Press "Enter" to skip to content

রাহুলদেব বর্মণ স্বরলিপির পঞ্চম সুরে কাঁদতেন বলেই তাকে ডাকা হতো ‘পঞ্চম’ নামে। স্কুলের পড়াশুনো ছিল তার দু চোখের বিষ……..

Spread the love

———–জন্মদিনে স্মরণঃ রাহুলদেব বর্মণ——–

বাবলু ভট্টাচার্য: ঢাকা, ছোট বেলায় তিনি যখন কাঁদতেন, তখন নাকি তার কান্নার আওয়াজ নাসিকা গোড়া থেকে অনেকটা সা রে গা মা পা-এর ‘পা’ এর মতো শোনা যেতো। স্বরলিপির পঞ্চম সুরে কাঁদতেন বলেই নাকি তাকে ডাকা হতো ‘পঞ্চম’ নামে। সেই রসিকতার সূত্র ধরেই তার নাম হয়ে যায় ‘পঞ্চম’— সবার প্রিয় পঞ্চমদা। খ্যাতিমান গায়ক ও সংগীত পরিচালক-সুরকার শচীনদেব বর্মণের পুত্র— রাহুলদেব (আর ডি) বর্মণ।

স্কুলের পড়াশুনো ছিল তার দু চোখের বিষ। নিয়মবদ্ধ পড়া নয়, তার ভালো লাগত গান, সঙ্গীত আয়োজন, সুর আরোপ। মেট্রিকে ফেল করে বাবার গানের স্টুডিওতে ঘুরঘুর করতে লাগলেন। শচীন কত্তাও ভাবলেন একে দিয়ে তো আর পড়াশুনা হবেনা, কাজেই তার কাছে থেকে বরং গানের খুঁটিনাটি শিখে নিক। তবে নিজের কাছে নেয়ার আগে তিনি সঙ্গীতের প্রাথমিক পাঠ গ্রহণের জন্য পঞ্চমকে পাঠালেন উস্তাদ আকবর আলী খাঁ সাহেবের কাছে। পাঠালেন অন্নপূর্ণার কাছে। তবলা শেখার জন্য পাঠালেন সমতা প্রসাদের কাছে। সেখান থেকে সঙ্গীতের প্রাথমিক তালিমটা সম্পূর্ণ হল।

ষাটের দশকের শেষে হিন্দি চলচ্চিত্ররে গান ও সুরে আধুনিকতা প্রবেশ করেছে রাহুলদেবের হাত ধরে। জনপ্রিয় কমেডি অভিনেতা মেহমুদ একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করবেন— ‘ভুত বাংলা’। রাহুলদেব তার বন্ধু, তবে সঙ্গীত পরিচালনার ভার দিতে চান শচীন কত্তাকে। কত্তা আবার ছোটখাটো ব্যানারে কাজ করতে চান না। সুতরাং দায়িত্ব গছিয়ে দিলেন পঞ্চমকে, মেহমুদ রাজি হয়ে গেলেন। মান্না দে গাইলেন— আও টুইস্ট কারে। সিনেমা তেমন ব্যবসা করলনা। তবে গানে এলো নতুনত্ব। শ্রোতার কাছে ঠিকই ধরা পড়ল এক উঠতি প্রতিভার উত্থান। এবার এলো ‘বাহারোঁ কে সাপ্নে।’ সেখানেও তিনি প্রতিশ্রুতির স্বাক্ষর রাখলেন, তবে সিনেমা যথারীতি ফ্লপ।

নাসির হোসেনের ব্যানারে প্রথম বড় মাপের কাজ করার সুযোগ পেলেন পঞ্চম— ‘তিসরি মাঞ্জিল।’ পরিচালনা করবেন বিজয় আনন্দ। আর মূল পাত্রের চরিত্রে বিপুল সমাদৃত শাম্মি কাপুর! রাহুলদেব বর্মণ ব্যক্তিগত জীবনে ছিলেন প্রখ্যাত গায়িকা আশা ভোঁসলের স্বামী। তিনি সুনাম কুড়িয়েছেন হিন্দি গানের জন্য, যদিও আগাগোড়া ছিলেন একজন বাঙালি। ৩৩ বছরের ক্যারিয়ারে আরডি বর্মন ৩৩১টি উল্লেখযোগ্য সিনেমায় সঙ্গীতায়োজন করেন। তার বিখ্যাত কিছু সিনেমা হচ্ছে— ‘ইয়াদো কি বারাত’, ‘গোলমাল’, ‘খুব সুরাত’, ‘সনাম তেরি কাসাম’, ‘১৯৪২ : অ্যা লাভ স্টোরি’, ‘রকি’, ‘শোলে’।

৪ জানুয়ারি ১৯৯৪ সালে রাহুলদেব বর্মণ মাত্র ৫৪ বছর বয়সে হার্ট এ্যাটাক করে মুম্বাইয়ে মৃত্যুবরণ করেন।

রাহুলদেব বর্মণ ১৯৩৯ সালের আজকের দিনে (২৭ জুন) কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন।

More from GeneralMore posts in General »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Mission News Theme by Compete Themes.