Press "Enter" to skip to content

মানুষের মগজের ওজনের আশি শতাংশ বুদ্ধি র বিকাশ হয়ে যায় জীবনের প্রথম তিন বছর বয়সে।পড়াশোনার পরিবেশ কে যুদ্ধ ক্ষেত্র বানালে বুদ্ধি র বিকাশ সঠিক হবে না………

Spread the love

#বুদ্ধি র বিকাশে দরকার স্বতঃস্ফূর্ত শিখন, যাতে গুনগত মান ও বাড়তে পারে।#
মৃদুলা ঘোষ: কলকাতা, ২৭ জুন, ২০২০।
বুদ্ধিমান আর চালাক চতুর হওয়া টা অনেকেই এক ই ব্যাপার বলে মনে করলেও, বাস্তবে বুদ্ধি আর চাতুর্য সমার্থক শব্দ নয়। পরিবেশ, পারিপার্শ্বিকতার সঙ্গে মানিয়ে চলার ক্ষমতার নাম বুদ্ধি। চারপাশের পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে চলার এই দক্ষতার একটি অংশ জন্মগত বা বংশগত, বাকিটা পরিবেশগত। বেশি বুদ্ধিমান মানুষের ছেলে মেয়েরা বেশি বুদ্ধিমান বা সফল হতে পারেন, আবার নাও হতে পারেন। আবার, সাধারণ বুদ্ধির মানুষের সন্তান সন্ততি ও পরবর্তী জীবনে হয়ে উঠতে পারেন প্রবল বুদ্ধিমান ও যথেষ্ট সফল। বুদ্ধিসুদ্ধী যত ই কম হোক, কারোর মগজের ঘিলু র জায়গায় আর যাই হোক গোবর থাকে না। কারন বুদ্ধি র আধার মস্তিষ্ক বা মগজ। মগজের সেরিব্রাল কর্টেক্স নামে যে ধূসর টুপি র মতো রয়েছে তা পাঁচ মিলিমিটার পুরু, দেড় বর্গমিটার ছড়িয়ে থাকা, যার মধ্যে নানা অংশ আছে। সেরিব্রাল কর্টেক্স এর বিভিন্ন অংশের সমন্বয় ই একজন মানুষের মেধা মনন বুদ্ধি চেতনার মূল কথা। এক্ষেত্রে জানা দরকার, একজন মানুষ তার ছেলেবেলা থেকে আনন্দময় পরিবেশে যত বেশি পড়া আর জানা র কাজ অব্যাহত রাখবে, তত ই তার মস্তিষ্কের প্রি ফ্রন্টাল কর্টেক্স আরো পরিনত ও পুষ্ট হয়।

তার ফলে কল্পনা শক্তি ও তত বাড়ে। বাড়ে মেধা ও বুদ্ধি র গুনগত মান। তাই বুদ্ধি বাড়াতে আদর্শ শিখন এর সাহায্য নিতে হবে। তীব্র আবেগ, আর কল্পনা শক্তি কাজে লাগিয়ে বাচ্চা কে শেখানো যায় নানা বিষয়। শুধু, স্কুল-কলেজের পাঠ্যবই নয় , উৎসাহ দিতে হবে শিক্ষার্থীর পছন্দ, ইচ্ছা অনুযায়ী নানা ধরনের বই পড়ার র বিষয়ে। গল্প করা র ছলে শেখার প্রক্রিয়া চলতে থাকলে তা কখনো একঘেয়ে হয়না, বিরক্তিকর ও হয় না। বাচ্চা কে শেখাতে গিয়ে চাপ দেবেন না, ভুলে ও ভয় দেখাবেন না। পড়াশোনা র পরিবেশ কে যুদ্ধ ক্ষেত্র বানালে বুদ্ধি র বিকাশ সঠিক হবে না। এক টানা না শিখিয়ে মাঝে মাঝে, গল্প করার বা খেলা করা র সুযোগ দিন। তবে, টিভি, মোবাইল যেন পড়াশোনা র ফাঁকে অভ্যাস এ পরিনত না হয়। শিখে যাওয়া বিষয় কে বারবার ঝালিয়ে নেওয়ার ব্যাবস্থা করা দরকার। শিখনের উপর নজর রাখতে গিয়ে খবরদারি করা বা বকাঝকা করা কখনো নয়। শেখার পরিবেশ যেন হয় আনন্দ দায়ক। আমাকে অনেক জানতে হবে, শিখতে হবে এমন চাপ যেন মনে র উপর না আসে। স্বতঃস্ফূর্ত পরিবেশ শিখন প্রক্রিয়া চালু থাকবে যেখানে, নিয়মানুবর্তিতা যেন গলা টিপে না ধরে। মনে রাখতে হবে, মানুষের মগজের স্থল হলো এক স্নায়ু কোষ বা নিউরোন। মগজের ওজনের আশি ভাগটাই হয়ে যায় জীবনের প্রথম তিন বছরে বুদ্ধি র বিকাশ। বাকিটা নির্ভর করে বেড়ে ওঠা র পরিবেশ, যথেষ্ট পুষ্টি ও শিক্ষা র পদ্ধতির উপর। ব্যাক্তি র বুদ্ধি র বিকাশ নির্ভর করে গর্ভাবস্থায় মা এর পুষ্টি র উপর। এসময় গর্ভবতী মহিলার সঠিক পুষ্টি না পেলে গর্ভস্থ শিশুর মগজের বিকাশ বাধাপ্রাপ্ত হয়। এক ই ঘটনা ঘটতে পারে মাথায় বড়ো ধরনের কোনও আঘাত পেলে। তাই বড়ো হওয়ার পরিবেশ যদি সুস্থ, সুন্দর স্বাভাবিক ও আনন্দময় হয়, তাহলে বাচ্চার বুদ্ধির বিকাশ ও যথাযথ হয়।

সোজা কথায় জিন বা বংশগত কারণের বাইরে একজনের বেড়ে ওঠার পরিবেশ, শিক্ষার পদ্ধতি, শেখার সময়ের আবেগ যথাযথ হওয়া, সর্বোপরি খাদ্য পুষ্টির সুষম যোগান বুদ্ধি বিকাশের প্রধান শর্ত। বুদ্ধি র সাথে আবেগ অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। নিজের আবেগ কে নিয়ন্ত্রনে রেখে নিজের আচার আচরণ কে পরিচালনা করাও মানুষের বুদ্ধি র গুনগত প্রকাশ। তাই বুদ্ধি বিকাশ ও তার প্রয়োগ দুটো ই সমান গুরুত্বপূর্ণ।

More from GeneralMore posts in General »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Mission News Theme by Compete Themes.