রিল্যান্স আলোকচিত্রী হিসেবে কাজ শুরু করেন কুবরিক। গ্র্যাজুয়েট হওয়ার আগেই তার বেশ কিছু ছবি লুক ম্যাগাজিনে প্রকাশিত হয়।

১৯৪৬ সালেই লুক ম্যাগাজিনের নবিস আলোকচিত্রীর চাকরি পান। কিছুদিন পর তার চাকরি স্থায়ী হয়।

স্ট্যানলি কুবরিকের চলচ্চিত্র ক্যারিয়ার শুরু হয় ১৯৫০ সালে। আরকেও-র জন্য দুটি স্বল্পদৈর্ঘ্য প্রামাণ্যচিত্র বানানোর মধ্য দিয়ে তার যাত্রা। এরপর তিনি বিভিন্ন উৎস থেকে অর্থ সংগ্রহ করে দুটি লো-বাজেটের পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র বানান। প্রকৃতপক্ষে এই সিনেমাগুলো তাকে চলচ্চিত্রকার হিসেবে প্রস্তুত করতে সাহায্য করে।

১৯৫৫ সালে তিনি উঠতি প্রযোজক জেমস হ্যারিসের সঙ্গে পরিচিত হন। এ সময় দুজনে মিলে একটি পুঁচকে গুণ্ডা দলের ঘোড়দৌঁড়ের টাকা ডাকাতির কাহিনি নিয়ে ‘দ্য কিলিং’ সিনেমাটি বানান। এই সিনেমা ব্যবসায়িকভাবে বেশ সফল হয়। এই সিনেমা দিয়ে কুবরিক বেশ পরিচিতিও পান।

এরপর কুবরিক হামফ্রি কব এর উপন্যাস ‘দ্য পাথস অফ গ্লোরি’-র স্বত্ব কেনেন। আর ১৯৫৭ সালে এই উপন্যাস অবলম্বনে এমন এক সিনেমা নির্মাণ করেন, যা ইতিহাসের সবচেয়ে আপোষহীন যুদ্ধবিরোধী সিনেমাগুলোর একটিতে রূপান্তরিত হয়।

এরপর তিনি খ্রিস্টপূর্ব যুগের রোমান সাম্রাজ্যে দাস বিদ্রোহ নিয়ে ‘স্পার্টাকাস’ সিনেমাটি বানান। তবে এই সিনেমার পরিচালনায় স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারেননি তিনি। কারণ সিনেমাটিতে তার পাশাপাশি কার্ক ডগলাসও প্রযোজক ছিলেন।

তার বিখ্যাত ছবি ‘২০০১ : আ স্পেস অডিসি’। মানুষের তৈরি মারণাস্ত্র মানুষ খুনে ব্যবহার, আর যান্ত্রিক যুগে মানুষের নৈরাশ্যজনক বৈশিষ্ট্যতার পরিণতি নিয়ে এই ছবি। মানুষ, জীবন, যান্ত্রিকতা নিয়ে স্পেস অডিসি দর্শকদের এক দ্বান্দ্বিকতায় যেমন ফেললো, সেখান থেকে কুবরিকই টেনে তুললেন দর্শকদের পরবর্তী সিনেমা ‘ক্লকওয়ার্ক’ দিয়ে।

যদিও এই সিনেমায়ও নৈরাশ্যবাদী ব্যাপার ছিল। তারপরও এই সিনেমায় তিনি বলতে চেয়েছেন বিশ্বে টিকে থাকতে হলে মানুষকে তার মানবিকতা ধরে রাখতেই হবে। মানুষকে হুঁশিয়ার করে বলেছেন, নিজের বানানো যন্ত্রের ওপর কর্তৃত্ব করতে চাইলে মানুষকে আগে নিজের ওপর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

ভবিষ্যৎ নিয়ে তিনটি সিনেমা বানান তিনি। কুবরিক ‘দ্য শাইনিং’ নামে একটি হরর সিনেমাও বানিয়েছেন।

কুবরিক নির্মিত প্রামাণ্য ও স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে- ‘ডে অব দ্য ফাইট’, ‘ফ্লাইং পাদ্রে’, ‘ও দ্য সিফেয়ারার্স’।

পূ্র্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে- ‘ফিয়ার অ্যান্ড ডিজায়ার’, ‘কিলারস কিস’, ‘দ্য কিলিং’, ‘প্যাথস অব গ্লোরি’, ‘স্পার্টাকাস’, ‘লোলিটা’, ‘ড. স্ট্রেঞ্জলাভ অর : হাউ আই লার্নড টু স্টপ ওরিয়িং অ্যান্ড লাভ দ্য বম’, ‘২০০১ : আ স্পেস অডিসি, ‘আ ক্লকওয়ার্ক অরেঞ্জ’, ‘ব্যারি লিন্ডন’, ‘দ্য শাইনিং’, ‘ফুল মেটাল জ্যাকেট’ এবং ‘আইস ওয়াইড শাট’।

কাজের স্বীকৃতি হিসেবে কুবরিক অনেক সম্মানজনক পুরস্কার ও সম্মাননা লাভ করেন। মজার ব্যাপার হলো, ১৯৬৮ সালে স্পেস অডিসিতে বেস্ট ভিজুয়াল এফেক্টসের জন্য তিনি অস্কার পান। পরিচালক হিসেবে পাননি।

এ ছাড়া তিনি ১৯৯৭ সালে ‘দ্য ডিরেক্টরস গিল্ড অব আমেরিকা’র সর্বোচ্চ সম্মাননা ‘ডি ডব্লিউ গ্রিফিথ অ্যাওয়ার্ড’ পান। একই বছর অনুষ্ঠিত ৫৪তম ভেনিস আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে ‘গোল্ডেন লায়ন অ্যাওয়ার্ড’পান।

স্ট্যানলি কুবরিক ১৯৯৯ সালের ৭ মার্চ মৃত্যুবরণ করেন।

স্ট্যানলি কুবরিক ১৯২৮ সালের আজকের দিনে (২৬ জুলাই) ম্যানহাটন-এ জন্মগ্রহণ করেন।

More from EntertainmentMore posts in Entertainment »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Mission News Theme by Compete Themes.