পাপিয়া অধিকারী : বিশিষ্ট অভিনেত্রী ও সমাজসেবী : বালুরঘাট, ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫। অদ্ভূত অভিজ্ঞতা ।বালুরঘাটের গোপালগঞ্জ মন্দির প্রাঙ্গণে মা বিধ্যেশ্বরীর বিশাল বটগাছের প্রকান্ড প্রকান্ড বটের ঝরীর গহ্বরে মা হাজার হাজার বছর ধরে এক বিশাল সর্পের প্রহরায় বসে ছিলেন শয়ে শয়ে কিলো স্বর্ণালনকার নিয়ে। পাথর হয়ে যাওয়া বাম পায়ের বৃদ্ধাঙগুষ্ঠটি আবিষ্কৃত হয় ২০২২ সালে বট গাছের ভিতরে মাটির অনেক নীচে এক মনোহর পাথরের ছোট্ট মন্দিরের মধ্যে। স্বপ্নাদিষ্ট হয়ে প্রধান পুরোহিত মায়ের এই পিতলের মূর্তিটি তৈরি করে প্রাচীন মন্দিরের ছাদে বটগাছের ঐ ছোট্ট গহ্বরে ধূমধাম করে পুজো শুরু করেন।ওই বিশাল সর্পটি তখন মাকে ছেড়ে পাশের জঙ্গলে দেহত্যাগ করেন ।কথিত আছে ,শঙ্কর ভগবান , এতদিন পরে থাকা বিগ্রহ ভক্তদের দ্বারা পূজিত হচ্ছেন দেখে নিশ্চিন্তে তাঁর ধামে ফিরে যান ।কিন্তু মাঝে মাঝেই সর্পরা ডালপালা দিয়ে নেমে এসে হয়তো দেখে ,পুজোর কোনো ত্রুটি হচ্ছে কিনা ।
আমার এক ভাই বিপ্লবের আমন্ত্রণে মাঘী পূর্ণিমা উপলক্ষে ঐখানে পৌঁছাই ।কথা ছিল ওখানে আমি শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা পাঠ করবো আর শ্রী বানেশ্বর ,শ্রী শ্রী বাবা রামেশ্বর এবং লোকনাথ বাবার আশীর্বাদ নিয়ে পুজো করবো।ওরে বাবা ! মা বিধ্যেশ্বরীর ইতিহাস, রূপ দেখে চোখের জল ধরে রাখতে পারিনি ।মা একেবারে বেনারসি শাড়ি ,গাদা গয়না পরে জ্বলজ্বলে চোখে মৃদু হাসি নিয়ে একেবারে ঝলমল করছেন ।পায়ে মাথায় সিঁদুর পরিয়ে মাকে জড়িয়ে ধরে আপন মনে অনেকক্ষন কাঁদলাম ।অহল্যার চেয়েও বেশি অপেক্ষা করিয়েছি মা তোমায় । but better late than never ।হাজার হাজার বছরের গয়নায় হাত বুলিয়ে মা কে আদর করলাম ।আর একটা কথা ,আবেগে এতটাই আপ্লুত ছিলাম নিজেদের জন্য কিছুই চাইতে মনে আসেনি ।চাইবো কি মা ই তো সবচেয়ে বড় পাওনা ।
ওখানে আমার আরেক ভাই রজত খুব যত্ন করে আতিথেয়তা করলো ।আরেক ভাই ট্রেন যখন কুমারগঞ্জে ছুটে এসে আমাকে এবং সাথীদের জন্য ওখানের বিখ্যাত রাবরি ও দই দিয়ে শুভেচ্ছা জানালো ।
ভাগবত যতক্ষন বলেছি ,মায়ের মুখ জ্বল জ্বল করছে আমার মুদ্রিত চোখে ।সারা রাত ট্রেনে উপহার পাওয়া মায়ের ছবি কে আদরের চোখে ভাসিয়ে সকালে হাওড়ায় ফিরলাম ।আমি খুব একটা ফেসবুক ব্যবহার করি না।প্রাইভেট পার্সন ।কিন্তু মা এর ছবি শেয়ার না করে পারলাম না । প্রচুর যাগ যজ্ঞ পুজো ভোগ , অনেক অনুষ্ঠান হবে ।বিশাল হোম কুন্ডগুলো তৈরী হয়েছে ।লক্ষ লোকের মেলায় ওই যজ্ঞ অনুষ্ঠান কি যে রূপ নেবে ভেবে শিহরিত হচ্ছি ।
যাঁরা এই লেখাটা পড়লেন একজনেরও যদি ইচ্ছে হয় , ঘুরে আসবেন ।বালুরঘাট স্টেশন থেকে গাড়িতে ৪০ মিনিটের পথ গোপালগঞ্জ বারোয়ারি কালি মন্দির প্রাঙ্গন ।১৮ দিনব্যাপী চলছে। একবার প্রত্যক্ষ করলে বুঝবেন এই জায়গার মাহাত্ম।
জয় মা জয় বাবা বানেশ্বর জয়বাবা রামেশ্বর জয়বাবা লোকনাথ জয় শ্রীকৃষ্ণ ।
মা বিধ্যেশ্বরীর বিশাল বটগাছের প্রকান্ড বটের ঝরীর গহ্বরে মা হাজার হাজার বছর ধরে এক বিশাল সর্পের প্রহরায় বসে ছিলেন শয়ে শয়ে কিলো স্বর্ণালনকার নিয়ে….।

More from CultureMore posts in Culture »
More from InternationalMore posts in International »
- পাণ্ডুলিপি সংরক্ষণ ও গবেষণায় সাহায্য করতে আইআইটি মাণ্ডির সঙ্গে সমঝোতা ভক্তিবেদান্ত রিসার্চ সেন্টারের….।
- TV9 বাংলার নতুন নিউজ সিরিজ যাদবপুরে যথেচ্ছাচার!’…..।
- কলকাতায় ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘে দোল উৎসব….।
- আজ আন্তর্জাতিক কিডনি দিবস…।
- ইমন চক্রবর্ত্তীর একক অনুষ্ঠান বোরোলিন তোমাকে দেখব বলে…।
- কৃষ্ণ বলো সঙ্গে চলো- মায়াপুরের যোগপীঠে গৌর জয়ন্তী মহোৎসব উদযাপন….।
Be First to Comment