Press "Enter" to skip to content

শরৎচন্দ্রের সাহিত্য সাধনার হাতেখড়ি হয় ভাগলপুরে। তাঁর অনেক গল্প, যা পরবর্তীকালে প্রকাশিত হয়ে তাঁর যশ বৃদ্ধি করেছে, তার খসড়া এই সময়েই লেখা। যেমন: ‘চন্দ্রনাথ’, ‘দেবদাস’….।

Spread the love

জন্মদিনে স্মরণঃ শ র ৎ চ ন্দ্র চ ট্টো পা ধ্যা য়

বাবলু ভট্টাচার্য : “যিনি বাঙালীর জীবনের আনন্দ ও বেদনাকে একান্ত সহানুভূতির দ্বারা চিত্রিত করেছেন, আধুনিক কালের সেই প্রিয়তম লেখকের মহাপ্রয়াণে দেশবাসীর সঙ্গে আমিও গভীর মর্মবেদনা অনুভব করছি।”

যাঁর মৃত্যু সংবাদ পেয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই পংক্তি লিখেছিলেন, তিনি কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়।

শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের পিতা মতিলাল চট্টোপাধ্যায় ও মা ভুবনমোহিনী দেবী। তাঁর মামা বাড়ি ছিল হালিশহরে। শরৎচন্দ্রের দাদু (মাতামহ) ভাগলপুরের কাছারিতে কেরানীর কাজ করতেন। তিনি সেখানেই জন্মগ্রহণ করেন।

মতিলাল লেখাপড়া শিখেছিলেন, চাকরিও করতেন। সংসারে বারংবার অর্থকষ্ট ঘটায় তিনি কন্যাপুত্রপত্নীকে নিয়ে ভাগলপুরে শ্বশুরগোষ্ঠীর আশ্রয়ে গেলেন। সেখানে গিয়ে শরৎচন্দ্র তেজনারায়ণ জুবিলী কলেজিয়েট স্কুল থেকে ১৮৯৪ সালে এনট্রান্স পরীক্ষা পাস করে এফ.এ. ক্লাসে ভর্তি হন। ১৮৯৬ সালে অর্থাভাবে পড়াশোনায় ইস্তফা দিতে বাধ্য হন।

শরৎচন্দ্রের সাহিত্য সাধনার হাতেখড়ি হয় ভাগলপুরে। তাঁর অনেক গল্প, যা পরবর্তীকালে প্রকাশিত হয়ে তাঁর যশ বৃদ্ধি করেছে, তার খসড়া এই সময়েই লেখা। যেমন: ‘চন্দ্রনাথ’, ‘দেবদাস’। কলকাতা থেকে বর্মা যাবার কালে তিনি তাঁর একটি গল্প ‘মন্দির’ কুন্তলীন পুরস্কারের জন্য দাখিল করে যান। গল্পটি প্রথম পুরস্কার পায় এবং কুন্তলীন পুস্তিকামালায় প্রকাশিত হয়।

বর্মাতে তিনি সাহিত্যসাধনা চালিয়ে যেতে থাকেন। সেখানে লেখা ‘বড়দিদি’ গল্পটি ‘ভারতী’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। বর্মাতে থাকতে শেষের দিকে তিনি ইংরেজি উপন্যাস থেকে কিছু সারবস্তু গ্রহণ করে নিজেই উপন্যাস রচনা করেছিলেন। সেসব উপন্যাসের মধ্যে ‘দত্তা’, ‘দেনাপাওনা’ ইত্যাদি বেশ জনপ্রিয়তা পায়। এছাড়াও আরও অনেক সমাদৃত উপন্যাস তিনি রচনা করেছেন।

 

মৃত্যুর কিছুকাল আগে তিনি কলকাতায় বালিগঞ্জ অঞ্চলে বাড়ি করেছিলেন। কলকাতাতেই তাঁর জীবনাবসান হয়।

 

তাঁর সাহিত্য-কর্মকে ঘিরে ভারতীয় উপমহাদেশে এ পর্যন্ত প্রায় পঞ্চাশটি চলচ্চিত্র বিভিন্ন ভাষায় তৈরি হয়েছে। তার মধ্যে- ‘দেবদাস’ উপন্যাসটি বাংলা, হিন্দি এবং তেলেগু ভাষায় আটবার নির্মিত হয়। ‘পরিণীতা’ দুইবার, ঋষিকেশ মুখার্জী’র ‘মাঝলি দিদি’ অন্যতম। ‘স্বামী’ (১৯৭৭) চলচ্চিত্রের জন্য ফিল্মফেয়ার সেরা লেখকের পুরস্কার পান। ‘বিন্দুর ছেলে’ অবলম্বনে ‘ছোটি বহু’ (১৯৭১) নামে খ্যাতনামা চলচ্চিত্র তৈরি হয়।

১৯৭৬ সালে ‘দত্তা’ চলচ্চিত্রে সুচিত্রা সেন এবং সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। এছাড়া তার ‘নববিধান’ উপন্যাসের ছায়া অবলম্বনে ২০১৩ সালে ‘তুমহারি পাখি’ নামক একটি ভারতীয় টিভি ধারাবাহিক নির্মিত হয়।

শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯২৩ খ্রিষ্টাব্দে জগত্তারিণী স্বর্ণপদক পান৷ এছাড়াও তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে ‘ডি লিট’ উপাধি পান ১৯৩৬ খ্রিষ্টাব্দে।

১৯৩৮ সালের ১৬ জানুয়ারি তিনি কলিকাতায় মৃত্যুবরণ করেন।

শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ১৮৭৬ সালের আজকের দিনে (১৫ সেপ্টেম্বর) হুগলি জেলার দেবানন্দপুরে জন্মগ্রহণ করেন।

More from CinemaMore posts in Cinema »
More from EntertainmentMore posts in Entertainment »
More from InternationalMore posts in International »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *