গোপাল দেবনাথ : হাওড়া, ২১ মার্চ, ২০২৫। এই বাংলার মৃৎশিল্পীদের কদর সারা বিশ্ব জুড়ে আছে। দেব দেবীর মূর্তি থেকে যত ধরণের ভাস্কর্য আছে এই ক্ষেত্রে মৃৎশিল্পীদের অবদান অনস্বীকার্য। গত বুধবার ১৯ শে মার্চ থেকে শুক্রবার ২১ শে মার্চ পর্যন্ত বিশিষ্ট ভাস্কর্যশিল্পী শ্রী উমেশ চন্দ্র বেরা মহাশয় এবং তা়ঁর দুই সহকারী শিল্পী শ্রী বিশ্বনাথ দলুই ও শ্রী সুজয় নস্কর মহাশয়দের তত্ত্ববধানে এস .এম. এম. হোম, লিলুয়ার আবাসিকাদের জন্য তিনদিনের প্রশিক্ষনমূলক কর্মশালা সাড়ম্বরে অনুষ্ঠিত হল।
এই কর্মশালার দ্বিতীয় দিনে উপস্থিত হয়েছিলেন এই রাজ্য তথা আমাদের দেশের এক প্রখ্যাত ভাস্কর্যশিল্পী যিনি ললিতকলা একাডেমি থেকে রাষ্ট্রীয় পুরস্কার প্রাপ্ত শিল্পী শ্রী বিমল কুন্ডু এবং এই দেশের বিখ্যাত পর্বতারোহী, অর্জুন পুরস্কার প্রাপ্ত এবং আয়কর দপ্তরের উচ্চপদস্ত অধিকারিক শ্রী দেবাশীষ বিশ্বাস । তিন দিন ব্যাপী এই কর্মশালাটি পরিচালনা করেন লিলুয়া হোমের সহ অধিক্ষিকা শ্রীমতি পুতুল আচার্য ।
উক্ত কর্মশালায় আবাসিকাগণের উপস্থিতি ও তাদের শিল্পকার্য অবস্মরণীয়। এখানকার বেশিরভাগ আবাসিক জীবনে প্রথমবার মাটি হাতে তুলেছেন কিছু শিল্পকর্ম সৃষ্টি করার জন্য। কিন্তু তাঁরা, তাঁদের উৎসাহ, নিষ্ঠা ও যত্নশীলতার ছাপ রেখেছেন তাঁদের তৈরী মাটির পুতুল, ফুল , বাসনপত্র ও রকমারী গৃহস্থলির জিনিসপত্র তৈরীর মাধ্যমে। শিল্পী বিমল কুন্ডু র কথায়, “আমাকে যদি এই মাটির জিনিসগুলি থেকে সবচেয়ে ভালোটি বাছাই করতে হয়, তাহলে আমি কিন্তু প্রতিটি জিনিসকেই বেছে নেব। কেননা গুন ও মানে সকলেই সেরা। ” আবাসিকাদের হাতে তৈরী জিনিসপত্র আবার প্রমান করে, মানুষ জন্মগত ভাবে কিছু নান্দনিকতা ও সৃষ্টিশীলতার মনন নিয়ে জন্মায়।
মাটির কাজ কেবলমাত্র শিল্পকীর্তি শেখায়, তা নয়। এটি বর্তমান কালে অবসাদ মুক্তির এক বিকল্প পদ্ধতি হিসেবে স্বীকৃত । তাই এই কর্মশালায় চার বছর বয়সী শিশু থেকে পরিণত মানুষদের সমান উৎসাহ চোখে পড়ার মত। এই শিল্পকর্মের তিন দিনের প্রশিক্ষন কর্মশালা আবাসিকদের শুধু মনের গঠনমূলক দিককেই বিকশিত করেনি, বরং তারা ভবিষ্যতে চাইলে এই শিক্ষাকে আরো দূর পর্যন্ত নিয়ে গিয়ে, উপার্জনের পথ হিসেবেও ভাবতে পারবে।
Be First to Comment