Press "Enter" to skip to content

মহানায়ক উত্তম কুমারের পছন্দের নায়িকা, বাংলা ও হিন্দি সিনেমার সুপারহিট অভিনেত্রী মিঠু মুখার্জি………

Spread the love

—————-শুভ জন্মদিন মিঠু মুখার্জি————

বাবলু ভট্টাচার্য: ঢাকা, পাড়ার ক্লাবের রজত জয়ন্তী উৎসবে রবীন্দ্রনাথের ‘তাসের দেশ’ নৃত্যনাট্যে মিঠু মুখার্জির প্রথম মঞ্চাবতরণ। সেটা ছিল ১৯৬৭/৬৮ সাল। এরপর প্রতিমা মুখ, উর্ব্বশী ফিগার, নাচতে ভালো পারার সুবাদে নায়িকা রূপে চলচ্চিত্রে পদার্পণ তার। মিঠুর প্রথম ছবি চিত্ত বসুর ‘শেষ পর্ব’, অমিতাভ-হেমার ‘বাগবান’-এর গল্প, পাহাড়ী সান্যাল-ছায়াদেবী ভাগের বাপ-মাকে ছেলে- মেয়েরা আলাদা করে দেয় দেখাশোনার জন্য। সেখানে নবাগতা নায়িকা মিঠু, বড় ছেলে অজিতেশ-অনুভা গুপ্তার মেয়ে। মিঠুর বয়ফ্রেন্ড শমিত ভঞ্জ। ছবিতে ছিলেন সাবিত্রী, অনুপ কুমার, উৎপল দত্ত প্রমূখ। সত্তর দশকে যৌবন সরসী রূপ নিয়ে রূপোলী পর্দায় আগমন হয় এক নায়িকার– ‘স্বয়ংসিদ্ধা’ মিঠু মুখার্জী। যার রূপে দেহসৌষ্ঠবে ছিল অটুট যৌন আকর্ষণ আবার দেবী মুখের মিশেল। দীনেন গুপ্তর ছবি ‘মর্জিনা আবদাল্লা’-তে মিশরীয় লাস্যে মর্জিনা করে সারা বাংলায় প্রথম সারির নায়িকাতে চলে আসেন মিঠু। যে সময় সমাজে ‘প্রেম করি’ কিংবা ‘প্রেম করে বিয়ে’– এসব বলা নিষিদ্ধ ছিল। সেই সময় মিঠু মুখার্জীর ঠোঁটে সেই বিখ্যাত গান ‘বেশ করেছি প্রেম করেছি করবই তো’, যেন সমাজে ঝড় তোলে ওইরকম গানের সাহসী কথা। মিঠু এতটাই দর্শানুকল্য পান যে পরপর ছবি হিট হতে থাকে এবং যার রূপে পাগল হয়ে যায় দর্শক।

মহানায়ক উত্তম কুমারও মিঠুকে তাঁর নায়িকা করতে চান, ‘হোটেল স্নো ফক্স’, ‘চাঁদের কাছাকাছি’ চলচ্চিত্রে। মহানায়কের সঙ্গে একই ছবিতে রঞ্জিত মল্লিকের বিপরীতে ‘মৌচাক’ তো সর্বকালীন সুপারহিট। ঋতুপর্ণ ঘোষের ‘অন্তরমহল’ ছবির আগে একই গল্প নিয়ে ছবি ‘প্রতিমা’-তেও ছিলেন মিঠু। মূল নায়িকা যদিও সুমিত্রা মুখার্জী। ‘নিশিকন্যা’, ‘সন্ধি’, ‘প্রার্থনা’ – ইত্যাদি সিনেমাও করেছেন। বলিউডেও পাড়ি দেন মিঠু মুখার্জি। দুলাল গুহ’র ‘খান দোস্ত’ ছবিতে তাঁর অভিষেক। এরপর করেন বেশ কয়েকটি ছবি। হেমা-ধর্মেন্দ্রর ‘দিল লাগি’, ‘সফেদ ঝ্যুট’ বিনোদ মেহেরার সাথে ‘ছুটির ফাঁদে’র রিমেক, ‘মায়া মালহোত্রা’ প্রভৃতি। মিঠুর পরপর আরো সুন্দর মুখের নায়িকা আসেন টলিউডে। সেই সব নায়িকাদের নিয়ে যেমন একটি ছবি মনে পড়ছে ‘ভাগ্যচক্র’। যাতে একদিকে গ্ল্যামার চটুলপনার শ্রীমতী মিঠু তো অন্যদিকে প্রতিমা মুখ চটকদার গ্ল্যামারে আল্পনা গোস্বামী। সঙ্গে আবার নিস্পাপ মুখের টগর ফুল নন্দিনী মালিয়া।

ওদের সবার এক প্রেমিক জয় সেনগুপ্ত। সেই টানাপোড়েনের গল্প। ছবি অত আলোচিত আজকাল না হলেও ছবিতে ‘ভাগ্যের চাকাটা তো ঘুরছে’ উৎপলা-সতীনাথ জুটির সর্বকালীন হিট গান। সুলতা চৌধুরী ও সমর কুমারের নাচে গানে লিপে। জয় মিঠু জুটির আরো এক রঙিন ছবি ‘দুজনে’। বাপ্পি লাহিড়ীর সুরে সর্বকালীন হিট গানগুলো এই ছবির । ‘আশ্রিতা’ মিঠুর শেষ ছবি শেষ সুপার ডুপার হিট ছবি। কনওয়ালজিৎ নায়ক। ‘আজা নয় রাজা, আনি নয় রানী, জানি জানি আমি জানি’ গানটায় লতা মাঙ্গেশকরের সাথে ডুয়েট গেয়েছিলেন লোকসঙ্গীত শিল্পী পঙ্কজ মিত্র, আর এই গানটার লিরিক মিঠুর নিজের লেখা। কারণ ছবিটিও তাঁর‌ই প্রযোজনা। তারপর আর দেখা যায়নি মিঠুকে। আর আসেননি রূপালি পর্দায়। মিডিয়ার থেকেও সরে যান একেবারে। লাইমলাইট থাকতে থাকতে সরে যাওয়া উচিৎ সেটা হয়তো বুঝেই সরে যান। আমরা কেউ দেখিনি তার বৃদ্ধ বয়স।

ব্যক্তিগত জীবন বলতে, বেহালার বিবেকানন্দ নারী মহাবিদ্যালয়ে পড়েছিলেন মিঠু। তখনই সিনেমার নায়িকা রূপে সবার হার্টথ্রব মিঠু।

মিঠু মুখার্জি ১৯৫৫ সালের আজকের দিনে (১৯ জুন) কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন।

More from GeneralMore posts in General »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Mission News Theme by Compete Themes.