Press "Enter" to skip to content

মানুষের আশীর্বাদে এখন ও অব্দি বিবেক মেরুদন্ড বিক্রি করিনি…….।

Spread the love

শ্রেয়সী হাজরা : ৭, মে ২০২১। লোকে বলে, “একা মেয়ে মানুষ তুমি, একা একা বিভিন্ন জায়গায় যেতে, এত রিস্ক নিয়ে কাজ করতে ভয় করে না? আবার অনেকে বলে “একা মেয়ে মানুষ, কতদিন আর পারবে? মেরুদন্ড এত সোজা রাখার দরকার পড়ে না আজকাল, চেষ্টা করলেই বড় বড় অফিস থেকে অনেক সাহায্য পাবে।” ব্যক্তিগতভাবে একটি জিনিস মনে করি, বিবেক এবং মেরুদন্ড যদি সোজা থাকে তাহলে তার সাথে স্বয়ং ঈশ্বর এবং ঈশ্বর রুপি সাধারণ মানুষের আশীর্বাদ থাকে। এবং মানুষের আশীর্বাদে এখন ও অব্দি বিবেক মেরুদন্ড বিক্রি করিনি। সেজন্যই বড় বড় উচ্চবিত্ত পাড়াগুলোতে, শপিংমলে, বিভিন্ন প্রশাসনিক জায়গায় অনেকেই যখন স্বেচ্ছায় স্যানিটাইজার এর সার্ভিস দিচ্ছেন, যে সার্ভিস গুলো প্রশাসনিক জায়গা উচ্চবিত্ত জায়গাগুলি আরামসে টাকা পয়সা দিয়ে করাতে পারেন সেগুলোতে স্বেচ্ছায় কাজ হচ্ছে। কিন্তু যেখানে হত দরিদ্র মানুষ গুলো খেতে পায়না, যেখানে লোকের ঘরে দুটো বাসন না মাজলে হাঁড়িতে ভাত চাপে না, যেখানে মাটি না কাটলে ইঁট না বইলে রাতের খাবার টুকু জুটে না, সেই মানুষগুলোর পাড়াতেই স্বেচ্ছায় স্যানিটাইজার করার প্রয়োজন এই অবস্থায়।


কারণ খুব বিপদে আছে তো একমাত্র তারাই। গ্রাম বাংলার পরিস্থিতি বড় বড় মিডিয়াতে সোশ্যাল মিডিয়াতে কোনদিন হাইলাইট হবে না,তারা মরে যাক না খেতে পেয়ে মরে যাক জীবাণুতে মরে যাক কোনো মাধ্যম তাদের কথা তুলে ধরবে না।
পাগলের মত করে বেরিয়েছি আমি এইসব জায়গায় স্যানিটাইজার এর ব্যবস্থা করতে, কেউ আমল দেয়নি। সকল এর ই নাকি এক ভয়, যদি করোনা হয়ে যায়।
যে কোন জিনিসেরই সস্তা প্রচার খুব বাজে জিনিস।
গ্রামবাংলায় একেকটি পাড়ায় যদি করোনা ধরা পড়ছে, সেই পাড়া টিকে অচ্ছুত করে দেওয়া হচ্ছে। তীব্র জল সংকট চলছে গ্রামবাংলায়। মানুষগুলোর না আছে খাবার না আছে জল। না আছে কোন সরকারি কার্ড যাতে সস্তার চাল ডাল পাওয়া যায়। তার সাথে মানুষগুলোকে কাজের থেকে ছাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে অন্যায় ভাবে, এই সমস্ত কিছু দেখে আর থাকতে পারা গেল না। নিজেই ময়দানে নামলাম আমি, সোশ্যাল মিডিয়ায় ফেসবুকে মানুষের কাছে ভিক্ষা চাইলাম স্যানিটাইজার সিলিন্ডার স্প্রে মেশিন দেওয়ার জন্য।
এবং অনেক ঈশ্বর তুল্য মানুষ এগিয়ে এলেন। দান করলেন।
আপাতত একটি সিলিন্ডার স্প্রে মেশিন, স্যানিটাইজার ওষুধ, সোডিয়াম হাইপো ক্লোরেট কিনে একটি পুরো অসহায় গরিব বস্তিকে স্যানিটাইজার করা হলো। নিজে হাতে করে সমস্ত কিছু করলাম। এবং মানুষগুলোকে কিছুটা হলেও স্বস্তির হাসি উপহার দিয়ে এলাম। যতটা পারলাম। আমি জানি তাদের জন্য কেউ নেই, আমি জানি, আমার লড়াই ভীষণ কঠিন। আমি জানি যাদের জন্য আমি সারাবছর করি, তাদের আমি এই দুঃসময়ে ছেড়ে যাবো না।
শুধু আপনাদের আশীর্বাদ থাকলেই যথেষ্ট। আজ এই দুঃসময়ে অসহায় দিনে আমার ডাকে সাড়া দিয়ে এই গরীব মানুষগুলোর জন্য যারা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেন তারা নিশ্চিন্তে থাকুন যে কোন ভাইরাস হোক বা যাই হোক কোন অশুভ শক্তি আপনাদের কিছু করতে পারবে না, স্বয়ং ঈশ্বরের আশীর্বাদ আপনারা লাভ করলেন।

আরো দরকার। আরো আমার অনেক অসহায় ছাত্র-ছাত্রীদের বস্তি রয়েছে, যারা বাসন মেজে দিনমজুরি করে খায়, তাদের জন্য পরিষ্কার পরিছন্নতা স্যানিটাইজার স্প্রে সোডিয়াম হাইপোক্লোরেট অনেক বেশি প্রয়োজন‌।
সাথে থাকবেন। এভাবে কাজ করার অনুপ্রেরণা জোগাবেন।
এবং আরেকটি কথা বলতে পারি, কোন গ্রামে কোন অসহায় গরীব পাড়ার বস্তির যদি স্যানিটাইজিং প্রয়োজন হয়। তাহলে সেই অলিগলি বস্তিতে শ্রেয়সী হাজরা আছে।
নির্দ্বিধায় ডাকবেন আমায়, আমি আছি।
শ্রেয়সী হাজরা।

More from GeneralMore posts in General »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Mission News Theme by Compete Themes.