জন্মদিনে স্মরণঃ অমর পাল
বাবলু ভট্টাচার্য : সত্যজিৎ রায়ের ‘হীরক রাজার দেশে’ ছবির ‘কতই রঙ্গ দেখি দুনিয়ায়’ গানের দৌলতে অমর পালের কণ্ঠ এ দেশের অনেককেই আপ্লুত করেছিল।
কণ্ঠের যাদুতে বাংলার লোকজীবন সমাজ, প্রকৃতি ও মানব সম্মিলন, সংস্কৃতির সমন্বয় সুরবদ্ধ করে রেখেছেন গায়ক অমর পাল। তিনি চর্চা শুরু করেছিলেন ভাটিয়ালী গানের ধারা নিয়ে, পরে এলো প্রভাতী, তারপর তো লোক গানের সকল ধারাতেই পরিব্রাজকের মতো ভ্রমণ করেছেন তিনি।
অমর পালের পিতার নাম মহেশচন্দ্র পাল এবং মা হলেন দুর্গাসুন্দরী পাল। ১০ বছর বয়েসে পিতাকে হারিয়ে সংসারের দায়ভার কাঁধে তুলে নেন। পাশাপাশি উচ্চাঙ্গ সংগীতের তালিম নেন শ্রদ্ধেয় ওস্তাদ আলাউদ্দীন খাঁ সাহেবের ছোট ভাই জনাব আয়েৎ আলী খাঁ সাহেবের কাছে।
কুমিল্লার ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ১৯৪৮ সালে আকাশবাণীর গীতিকার শচীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের সাথে কলকাতায় আসেন। কলকাতায় আসার পর বেঙ্গল মিউজিক কলেজের অধ্যাপক মণি চক্রবর্তী, সুরেন চক্রবর্তী, ননীগোপাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিকট লোকসংগীতের শিক্ষা পুনরায় শুরু করেন তিনি।
১৯৫১ সালে আকশবাণী কলকাতা কেন্দ্রের লোকসংগীত শিল্পী হিসেবে প্রথম লোকসংগীত পরিবেশন করেন। ধীরে ধীরে তিনি আকাশবাণীর গ্রেডের শিল্পীর সন্মান লাভ করেন। তাঁর কণ্ঠে অনেক গানের রেকর্ড প্রকাশিত হওয়ার পাশাপাশি তিনি বহু চলচ্চিত্রে কণ্ঠ দান করেছেন। এরমধ্যে কয়েকজন বিশিষ্ট চলচ্চিত্রকার হলেন- দেবকীকুমার বসু, সত্যজিৎ রায়, ঋতুপর্ণ ঘোষ প্রমুখ।
ভারত সরকারের সংগীত-নাটক আকাদেমি পুরস্কারসহ পশ্চিমবঙ্গ সরকারের লালন পুরস্কার ও সংগীত মহাসন্মান অর্জন করেছেন তিনি। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের সান্মানিক ডি লিট উপাধিও পেয়েছেন এই গুণী শিল্পী। এছাড়াও দেশ- বিদেশের বহু সম্মানে ভূষিত হয়েছেন তিনি।
প্রভাতী ও ভাটিয়ালী গানের শিল্পী অমর পাল ২০ এপ্রিল ২০১৯ কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন।
অমর পাল ১৯২২ সালের আজকের দিনে (১৯ মে) বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে জন্মগ্রহণ করেন।
Be First to Comment