তপারতি গঙ্গোপাধ্যায় : ৬ আগস্ট, ২০২০। বেইরুট এর বিস্ফোরণে এখনও অবধি সরকারি ভাবে ১৩৫ জন মারা গেছেন, ৫০০০ এর বেশি আহত হয়েছেন। ২৭৫০ টন অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট অরক্ষিত ভাবে একটা গুদামে জমা করা ছিল। বিস্ফোরণের কম্পন তীব্রতা ছিল রিখটার স্কেল ৩.৩ এর সমান। ১৫০ কিলোমিটার দূরে সাইপ্রাস অবধি সেটা অনুভব করা গেছে। তদন্ত চলছে, গ্রেফতার চলছে। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে পাগলের মত প্রিয়জনের খোঁজ চলছে। নববধূর আতঙ্কিত মুখ, সন্তানকে টেবিলের তলায় নিরাপদ আশ্রয়ে পাঠানো বাবার উদ্বেগ, ক্ষতবিক্ষত মুখগুলোর রাস্তাঘাটে শূন্য আসা যাওয়া, লেবানন গত তিনদিন ধরে এভাবেই যুঝে চলেছে, সাহায্য চাইছে। আতঙ্ক ধীরে ধীরে রাগে পরিণত হচ্ছে।
লেবাননে দারিদ্র্য বাড়ছে। বেইরুটের ৫ লক্ষ শিশু ক্ষুধার্ত। একটুকরো মাংস এখন তাদের কাছে স্বপ্ন। রুটির জন্য হাহাকার চলছে। দাম আকাশ ছোঁয়া। লেবাননে ৬৯ লক্ষ মানুষ। জিডিপি পার ক্যাপিটা ৮৭০০-৯৩০০ মার্কিন ডলার। দুর্নীতি এবং মেরুকরণ স্পষ্ট। মানুষ খিদের জ্বালায় আত্মহত্যা করছে। সিভিল ওয়ার এর পর থেকেই এই সমস্যা জটিল হচ্ছে। করোনাভাইরাস লেবাননের অর্থনীতির কফিনে শেষ পেরেক।
ইয়েমেন, সিরিয়া, লেবানন, একের পর এক মধ্যপ্রাচ্যের দেশ এভাবে ধ্বংস করা হচ্ছে। যুদ্ধ, বোমা, বিস্ফোরণ, অর্থনীতি, ক্ষুধা। এই প্রক্রিয়া খুব ধীরগতিতে চলছে। একটা বিশাল সভ্যতা মানুষের চোখের আড়ালে ধীরে ধীরে মুছে যাচ্ছে। সারা পৃথিবী চুপ করে বসে আছে। Surveillance Capitalism এর জমানায় এর থেকে বড়ো পারমাণবিক যুদ্ধ আর কি হতে পারে?
আজ হিরোশিমা দিবস……..।
Be First to Comment