সুজিৎচট্টোপাধ্যায়- কলকাতা ৩১শে ডিসেম্বর২০১৯ – পুরানো বছরের বিদায়। নতুন বছরের আবাহন। বয়স বেড়েছে বয়সের। বয়স বাড়ছে তাবৎ জীবকুলের। দেওয়ালে ক্যালেন্ডারের ব্যবহার কমে গেলেও ক্যালেন্ডারের প্রয়োজনীয়তা কিছু কমেনি।
কিন্তু বছরের হিসেবটা ঠিক আছে তো? নতুন বছরটা কি সত্যিই ২০২০?তথ্য বলছে ,হিসেবে ভুল আছে।সেই প্রসঙ্গে বলার আগে দেখা যাক ক্যালেন্ডার কাহারে কয়? ইংরেজি ক্যালেন্ডার শব্দটি এসেছে ল্যাটিন শব্দ ক্যালেন্ডি থেকে। অর্থ মাসের প্রথম দিন। সভ্যতার সকালে মানুষ সূর্যের অবস্থান দেখে সময়ের পরিমাপ করতে শুরু করে। যা সোলার ক্যালেন্ডার হয়ে ওঠে। কেউ কেউ চাঁদের অবস্থানকে কেন্দ্র করে লুনার ক্যালেন্ডার চালু করে। সম্ভবত লুনার ক্যালেণ্ডারই সর্বপ্রাচীন। খ্রিস্টপূর্ব তিন হাজার দুশো বছর আগে ক্রোম্যাগনান গোষ্ঠী লুনার ক্যালেন্ডারের আবিস্কারক। ক্যালেন্ডার মূলত অ্যাস্ট্রোনমি নির্ভর।
ইউরোপে শীতের শেষে বসন্তকালকে ধরে একটি ট্রপিকাল ইয়ার lorthat অর্থাৎ365.2421896698 দিন। প্রতি একশো বছরে যা আধ সেকেন্ড করে কমতে থাকে। চন্দ্রমাস কিন্তু চাঁদের পূর্ণচন্দ্র ও অর্ধচন্দ্রের অবস্থানকে নিয়ে তৈরি। একটি চন্দ্রমাস 29.530588531দিনের যা ট্রপিকাল ইয়ারে গিয়ে 12.36826639275 টি চান্দ্রমাসের সৃষ্টি করে। এ এক জটিল অঙ্ক। শুরুতে সপ্তাহটা ছিল ১০দিনের ১ বছরের শেষ পাঁচদিন ধরা হতো ঈশ্বরের আবির্ভাব দিবস হিসেবে, জ্যোতিবিজ্ঞানীদের বা ধর্মগুরুদের লিপ ইয়ার সম্পর্কে কোনো ধারণা ছিল না। ছ হাজার বছর আগে জুলিয়াস সিজার, রাশিয়ান ধর্মযাজক ডেনিস এবং ত্রয়োদশ পোপ এই গেগ্রিয়ান ক্যালেন্ডারকে আধুনিক করেন। প্রাচীন রোমে গ্রিক ক্যালেন্ডার আড়াই হাজার বছর চলে। সময়ের বিবর্তনে গ্রিক ক্যালেন্ডার পাল্টেছে প্রিজুলিয়ান ক্যালেন্ডার শেষ হয় রোমান সাম্রাজ্যের পর।
জুলিয়ান ক্যালেন্ডারের লক্ষ্য ছিল ট্রপিকাল ইয়ারের সঙ্গে সমন্বয় সূচিত করার। প্রতি চার বছরে ফেব্রুয়ারিতে একদিন বাড়িয়ে সমস্যা মেটানো হতো।
কিন্তু সমস্যা আরও একটা ছিল। জুলিয়ান ক্যালেন্ডারে চার বছরে হচ্ছে ১৪৬১দিন। কিন্তু গড় তো ৩৬৫.২৫ দিন।
অর্থাৎ ট্রপিকাল ক্যালেন্ডার থেকে ১১ মিনিট১৫ সেকেন্ড বেশি।
ফলে ১২৮দিনেএকটি দিন বাড়লো। ১২৮বছরে একদিন আগে বছর শুরু হলো। হিসেবের গন্ডগোলে মুশকিল দেখা দিলো চার্চগুলিতে ইস্টারের দিন ঘোষণা নিয়ে। শুরু তর্কবিতর্ক পেশায় আইনজ্ঞ ত্রয়োদশ পোপ গ্রেগরি আত্মপ্রকাশ করেন১৫৭২ সালে।১৫৭৫,সালে তিনি ক্যালেন্ডার সংশোধনের কথা ঘোষণা করেন। ঠিক হলো১৫৮২সালে ৪ অক্টোবর বৃহস্পতিবারের পর শুক্রবার হবে১৫,অক্টোবর অঙ্ক কষে৩৬৫.২৪২৫ দিনের হিসেবে তৈরি হলো।
সবচেয়ে মজার কথা, পরবর্তীকালে পন্ডিতেরা গণনা করে দেখলেন যীশুর জন্ম বছর ধরে জুলিয়াস সিজার যে বছরের হিসেব করেন সে হিসেবে ভুল আছে।
যিশু নাকি জন্মেছেন কয়েক বছর আগে। কিন্তু জুলিয়াস সিজার নিজের ভুল স্বীকার করলেন না। রাজা বলে কথা।
সবচেয়ে বড় বিতর্ক সৃষ্টি করেছেন স্বয়ং পোপ ষোড়শ বেনেডিক্ট। তিনি তাঁর
লিখিত’ ‘জেসাস অফ নাজারেথ ‘বইতে লিখেছেন, যিশুর জন্মদিন ও সালের হিসেবে ভুল গণনা করা হয়েছিল তাই খ্রিস্টের সঠিক জন্ম বছর আবিষ্কার এখনও করা সম্ভব হয়নি ফলে নতুন বছর যে ২০২০ তাঁর কোনো প্রমাণ নেই অর্থাৎ নতুন বছর ২০২১,২০২২,বা ২০২৩ ও হতে পারে।
সত্যি কি নতুন বছর -২০২০?
More from GeneralMore posts in General »
- জয় দিয়ে নতুন বছর শুরু, আইএসএল-এ পয়েন্ট তালিকার শীর্ষেই মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট….।
- হিন্দুমহাসভা ও বিজেপি বাঁচাও মঞ্চের সংযুক্তিতে সংকল্প দিবস পালন, বঙ্গ রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ….।
- বিধাননগরের বুকে এক অভিনব কর্মসূচি শুরু করলো স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ইস্পাত….।
- ষষ্ঠবর্ষের শিবপুর কৃষ্ণা ডান্স একাডেমির অসাধারণ নৃত্যানুষ্ঠান….।
- Dr. Suresh Kumar Agarwal honoured with ‘International Meditation Teacher Award’ by LIONS MAGNATES….
- অ্যাডভোকেট মিতা ব্যানার্জির অসাধারণ সামাজিক কাজ…।
Be First to Comment