Press "Enter" to skip to content

ভালো থাকা ও সুস্থ থাকার জন্য মেনে চলতে হবে নিউট্রিশনাল ও লাইফস্টাইল পরিকল্পনা……

Spread the love

#নিজেকে আকর্ষণীয় করতে দরকার পরিকল্পনা মাফিক সঠিক ডায়েট, যা সবার জন্য এক নয়।#
মৃদুলা ঘোষ : কলকাতা, ৬ জুলাই, ২০২০।
নিজের ঘরে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজের শরীর নিয়ে অস্বস্তি তে থাকা মানুষের সংখ্যা নেহাত কিছু কম নয়। পেটের কাছে মেদ? অথবা, ডাবল চিন! পিঠ টা ছিপছিপে নেই? অথচ, আলুর চপ, বিরিয়ানি,পান্তুয়া র স্বাদ ভুলে সিদ্ধ সব্জি কেই আপন করে নিয়েছে। তবুও শরীর টা এমন দেখতে কেন? এমনটাই ভাবনা অনেকের ই মনে। এতো কৃচ্ছ্রসাধনের ফল যদি জলে যায় তাহলে কাকে দোষ দেবেন? আসলে ডায়েট করাটা জরুরি, কিন্তু সুফল তখনই পাবেন যদি তা সঠিকভাবে করেন। ডায়েট মানে শুধু ই অল্প পরিমাণে খাওয়া নয়, বা সব খাবার বাদ দেওয়া নয়, এর মূল কথা সঠিক খাওয়া, পরিকল্পনা করে খাওয়া। অন্যের ডায়েট দেখে নিজের জন্য প্রয়োগ করবেন না। সঠিক ডায়েট এর পরিভাষা এক নয়।

কারন একজন প্রাপ্তবয়স্কের জন্য যা সঠিক, তা একজন বাচ্চা বা বয়স্ক র জন্য উপযুক্ত হবে না। ডায়েটের মূল উদ্দেশ্য হলো শরীরে যতটা নিউট্রিশন বা পুষ্টি র প্রয়োজন ততটা খাবারের মাধ্যমে পৌঁছে দেওয়া। প্রত্যেকের শারীরিক গঠন এক হয়না, তার নিউট্রিয়েন্টের চাহিদা ও আলাদা হওয়া স্বাভাবিক। একজন ১৪ বছরের মেয়ে যার ওজন ৪০, তার যদি রাতে দুটো রুটি খেয়ে পেট ভরে যায়, ভাবার কোনো কারন নেই আপনার ক্ষেত্রে ও তাই হবে। শরীর আদতে একটা মেশিন, তার বিভিন্ন কলকব্জা গুলি যাতে ভালো ভাবে কাজ করতে পারে, তার জন্য দরকার ফুয়েল, সঠিক খাবার ই এই ফুয়েলের কাজ করে। যার থেকে শরীর পুষ্টি পাবে। নাহলে পুষ্টি র কোটা পূরণ না হলে শরীরে মেদ জমতে শুরু করবে। তাই, আপনার শারীরিক গঠন, উচ্চতা, ওজন, বয়স এবং লাইফস্টাইলের এর উপর নির্ভর করেই ডায়েট তৈরি হবে। মনে রাখতে হবে ঝটপট রোগা কিন্তু হওয়া যায় না, ডায়েট চার্ট কোনো ম্যাজিক নয়, যে রাতারাতি আপনার ওজন দশ কিলোগ্রাম কমিয়ে দেবে। আসল কথা ভালো থাকা, সুস্থ থাকার জন্য মেনে চলতে হবে নিউট্রিশনাল ও লাইফস্টাইল পরিকল্পনা।

