—-রবিশঙ্করকে নিয়ে সত্যজিৎ রায়ের স্বপ্ন পূরণ হয়নি—
বাবলু ভট্টাচার্য: ঢাকা, উপমহাদেশের প্রখ্যাত সেতারবাদক ও কণ্ঠশিল্পী পণ্ডিত রবিশঙ্করকে নিয়ে একটি তথ্যচিত্র নির্মাণের পরিকল্পনা করেছিলেন কিংবদন্তি চলচ্চিত্র নির্মাতা সত্যজিৎ রায়। এজন্য ৩২ পাতার একটি চিত্রনাট্যও লিখেছিলেন তিনি। এতে ১০০টিরও বেশি স্কেচ এঁকে ক্যামেরা পজিশন ও অন্যান্য কারিগরি নির্দেশনার খুঁটিনাটিও লিখে রাখেন তিনি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তথ্যচিত্রটি তৈরি করা হয়নি তার। সত্যজিতের সেই চিত্রনাট্য বই আকারে প্রকাশ করেন হারপার কলিন্স। এর নাম রাখা হয়েছে ‘রবিশঙ্কর : অ্যান আনফিল্মড ভিজ্যুয়াল স্ক্রিপ্ট’।
সন্দীপ রায়ের ধারণা, ‘অপরাজিত’ ছবিটি পরিচালনার আগেই এ চিত্রনাট্যটি তৈরি করেছিলেন তার বাবা। সত্যজিৎ রায় পরিচালিত ‘পথের পাঁচালী’, ‘অপরাজিত’, ‘অপুর সংসার’ এবং ‘পরশপাথর’ ছবির আবহসঙ্গীত পরিচালনা করেন রবিশঙ্কর। তাদের ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্বের কথা সবারই জানা ছিল। পাণ্ডুলিপিটি অত্যন্ত যত্নসহকারে ‘সোসাইটি ফর প্রিজার্ভেশন অব সত্যজিৎ রায় আর্কাইভ’-এ সংরক্ষিত রয়েছে।বইটিতে নানা চমকপ্রদ তথ্যও রয়েছে। যেমন রবিশঙ্কর বিদেশে পাড়ি দেয়ার ঠিক একদিন আগে ‘পথের পাঁচালী’ ছবির সঙ্গীত পরিচালনার কাজ শেষ করেছিলেন। ভবানী সিনেমা হলে ছবির রাশ প্রিন্ট দেখে দারুণ প্রশংসা করেছিলেন রবিশঙ্কর। বইটি থেকে আরো জানা যায়, ‘পথের পাঁচালী’তে সত্যজিৎ শোকের যথাযথ অভিঘাত তৈরি করতে ‘তার সানাই’ যন্ত্র ব্যবহার করেছিলেন।
উল্লেখ্য, রবিশঙ্কর, সত্যজিৎ রায়ের চেয়ে এক বছরের বড়। রবিশঙ্কর ১৯২০ সালে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। আর সত্যজিৎ রায় ১৯২১ সালে। কিন্তু প্রকৃতির অমোঘ নিয়মে রবিশঙ্করের অনেক আগেই চলে যেতে হয় সত্যজিৎ রায়কে। ১৯৯২ সালের ২৩ এপ্রিল ৭০ বছর বয়সে মারা যান সত্যজিৎ। অন্যদিকে ২০১২ সালের ১১ ডিসেম্বর ৯২ বছর বয়সে চিরনিদ্রায় শায়িত হন রবিশঙ্কর।
Be First to Comment