Press "Enter" to skip to content

সুচিত্রা সেন উত্তমের শেষ শয্যার পাশ থেকে উঠে ফিরে গেলেন কলকাতার বালিগঞ্জ সার্কুলার রোডের বাড়িতে। সেই যে আড়ালে গেলেন, তারপর ফিরলেন মাত্র একবারই…..।

Spread the love

স্মরণঃ সু চি ত্রা সে ন

বাবলু ভট্টাচার্য : ৬ এপ্রিল, ১৯৩১ সাল। পাবনার এক সম্ভ্রান্ত পরিবারের অন্দরমহল থেকে ছড়িয়ে পড়ে এক নবজাতকের চিৎকার। বাড়ির কর্তা করুণাময় দাশগুপ্ত মেয়ের মুখ দেখে খুশি। এলাকায় মিষ্টি বিলিয়ে জানিয়ে দেন, তিনি কন্যা-সন্তানের পিতা হয়েছেন। তিনি নিজের স্ত্রী ইন্দিরা দাশগুপ্তের সঙ্গে আলাপ করে মেয়ের নাম রাখেন রমা দাশগুপ্ত। এ রমাই পরে সুচিত্রা।

রমা ছিলেন সংসারের পঞ্চম সন্তান এবং তৃতীয় কন্যা। রমার শৈশব-কৈশোর কেটেছে পাবনা শহরের গোপালপুর মহল্লার হেমসাগর লেনের বাড়িতে। রমার বাবা ছিলেন এলাকার প্রাইমারী স্কুলের প্রধান শিক্ষক। তাই পড়াশোনায় ছিল বেশ কড়াকড়ি। পাবনার মহাখালী পাঠশালায় পড়াশোনা শুরু করেন রমা। প্রাইমারী পাঠ চুকিয়ে তিনি ভর্তি হন পাবনা গার্লস স্কুলে। এখানে ক্লাস টেন পর্যন্ত পড়াশোনা করেন রমা।

১৯৮০ সালের ২৪ জুলাই পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছিলেন মহানায়ক উত্তম কুমার। রাতভর তার মরদেহ’র পাশে আত্মীয়-পরিজনদের সঙ্গে ছিলেন দুই দশকের চলচ্চিত্র জীবনের সঙ্গী সুচিত্রা সেনও। সেদিন উত্তমকে শেষবারের মতো বিদায় জানিয়েছিল এই পৃথিবী। অনেকটা সেই দিনটিতেই যেন বিদায় নিয়েছিলেন সুচিত্রা সেনও।

উত্তমের শেষ শয্যার পাশ থেকে উঠে ফিরে গেলেন কলকাতার বালিগঞ্জ সার্কুলার রোডের ২৪/৪/৪ ঠিকানার বাড়িতে। সেই যে আড়ালে গেলেন, তারপর ফিরলেন মাত্র একবারই। ১৯৮২ রবীন্দ্রসদন প্রেক্ষাগৃহে সীমিত পরিসরে আয়োজিত স্বল্পসংখ্যক মানুষের সামনে কলকাতা ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে। শেষবার তাকে ক্যামেরার সামনে দেখা গিয়েছিল ১৯৭৮ সালে।

‘প্রণয় পাশা’ চলচ্চিত্রে তিনি শেষ অভিনয় করেছিলেন। শেষ জীবনে তিনি দেখতে কেমন হয়েছেন এই কৌতূহল ছিল সবার কাছে। আড়ালের মানুষ থেকে গেলেন আড়ালেই। অন্তরালে থাকার জন্য সুচিত্রার তীব্র চেষ্টা দেখা যায় ২০০৫ সালের এক ঘটনায়। সে বছর আজীবন সম্মাননায় ‘দাদাসাহেব ফালকে’ পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছিলেন সুচিত্রা। কিন্তু অন্তরাল থেকে বের হয়ে মানুষের সামনে রাষ্ট্রপতির হাত থেকে পুরস্কার গ্রহণে তিনি অস্বীকৃতি জানান।

বালিগঞ্জের বাড়িটিতে একা থাকতেন সুচিত্রা। মেয়ে নাতনীরা নিজেদের মতো করে আলাদা। বিভিন্ন সময় পত্রিকান্তরে জানা যায় ঘরে বসে টিভিতে নিজের ছবিগুলো আগ্রহ নিয়ে দেখতেন। রামকৃষ্ণ মিশনের হেডকোয়ার্টার বেলুর মঠে গিয়ে অনেক সময় পুজো-অর্চনা করে সময় কাটাতেন।

সুচিত্রা সেন ২০১৪ সালের আজকের দিনে (১৭ জানুয়ারি) কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন।

More from CinemaMore posts in Cinema »
More from EntertainmentMore posts in Entertainment »
More from LifestyleMore posts in Lifestyle »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Mission News Theme by Compete Themes.