আপনি কতটা খাবার খাবেন তা নির্ভর করে আপনার খিদে র উপর। যতটা খেলে আপনার পেট ভরে যায়, অথচ পেট ভর্তি মনে হয় না, ঠিক ততটাই খাওয়া উচিত। কিন্তু আমরা প্রয়োজনে থেকে সবসময় বেশি খেয়ে ফেলি। আর তারপর পেটভার, অস্বস্তি, গোটা কয়েক আ্যন্টাসিড। এইভাবে চলতে থাকা অভ্যাস ই শরীরে মেদ জমতে এবং ওজন বাড়তে সাহায্য করে। তারপর শুরু হয়, ডায়েটিং, স্লিমিং মেশিন ইত্যাদি। কিন্তু এই পর্যায়ে যাওয়ার প্রয়োজন ই পরবে না যদি খাওয়া র সময় পরিমাণে র উপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারি। তাই ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখতে ফুড প্ল্যানিং জরুরি। প্রতিটি খাবারের নিজস্ব ফুড ভ্যালু থাকে, তাই কোনো খাবার ই সম্পূর্ণ ভাবে বাদ দিয়ে দেওয়া উচিত নয়। তবে এই খাবারের মান ও পরিমাণে র উপর নজর দেওয়া উচিত। একদিন যদি দুটো মিষ্টি খেয়ে ফেলেন, বা আলু সেদ্ধ ঘি ভাত খেতে ইচ্ছা করলে, তাতে কোনো অপরাধ নেই। অথবা বিরিয়ানি খাওয়ার প্ল্যান থাকলে সেটা উপভোগ করতে ই পারেন। সবসময় ক্যালোরি হিসাব করে চলা যায় না।

ওজন একদিনে যেমন কমে না, ঠিক তেমনই একদিনে বাড়ে ও না। মাঝে মধ্যে নিয়ম ভাঙলে ক্ষতি নেই, কিন্তু সেটা ই যেন নিয়ম হয়ে না দাঁড়িয়ে যায়। ওজন কে বশে রাখতে হলে, আপনাকে নিজের খাওয়াদাওয়ার সাথে একটু সমঝোতা করে চলতে হবে এখন প্রশ্ন, ডায়েট কেমন হবে? একজন আ্যথলিটের যে নিউট্রিশন লাগে, তা নিশ্চয়ই একজন স্বাভাবিক পেশার মানুষের তা লাগবে না। ছোটো বাচ্চা, অল্প বয়সীদের খাদ্যাভ্যাস এর দিকে বিশেষ নজর দেওয়া উচিত। কগনিটিভ ডেভেলপমেন্ট ও মজবুত ভাবে বেড়ে ওঠা র জন্য সুষম আহার ভীষন প্রয়োজন। ছোটবেলা থেকেই যে খাওয়ার অভ্যাস করানো হয় তার প্রভাব বড় হয়ে যাওয়ার পরেও থেকে যায়। সেই সঙ্গে ছোটো বেলা থেকেই খেলাধুলা, শরীর চর্চা র প্রতি গুরুত্ব দেওয়া দরকার। তাতে, বয়সকালে ও শরীর সুস্থ থাকবে। বিভিন্ন ডাল, শস্যদানা, ফল সবজি, ভালো মানের দুধ, দুধের প্রোডাক্ট, ক্যালশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার, চিকেন বিনস হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। শরীর ভালো রাখতে গেলে ছোটো বেলা থেকেই খাদ্য গ্রহণে সু অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। তবে একথা মনে রাখা উচিত, সাধারণ স্বাভাবিক মানুষদের সঠিক ডায়েট বা সঠিক পুষ্টিকর খাদ্য পরিকল্পনা এমন হওয়া উচিত যা সহজ, রোজকার জীবনে মেনে চলা সম্ভব। একটি আদর্শ খাবার প্লেট এমন হবে, যার অর্ধেক থাকবে রঙিন শাকসবজি, একের চার অংশ থাকবে প্রোটিন যা আমিষ বা নিরামিষ, এবং শেষ ভাগ থাকবে হোলগ্ৰেন কার্বোহাইড্রেট। একেই বলে স্বয়ং সম্পূর্ণ সুষম আহার। যাতে আলাদা করে কোনো ক্যালোরি হিসাব করতে হবে না।

সব কিছু মিলিয়ে খেতে পারলে সেই খাবার খেতে ও ভালো লাগবে।এই ভাবেই যদি খাদ্যাভ্যাস চালিয়ে যেতে পারেন তবে আয়না র সামনে নিজেকে আকর্ষণীয় মনে হতে বাধ্য। তবে যেকোন নিয়ন্ত্রিত আহার আপনার জন্য কতটা প্রযোজ্য সেটা অবশ্যই একজন চিকিৎসক ঠিক করবেন, সেই পরামর্শ নিতে অবহেলা কখনোই করবেন না।

More from GeneralMore posts in General »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Mission News Theme by Compete Themes.