নিজস্ব প্রতিনিধি : কলকাতা, ৯ নভেম্বর ২০২২। ভারতীয় খেলাধুলার জগতে অলিম্পিক সোনাজয়ী নীরজ চোপড়াকে ‘ফ্রেন্ডশিপ অ্যাম্বাসাডর’ হিসেবে নিযুক্ত করল সুইজারল্যান্ড ট্যুরিজম। তাঁর এই নতুন ভূমিকায় প্রতিভাবান ভারতীয় সুপারস্টার নীরজ ভারতীয় পর্যটকদের কাছে প্রদর্শন ও প্রচার করবেন সুইজারল্যান্ডের রোমাঞ্চকর, ফুর্তি ও বিস্ময়কর উপকরণ ও পর্যটনস্থান।
নীরজ চোপড়া টুর্নামেন্ট ও প্রশিক্ষণের জন্য প্রায়শই সুইজারল্যান্ড ভ্রমণ করতেন, কিন্তু এবার, তাঁর মরশুম শেষ হওয়ার পর, ভারতের এই নতুনতম স্পোর্টস আইকন এই দেশে তাঁর দিনগুলি কাটিয়েছিলেন সেটাই করে যা তিনি সবচেয়ে ভালোবাসেন – অ্যাড্রিনালিন পাম্প হয় যেভাবে! সুইজারল্যান্ডের যেসব দ্রষ্টব্য স্থান চোপড়া ঘুরেছেন তার মধ্যে রয়েছে ইন্টারলাকেন, জেরমাট ও জেনেভা।
এবছরের সেপ্টেম্বরে জুরিখে ডায়মন্ড লিগ চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ের পর, নীরজ ও তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধুরা, যাঁরা তাঁর সঙ্গে সুইজারল্যান্ডের যোগ দিয়েছিলেন, ছুটি কাটিয়েছেন সেখানে যা রোমাঞ্চের জন্য একেবারে ঠিকঠাক স্থান। তাঁর কর্মসূচি পরিপূর্ণ ছিল ক্যানিয়ন জাম্পিং থেকে স্কাই ডাইভিং, ইন্টারলাকেনে জেটবোটের পাশাপাশি জাংফ্রাওজোচ থেকে মনস্টার বাইকিঙে স্নো স্কুটারস ও স্লেড, হাইকিং, প্যারাগ্লাইডিং এবং জেরমাটে একটি হেলিকপ্টার ট্যুর। কিন্তু অ্যাডভেঞ্চার হল তাঁর ছুটির রোমাঞ্চের মধ্যে প্রধান বিষয়, তিনি এইসঙ্গে ঘুরেছেন জেনেভা শহর, যা তিনি উপভোগ করেছেন একটি অনন্য রানিং ট্যুরের মধ্য দিয়ে, এর পাশাপাশি একটি ই-টুকটুক ট্যুর যা তাঁকে নিয়ে গিয়েছিল রাষ্ট্রসংঘের পাশাপাশি গান্ধী স্ট্যাচুতে, যেখানে তিনি শ্রদ্ধাঞ্জলি দিয়েছেন জাতির জনকের প্রতি। কিন্তু নীরজ চোপড়া হওয়ার সুবাদে, তিনি আইকনিক লেক জেনেভায় একটি রিভার র্যাফটিং ট্যুরে অংশ নিয়েছিলেন জেনেভার বিখ্যাত মাইলফলক দেখতে – জেট ডি’অউ।
সুইজারল্যান্ড ট্যুরিজমের ‘ফ্রেন্ডশিপ অ্যাম্বাসাডর’ রূপে চোপড়া তাঁর অভিজ্ঞতা ভাগ করবেন এদেশে আউটডোরের জন্য এর আদর্শ গন্তব্য প্রদর্শনে এবং হাইকিং, বাইকিং, নরম ও চরম অ্যাডভেঞ্চার এবং অবশ্যই স্নো স্পোর্টসের জন্য শ্রেষ্ঠ স্থান দেখাতে নবাগত বা অভিজ্ঞদের কাছে।
নীরজ চোপড়া বলেছেন, “সুইজারল্যান্ড হল আমার সবচেয়ে প্রিয় ছুটির গন্তব্য! আপনি যেদিকেই তাকান এটা সুন্দর যে ভাষায় প্রকাশ করা যায় না! মরশুমের পর এই দেশ আবিষ্কারে সময় কাটানো দুর্দান্ত ব্যাপার। এইসঙ্গে আমার বন্ধু ও পরিবারকে আমি এই দেশ দেখাতে চাই। অত্যন্ত ব্যস্ত মরশুমের পর আরাম করার জন্য আমার কাছে এটাই ছিল শ্রেষ্ঠ জায়গা। এদেশে যে কোনো জায়গায় আপনি নিজেকে তাজা অনুভব করবেন সেটা পাহাড়ে চড়া বা শহরে ঘোরাফেরা যাই হোক না কেন। কিন্তু যা আমাকে রোমাঞ্চিত করেছিল সেটা হল আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের সঙ্গে এই দেশের রোমাঞ্চকর স্থানগুলি পরিভ্রমণের অভিজ্ঞতা। বন্ধুদের ইন্টারলাকেন ও জেরমাট দেখানোর সময় আমি শিহরিত হয়েছিলাম যা তাদের অ্যাডভেডার ক্রিয়াকলাপের জন্য সুপরিচিত, কিন্তু জেনেভার আউটডোরেও এটা উপভোগ করা সম্ভব যা সুইজারল্যান্ডের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর। আমরা অন্যান্য ক্রিয়াকলাপের সঙ্গে ক্যানিয়ন সুইং থেকে রিভার র্যাফটিং থেকে প্যারাগ্লাইডিং ও স্কাইডিং করেছিলাম। এবং অবশ্যই এটা আমাদের সাহায্য করেছে এই বিষয়টা জানতে যে সব ধরনের অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসের জন্য সুইজারল্যান্ড হল নিরাপদতম জায়গা!”
