Press "Enter" to skip to content

সৌমিত্রদার সঙ্গে প্রথম আলাপ হয় সত্যজিৎ রায়ের “প্রতিদ্বন্দ্বী” ছবির সেটে ইন্দ্রপুরী স্টুডিওতে !

Spread the love

স্মৃতিচারণায় সৌমিত্রদা ….

প্রবীর রায় : অভিনেতা, প্রযোজক ও পরিচালক। ১৫ নভেম্বর, ২০২২।  সৌমিত্রদা কে প্রথম দেখি বোধহয় ১৯৬৩/১৯৬৪ সালে ! সৌমিত্রদা থাকতেন বালিগঞ্জ পূর্ণদাস রোডে ! সৌমিত্রদা যে বাড়িতে ভাড়া থাকতেন, তার ঠিক উল্টোদিকের বাড়িতে আমি প্রাইভেট টিউটরের কাছে পড়তে যেতাম ! তখন আমি ক্লাস টেন বা ইলেভেন এ পড়তাম. অনেক সকালে পড়তে যেতাম , রোজই দেখতে পেতাম সৌমিত্রদা কে ! তখন “নষ্টনীর” (চারুলতা) ছবির শুট চলছে ! সৌমিত্রদা কে দেখতাম বড় জুলফি ছিল , পরে বুঝেছিলাম চরিত্রের
জন্য ! টান টান চেহারা ! খুব ফর্সা !
এর পর সৌমিত্রদার সঙ্গে প্রথম আলাপ হয় সত্যজিৎ রায়ের “প্রতিদ্বন্দ্বী” ছবির সেটে ইন্দ্রপুরী স্টুডিওতে ! ওই ছবিতে সৌমিত্রদা ছিলেন না ! কিন্তু ওনার নিজের কোনো শুট না থাকলেই চলে আসতেন ! শুধু সৌমিত্রদা
না ! রবিদা (রবি ঘোষ), সুবুদা (শুভেন্দু চ্যাটার্জী) সবাই আসতেন ! ওখানেই আলাপ প্রথম !


তারপর বিভিন্ন জায়গায় দেখা হয়েছে কথা হয়েছে ! সৌমিত্রদার নিজের ভগ্নিপতী ছিলেন রঞ্জিত সিনহা ! রঞ্জিতদা আবার উত্তম কুমার এর ভীষণ বন্ধু ছিলেন! উত্তমদার বাড়িতে যাতায়াতের সূত্রে রঞ্জিতদার সঙ্গে ভালো আলাপ ছিল আমার ! রঞ্জিতদার জন্যও সৌমিত্রদার সঙ্গে দেখা হতো !
একটা মজার ঘটনা মনে পড়ছে ! দীনেন গুপ্তর পরিচালনায় “বসন্ত বিলাপ” ছবির শুট চলছে ইন্দ্রপুরী স্টুডিওতে ! দীনেন গুপ্তর অফিস ছিল ইন্দ্রপুরী স্টুডিওতে ঢুকেই ডান দিকে সিঁড়ি দিয়ে উঠে
দোতলায় ! নিচে সিঁড়ির পাশে একটা সাইকেল নিয়ে শট টা টেক take হচ্ছে ! শিল্পী ছিলেন সৌমিত্রদা, তরুণ কুমার, অনুপকুমার ! হটাৎ তরুণকুমার বললেন দেখ “পুলু , যত ভালো শিল্পী সবাই কিন্তু চ্যাটার্জী ! তুই, দাদা, সবাই চ্যাটার্জী ! ” সঙ্গে সঙ্গে সৌমিত্রদা বললেন ” কেন, অনুপ কি খারাপ শিল্পী ? “তরুণ কুমার সঙ্গে সঙ্গে বললেন “সে তো আমাদের সঙ্গে অভিনয় করতে করতে ভালো শিল্পী হয় গেছে ! “খুব হাসাহাসি হলো এই নিয়ে !
সৌমিত্রদা “Calcutta rowing club “এর মেম্বার ছিলেন ! প্রায়ই যেতেন ! ওখানেও আড্ডা হতো ! সৌমিত্রদার সঙ্গে আড্ডা মারার একটা মজা
ছিল ! সিনেমা ছাড়াও আরো অনেক কিছু জানা যেত ! যেটা উত্তমদার মধ্যেও ছিল ! সৌমিত্রদা ব্র্যান্ডি খেতেন, তারপর কিছু খাবার প্যাক করে চলে যেতেন ….কোনদিন খুব রাত করতে দেখিনি !
সৌমিত্রদার সঙ্গে শেষ দেখা ওনার গল্ফগ্রীনের বাংলোতে ! বছর খানেক, বা বছর দেড়েক আগে ! আমি তখন “অগ্নিমন্থন” ছবি করার প্ল্যান করেছি ! দাদু, নাতনির গল্প ! সৌমিত্রদা কে ভেবেছি দাদুর চরিত্রে ! আমি আর অশোক রায় (স্ক্রিপ্ট রাইটার ) গেলাম সৌমিত্রদার কাছে , ফোন করে !

প্রেস ক্লাব কলকাতা র সামনে গাড়ির জন্য অপেক্ষা।

সৌমিত্রদার বাংলোর কমপ্লেক্সের মধ্যে একটা সুন্দর outhouse আছে ! ওখানে বসে আলোচনা করলাম, সৌমিত্রদা রাজি হয় গেলেন ! স্ক্রিপ্টও দিয়ে দিলাম ! টাকা পয়সার কথাও ফাইনাল হয় গেলো , রোজ চার ঘন্টার বেশি শুট করতে পারবেন না বললেন ! আবার বললেন আমাকে বেশি হাঁটিও না ! তারপর অনেক আড্ডা হলো ! সেই শেষ দেখা !

সেদিনের কোনো ফটো নেই কারণ সৌমিত্রদা সেদিন শর্টস পরে খালি গায়ে বসে স্ক্রিপ্ট শুনেছিলেন , তাই ফটো তুলতে দেননি ! মনে আছে অশোক রায় ?

তখন ছবিটা করতে পারিনি ! এখন ছবি শেষ , সামনের মাসে রিলিজ !
সৌমিত্রদা , তুমি যেখানে থাকো, ভালো থাকো !

More from CinemaMore posts in Cinema »
More from EntertainmentMore posts in Entertainment »
More from InternationalMore posts in International »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Mission News Theme by Compete Themes.