Press "Enter" to skip to content

মুম্বইয়ের সিনেমা জগতে যে ক’জন বাঙালির নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে তাঁদের মধ্যে একজন অবশ্যই বাসু চ্যাটার্জি……।

Spread the love

স্মরণঃ বাসু চট্টোপাধ্যায়

বাবলু ভট্টাচার্য : মুম্বইয়ের সিনেমা জগতে যে ক’জন বাঙালির নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে তাঁদের মধ্যে একজন অবশ্যই বাসু চ্যাটার্জি।

‘মিডল অফ দ্য রোড’ সিনেমায় তিনি ছিলেন পথপ্রদর্শক। একটা সময় বাসু চট্টোপাধ্যায়, বাসু ভট্টাচার্য এবং হৃষীকেশ মুখোপাধ্যায় মুম্বই সিনেমা জগতকে দাপটে শাসন করেছেন। একের পর এক হিট ছবি উপহার দিয়েছেন এই তিন বাঙালি পরিচালক।

বাসু চট্টোপাধ্যায় ১৯৩০ সালের ১০ জানুয়ারি রাজস্থানের অজমের শহরে জন্মগ্রহণ করেন।

বসু চ্যাটার্জির বাবা রেলওয়েতে চাকরি করতেন, তাই বদলি হতেন সপরিবার। তখন থেকেই বিভিন্ন প্রদেশের মানুষের জীবন দেখার সুযোগ হয় তার। বাংলার বাইরে থাকলেও তারা ভোলেননি বাঙালি শিকড়কে।

প্রথম জীবনে মুম্বই থেকে প্রকাশিত একটি সাপ্তাহিক ট্যাবলয়েডে অঙ্কনশিল্পী এবং কার্টুনিস্ট হিসেবে তার কর্মজীবন শুরু হয়।

ফিল্মের আগ্রহ অবশ্য সেই শৈশব থেকেই। সে কারণেই প্রথম যৌবনে ফিল্ম সোসাইটির সদস্য হয়েছিলেন বাসু। ফিল্ম সোসাইটিতেই দেখেন ‘বাইসাইকেল থিভস’– যে ছবি দেখে নিজে ছবি পরিচালনা করার কথা ভাবতে শুরু করছিলেন।

শুরুর আগে তিনি হৃষিকেশ মুখার্জী ও বাসু ভট্টাচার্যর সহকারী হিসেবে ছবির জগতে কাজ করেন। রাজ কাপুর ও ওয়াহিদা রহমান অভিনীত ‘তিসরি কসম’ সিনেমায় তিনি বাসু ভট্টাচার্যর সহকারী হিসেবে কাজ করেন প্রথম। বাসু ভট্টাচার্য ছিলেন তার বন্ধু স্থানীয় দাদা। ‘তিসরি কসম’ ১৯৬৬ সালে জাতীয় পুরস্কার লাভ করে।

বাসু চট্টোপাধ্যায় পরিচালিত প্রথম ছবি ‘সারা আকাশ’ মুক্তি পায় ১৯৬৯ সালে। এই ছবিটির জন্য ফিল্ম ফেয়ার পুরস্কার পান তিনি। ফিল্ম সোসাইটিতে ছবি দেখা অভিজ্ঞতা দিয়েই এই ছবিটি বানিয়েছিলেন। রাজশ্রী প্রোডাকশান ছবিটা প্রযোজনা করেছিল। তারা দ্বিতীয় ছবির অফার দেয় বাসু চ্যাটার্জীকে, ‘পিয়া কা ঘর’।

মুম্বই শহরের মধ্যবিত্ত পরিবারের গল্প উঠে আসত তার ছবিতে। যে ছবিগুলো বাংলা-সহ সর্বভারতীয় স্তরে সমাদৃত হয় এবং তার ছবির গান আজও সব আইকনিক। সলিল চৌধুরী থেকে রাজেশ রোশনরা তার ছবিতে সুরারোপ করেছেন।

তার কাজের ঝুলিতে- ‘রজনীগন্ধা’, ‘স্বামী’, ‘ছোটি সি বাত’, ‘চিৎচোর’, ‘দিল লাগি’, ‘খাট্টা মিঠা’, ‘বাতো বাতো মে’, ‘শিশা’, ‘দুর্গা’, ‘প্রিয়তমা’-র মতো সুপারহিট ছবি রয়েছে। পরে বাংলা ইন্ডাস্ট্রিতে এসে ‘হঠাৎ বৃষ্টি’, ‘চুপিচুপি’, ‘হচ্ছেটা কি’– এই সব ছবি করেছেন।

‘হঠাৎ বৃষ্টি’ ছিল বাংলাদেশ-ভারত যৌথ উদ্যোগে ছবি ফিরদৌস-প্রিয়াঙ্কা ত্রিবেদী অভিনীত। নচিকেতা চক্রবর্তীর সুরে গানগুলি আজও মন ভাল করে।

১৯৯২ সালে ‘দুর্গা’ সিনেমার জন্য জাতীয় পুরস্কার পান বাসু চট্টোপাধ্যায়। হিন্দি ও বাংলায় অনেক সিনেমা পরিচালনা করেছেন তিনি।

বাসু চ্যাটার্জীর টিভি সিরিজও বিখ্যাত ছিল দূরদর্শনে। প্রিয়া তেন্ডুলকার অভিনীত ‘রজনী’ কিংবা রজিত কপূর অভিনীত ‘ব্যোমক্যাশ বক্সী’ মনে রেখেছেন অনেকেই।

বাসু চট্টোপাধ্যায় ২০২০ সালের আজকের দিনে (৪ জুন) মুম্বইয়ে মৃত্যুবরণ করেন।

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Mission News Theme by Compete Themes.