Press "Enter" to skip to content

শরদিন্দুর ব্যোমকেশ-কাহিনি ‘চিড়িয়াখানা’ নিয়ে চলচ্চিত্র তৈরি করেন প্রখ্যাত পরিচালক সত্যজিৎ রায়। নামভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন উত্তম কুমার……।

Spread the love

স্মরণঃ শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়

বাবলু ভট্টাচার্য : শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়দের আদি নিবাস ছিল কলকাতার উত্তরে বরানগরে। বাবা তারাভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় বিহারের পূর্ণিয়ায় ওকালতি করতেন। সেখান থেকে তিনি মুঙ্গেরে চলে আসেন। সেই সুবাদে শরদিন্দুর স্কুলশিক্ষা মুঙ্গেরে। ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করার পর শরদিন্দু কলকাতার বিদ্যাসাগর কলেজে ভর্তি হন।

শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় ১৮৯৯ সালের ৩০ মার্চ উত্তরপ্রদেশের জৌনপুর শহরে জন্মগ্রহণ করেন।

শরদিন্দু রচিত প্রথম সাহিত্য প্রকাশিত হয় তাঁর ২০ বছর বয়সে, যখন তিনি বিদ্যাসাগর কলেজের ছাত্র। সেটা ছিল বাইশটি কবিতার সংকলন ‘যৌবন-স্মৃতি’। পড়াশোনার সাথেই সাথেই তিনি ছোট ছোট কবিতা ও গল্প লিখতে থাকেন। ১৯২৬ সালে পটনা থেকে আইন পাশ করার পর বাবার জুনিয়র হিসাবে ওকালতি শুরু করেন। কিন্তু মন পড়ে থাকে সাহিত্যচর্চায়। শেষ পর্যন্ত ১৯২৯-এ ওকালতি ছেড়ে সাহিত্যকেই জীবিকা হিসাবে গ্রহণ করেন।

তাঁর সৃষ্টি গোয়েন্দা চরিত্র ব্যোমকেশ বক্সী আত্মপ্রকাশ করে ১৯৩২ সালে। রচনাকাল অনুসারে ব্যোমকেশ সিরিজের প্রথম গল্প ‘পথের কাঁটা’। তারপর ‘সীমান্তহীরা’।

চার বছরে ব্যোমকেশকে নিয়ে ১০টি গল্প লেখার পর শরদিন্দু আর ব্যোমকেশের কথা ভাবেননি। তার পর ১৫ বছর কেটে গেছে। দীর্ঘ বিরতির পর ‘চিত্রচোর’ (১৩৫৮ বঙ্গাব্দ) লেখেন। সেই থেকে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত ব্যোমকেশ তাঁর সঙ্গী। গল্প-উপন্যাস মিলিয়ে ব্যোমকেশ-কাহিনি মোট ৩২টি।

শরদিন্দু ১৯৩৮ সালে মুম্বইয়ের বম্বে টকিজে চিত্রনাট্যকার রূপে কাজ শুরু করেন। ১৯৫২ সালে সিনেমার কাজ ছেড়ে স্থায়ী ভাবে পুনেতে বসবাস করতে শুরু করেন। পরবর্তী ১৮ বছর তিনি সাহিত্যচর্চায় অতিবাহিত করেন।

ব্যোমকেশ ছাড়া তাঁর উল্লেখযোগ্য রচনার মধ্যে আছে বিভিন্ন ঐতিহাসিক উপন্যাস। যেমন, ‘কালের মন্দিরা’, ‘গৌড়মল্লার’, ‘তুমি সন্ধ্যার মেঘ’, ‘তুঙ্গভদ্রার তীরে’, ‘কুমারসম্ভবের কবি’। সামাজিক উপন্যাস যেমন ‘বিষের ধোঁয়া’ বা অতিপ্রাকৃত নিয়ে তাঁর ‘বরদা সিরিজ’ ও অন্যান্য গল্প এখনও বেস্টসেলার। সদাশিবের কাণ্ড-কারখানা সম্বলিত শরদিন্দুর কিশোর-কাহিনিগুলোও আজ সমান জনপ্রিয়।

শরদিন্দুর ব্যোমকেশ-কাহিনি ‘চিড়িয়াখানা’ নিয়ে চলচ্চিত্র তৈরি করেন প্রখ্যাত পরিচালক সত্যজিৎ রায়। নামভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন উত্তম কুমার। এখন আবার টলিউডে ধূম পড়েছে ব্যোমকেশ-কাহিনি নিয়ে সিনেমা তৈরি করার। শরদিন্দুর লেখা ‘ঝিন্দের বন্দি’, ‘দাদার কীর্তি’ ইত্যাদি উপন্যাস নিয়ে তৈরি সিনেমা মন জয় করেছিল বাঙালি দর্শকের।

‘তুঙ্গভদ্রার তীরে’ উপন্যাসটির জন্য শরদিন্দু পশ্চিমবঙ্গ সরকারের রবীন্দ্র পুরস্কার পান। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে শরৎ স্মৃতি পুরস্কার প্রদান করে।

শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় ১৯৭০ সালের আজকের দিনে (২২ সেপ্টেম্বর) পুনেতে মৃত্যুবরণ করেন।

More from BooksMore posts in Books »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Mission News Theme by Compete Themes.