জন্মদিনে স্মরণঃ শওকত ওসমান
‘জাতির কথাশিল্পী’ বলা হয় তাঁকে। হুমায়ুন আজাদ লিখেছিলেন ‘অগ্রবর্তী আধুনিক মানুষ’।
বাংলাদেশের কথাসাহিত্যে একপ্রকার বিপ্লব ঘটিয়েছেন তিনি। মুক্তবাক আর সমাজের চলতি ধারাকে যিনি উঠিয়ে এনেছেন সাহিত্যে, তিনি কিংবদন্তী সাহিত্যিক শওকত ওসমান।
শওকত ওসমানের বাবা শেখ মোহাম্মদ ইয়াহিয়া ছিলেন বর্গাচাষি এবং মা গুলজান বেগম গৃহিনী।
১৯৪৯ সালে শওকত ওসমান রচনা করেন তাঁর প্রথম নাটক ‘আমলার মামলা’।
তাঁর প্রথম গল্পগ্রন্থ ‘জুনু আপা ও অন্যান্য গল্প’ প্রকাশিত হয় ১৯৫২ সালে। ১৯৫৭ সালে প্রকাশিত হয় শওকত ওসমানের শিশুতোষ গ্রন্থ ‘মস্কুইটো ফোন’।
১৯৫৮ সালে প্রকাশিত হয় তাঁর বিখ্যাত উপন্যাস ‘জননী’। যেখানে দেখা যায় জননী দরিয়াবিবি যেন বাংলার সকল মায়ের মাতৃরূপে উপন্যাসে প্রতিনিধিত্ব করেছে।
অধ্যাপক হিসেবে ঢাকা কলেজে যোগ দেন শওকত ওসমান। এর পরের বছর প্রকাশিত হয় তাঁর অনুবাদ গ্রন্থ ‘টাইম মেশিন’।
১৯৬২ সালে শওকত ওসমান লিখলেন তাঁর সবচেয়ে বিখ্যাত উপন্যাস ‘ক্রীতদাসের হাসি’। যেটি ছিল মূলত আইয়ুব খানের স্বৈরাচার ও সামরিক শাসন-ব্যবস্থাকে ব্যঙ্গ করে এ উপন্যাস লেখা হয়।
শওকত ওসমানের হাত থেকে এরপর একে একে জন্ম নিয়েছে ‘রাজা উপাখ্যান’, ‘জাহান্নম হইতে বিদায়’, ‘দুই সৈনিক’, ‘আর্তনাদ’, ‘রাজপুরুষ’, ‘জলাঙ্গী’, ‘বনী আদম’, ‘রাজসাক্ষী‘র মতো উপন্যাস।
ঠিক তেমনই ‘মনিব ও তাহার কুকুর’, ‘ঈশ্বরের প্রতিদ্বন্দ্বী’, ‘প্রস্তর ফলক’, ‘সাবেক কাহিনী’, ‘জন্ম যদি তব বঙ্গে’, ‘পুরাতন খঞ্জর’, ‘বিগত কালের গল্প’, কিংবা ‘উপলক্ষ’র মতো বিখ্যাত সব গল্পগ্রন্থ।
সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে বিশেষ অবদানের জন্য তিনি ১৯৬২ সালে বাংলা একাডেমী, ১৯৬৬ সালে আদমজী সাহিত্য পুরস্কার, ১৯৮৩ সালে একুশে পদক এবং ১৯৯৭ সালে স্বাধীনতা দিবস পুরস্কারে ভূষিত হন।
১৯৯৮ সালের ১৪ মে তিনি ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।
শওকত ওসমান ১৯১৭সালের আজকের দিনে (২ জানুয়ারি) পশ্চিমবঙ্গের হুগলী জেলার সবল সিংহপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
Be First to Comment