বাবলু ভট্টাচার্য : ঢাকাই চলচ্চিত্রের বহু হৃদয়কাড়া গানের গীতিকার, সুরকার, সঙ্গীত পরিচালক আলাউদ্দিন আলী চলে গেলেন সুরের ভুবন ছেড়ে। মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ সন্ধ্যায় তার মৃত্যু হয়েছে। তিনি ক্যান্সারের পাশাপাশি নিউমোনিয়া ও রক্তের ইনফেকশনে ভুগছিলেন। ‘একবার যদি কেউ ভালোবাসতো’, ‘যে ছিল দৃষ্টির সীমানায়’, ‘প্রথম বাংলাদেশ- আমার শেষ বাংলাদেশ’, ‘ভালোবাসা যতো বড় জীবন তত বড় নয়’, ‘দুঃখ ভালোবেসে প্রেমের খেলা খেলতে হয়’, ‘হয় যদি বদনাম হোক আরো’, ‘আছেন আমার মোক্তার আছেন আমার ব্যারিস্টার’, ‘সুখে থাকো ও আমার নন্দিনী’-সহ কালজয়ী অসংখ্য গানের সুরকার আলাউদ্দিন আলী। ১৯৫২ সালের ২৪ ডিসেম্বর মুন্সিগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলার বাঁশবাড়ি গ্রামে আলাউদ্দিন আলীর জন্ম। তার বাবা ওস্তাদ যাদব আলী ও মা জোহরা খাতুন।
দেড় বছর বয়সে পরিবারের সঙ্গে ঢাকায় চলে আসেন তারা। সংগীতে প্রথম হাতেখড়ি হয় চাচা সাদেক আলীর কাছে। ১৯৬৮ সালে বাদ্যযন্ত্রশিল্পী হিসেবে চলচ্চিত্রজগতে পা রাখেন। আলতাফ মাহমুদের সঙ্গে বেহালাবাদক হিসেবে যাত্রা শুরু হয় তার। সেসব দিনে আনোয়ার পারভেজসহ প্রখ্যাত অনেক সুরকারের সঙ্গে সহযোগী হিসেবে কাজ করেন আলাউদ্দিন আলী। চলচ্চিত্রের সংগীতে বেহালা বাজাতে গিয়ে তার সংগীত পরিচালনার আগ্রহ তৈরি হয়।
১৯৭২ সালে দেশাত্মবোধক গান ‘ও আমার বাংলা মা’ গানের মাধ্যমে জীবনে প্রথম সংগীত পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটে তার। পাঁচ দশকের সংগীত ক্যারিয়ারে নিজস্ব একটি সংগীতের ধারা প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছিলেন আলাউদ্দিন আলী। ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’ চলচ্চিত্রের জন্য ১৯৭৯ সালে, ‘সুন্দরী’ সিনেমার জন্য ১৯৮০ সালে এবং ‘কসাই’ ও ‘যোগাযোগ’ চলচ্চিত্রের জন্য ১৯৮৮ সালে শ্রেষ্ঠ সংগীত পরিচালকের জাতীয় পুরস্কার পান তিনি।
এছাড়া ১৯৮৫ সালে শ্রেষ্ঠ গীতিকার হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান আলাউদ্দিন আলী। খ্যাতিমান পরিচালক গৌতম ঘোষ পরিচালিত ‘পদ্মা নদীর মাঝি’ চলচ্চিত্রেও তিনি সংগীত পরিচালনা করেছেন।
Be First to Comment