সুইজারল্যান্ড ট্যুরিজমের ডিরেক্টর-ইন্ডিয়া মিশা গাম্বেটা বলেছেন, “আমাদের জন্য ভারত হল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দূরতম বাজার! এবং সুইজারল্যান্ডকে প্রতিনিধিত্বকারী হিসেবে ভারত থেকে একজন বন্ধুত্ব দূত পাওয়া দারুণ ব্যাপার। নীরজ হলেন একজন আইকন এবং খুবই খোলামেলা মানুষ, এবং সুইজারল্যান্ডের স্পোর্টি দিকটা তুলে ধরার জন্য তিনিই আদর্শ ব্যক্তি। আমার তাঁর সঙ্গে সফলভাবে কাজ করার দিকে তাকিয়ে রয়েছি।“
“সুইজারল্যান্ড ট্যুরিজমের বিভিন্ন ধরনের পর্যটকদের আকর্ষণ করার অনেক সম্ভাবনা রয়েছে এবং কোভিড-উত্তর কালে বিশেষ করে ভারতীয়দের কাছে বিশেষ করে এর আউটডোর সেগমেন্ট খুবই কৌতূহলের ক্ষেত্র। সক্রিয় থাকার জন্য আউটডোর উপভোগের গুরুত্ব বুঝতে পারছে অনেক বেশি ভারতীয়। নীরজ চোপড়ার সঙ্গে আমাদের সংশ্লিষ্টতার মাধ্যমে আমরা এই সুযোগ কাজে লাগাতে পারব আশা করি। আমরা নীরজের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করব সুইজারল্যান্ডকে প্রসার করার উদ্দেশে ক্রীড়াবিদ হিসেবে তাঁর চোখ দিয়ে, যিনি আউটডোর ভালোবাসেন। ছুটি চলাকালীন একজন পর্যটক যা চায় তার সবই সুইজারল্যান্ডে আছে – তাজা বাতাস, সুন্দর পাহাড়, পবিত্র প্রকৃতি, অনন্য শহর ও স্থাপত্য এবং বিস্ময়কর কার্যকরী গণপরিবহণ ব্যবস্থা, পাশাপাশি প্রকৃতিতে কিছু ক্রিয়াকলাপ উপভোগ করারও এটা একেবারে নিখুঁত গন্তব্য। এখানে আছে বিভিন্ন স্তরের হাইকিং ও বাইকিং, ওয়াটার স্পোর্টস ও এমনকি অ্যাকশনে ভরপুর ক্রিয়াকলাপ যেমন রিভার র্যাফটিং ও স্কাইডিং এবং শীতকালে স্নো স্পোর্টস, তাই আমাদের ফ্রেন্ডশিপ অ্যাম্বাসাডর হিসেবে নীরজের কাছে বাছাই করার জন্য অনেককিছু আছে,” বলেছেন সুইজারল্যান্ড ট্যুরিজমের ডেপুটি ডিরেক্টর রীতু শর্মা।
এই অ্যাথলিট এবছরের সেপ্টেম্বরে তাঁর সোনাজয়ী জ্যাভেলিন দান করেছে সুইজারল্যান্ডের লুসানে অলিম্পিক মিউজিয়ামে। ১৯৯৩ সালে এই সংগ্রহশালা প্রতিষ্ঠা করেছিল ইন্টারন্যাশনাল অলিম্পিক কমিটি, উদ্দেশ্য ছিল ইতিহাস, সংস্কৃতি, ডিজাইন, প্রযুক্তি ও সমাজবিদ্যার মধ্য দিয়ে অলিম্পিজমের বৈচিত্র্য উপস্থান করা যার মূল উপকরণ হল খেলাধুলা। মেরিকমের গ্লাভসের পাশাপাশি ধ্যানচান্দের হকিস্টিক ইতিমধ্যেই এই সংগ্রহশালা উল্লেখযোগ্য প্রদর্শনের অঙ্গ।
Be First to Comment