Press "Enter" to skip to content

মানবজীবনকে টিকিয়ে রাখার নেপথ্যে রয়েছে মৌমাছির বিরামহীন পরিশ্রম……।

Spread the love

বি শ্ব মৌ মা ছি দি ব স আ জ

‘‘যদি মৌমাছি পৃথিবী থেকে বিদায় নেয়, তবে মানুষের জীবন পরবর্তী চার বছরে শেষ হয়ে যাবে।’’

[ বিজ্ঞানী আইনস্টাইন ]

বাবলু ভট্টাচার্য : আজ মৌমাছি দিবস। ২০১৮ সাল থেকে জাতিসংঘের উদ্যোগে প্রতিবছর ২০ মে বিশ্ব মৌমাছি দিবস পালিত হয়ে আসছে।

এক পাউন্ড মধু উৎপাদনে মৌমাছিদের প্রায় ২০ লাখ ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করতে হয়। আর এর পেছনে এই পতঙ্গগুলোকে পাড়ি দিতে হয় প্রায় ৮০ হাজার কিলোমিটার পথ। একটি মৌমাছি তার জীবদ্দশায় এক চা-চামচ পরিমাণ মধু সংগ্রহ করে।

মৌমাছিদের আমরা কেবল মধু সংগ্রহকারী পতঙ্গ হিসেবে দেখি। আমরা ভুলে যাই, মধু সংগ্রহ করতে গিয়ে মৌমাছি অনেক শস্য এবং ফলমূলের পরাগায়ন ঘটিয়ে এগুলোর ফলন টিকিয়ে রেখেছে। মানবজাতির খাদ্য উৎপাদনব্যবস্থা মৌমাছি এবং এ ধরনের আরও অনেক পতঙ্গনির্ভর।

এ অত্যাবশ্যকীয় পতঙ্গটির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের দিন আজ। আজ বিশ্ব মৌমাছি দিবস।

১৭৩৪ সালের ২০ মে মৌমাছিবিশারদ অ্যান্টন জ্যাংজারের জন্মদিন। স্লোভেনিয়ার ব্রেঞ্জিকা গ্রামে তার জন্মদিনেই দেশটির প্রেসিডেন্টের উপস্থিতিতে প্রথম মৌমাছি দিবস উদযাপন করা হয়। সেই থেকে প্রতিবছর ২০মে বিশ্ব মৌমাছি দিবস হিসেবে উদযাপিত হয়ে আসছে। জাতিসংঘও এ দিনটি উৎসর্গ করেছে মৌমাছিদের জন্য।

মানবজীবনকে টিকিয়ে রাখার নেপথ্যে রয়েছে মৌমাছির বিরামহীন পরিশ্রম। কীটতত্ত্ববিদদের মতে, এই মধুকররা তাদের বিচরণ এলাকার পুরো শস্যক্ষেত্র ছাড়াও চারপাশের গাছপালার ফুলে ফুলে প্রতি সেকেন্ডে ২০০ বার জাদুকরী পাখা নেড়ে ও শুঁড় বসিয়ে পরাগায়নে ভূমিকা রাখে।

মৌমাছি নিজেদের বসবাসের জন্য তৈরি করে মৌচাক। একটি মৌচাকে যত মৌমাছি বাস করে, তার চারপাশে ৪ বর্গকিলোমিটারের মধ্যে যত ফুল ফোটে, এক দিনে সেগুলোতে ঘুরে ঘুরে মধু সংগ্রহ ও পরাগায়ন করতে সাহায্য করে এসব মৌমাছি। এর ফলে বিভিন্ন শস্য ও ফলফলাদির উৎপাদন অব্যাহত থাকে।

বিশ্ব মৌমাছি দিবসের উদ্দেশ্য হলো, পৃথিবীতে মৌমাছিসহ অন্য যেসব পতঙ্গ পরাগায়নে ভূমিকা রাখছে, সেসব প্রাণীকে বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষায় জনসচেতনতা সৃষ্টি করা। তবে আজ দেশের কোথাও সরকারি কিংবা বেসরকারিভাবে দিনটি পালনে কোনো কর্মসূচির তথ্য পাওয়া যায়নি।

মৌমাছি সামজবদ্ধ পতঙ্গ হলেও খ্রিষ্টের জন্মের ৬ হাজার বছর আগের শিলালিপিতে মৌমাছি পালনের ইতিহাস পাওয়া যায়। ব্যাবিলনীয় সাম্রাজ্যে অর্থাৎ খ্রিষ্টপূর্ব চতুর্থ সহস্রাব্দের শেষে ও তৃতীয় সহস্রাব্দের শুরুতে বিপুলভাবে মৌমাছি পালন করা হতো।

মৌমাছি চাষের ইতিহাস অনেক প্রাচীন হলেও পদ্ধতিগতভাবে প্রথম ১৬৩৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রে মৌমাছি চাষ শুরু হয়। পরবর্তী সময়ে ১৮৪০ সালে ‘মোস্সে কুইনবি’ নামে এক বিজ্ঞানী মৌচাষ শুরু করেন। ১৮৫১ সালে আধুনিক পদ্ধতিতে মৌচাষ শুরু করেন ল্যাংস্ট্রোথ নামক আরেক বিজ্ঞানী যাকে আধুনিক মৌচাষের জনক বলা হয়। আমাদের এই দেশেও বহুলমাত্রায় মৌচাষ হয়। সুন্দরবনে মধু সংগ্রহ করতে গিয়ে বাঘের থাবায় বহু মানুষের প্রাণ চলে গেছে। শরীর সুস্থ রাখতে মধু’র গুন এবং স্বাদ এক কথায় অনস্বীকার্য।

বাংলাদেশে আকতার হামিদ খান ১৯৬১ সালে কুমিল্লার পল্লী উন্নয়ন একাডেমিতে প্রথম মৌচাষ শুরু করেন। এরপর ১৯৬৩ সালে সাতক্ষীরায় বিসিক প্রথম মৌচাষের উদ্যোগ নেয় এবং এখনও বিসিকের এ প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে, যা সারা দেশে বিস্তৃত হয়েছে।

More from GeneralMore posts in General »
More from InternationalMore posts in International »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Mission News Theme by Compete Themes.