Press "Enter" to skip to content

ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদকে ভারতবর্ষ থেকে বিতাড়িত করার জন্য যে সব ব্যক্তি, বিপ্লবী জীবন উৎসর্গ করেছেন, নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু তাঁদের মধ্যে অন্যতম……..।

Spread the love

জন্মদিনে স্মরণঃ নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু

বাবলু ভট্টাচার্য : ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদকে ভারতবর্ষ থেকে বিতাড়িত করার জন্য যে সব ব্যক্তি, বিপ্লবী জীবন উৎসর্গ করেছেন, নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু তাঁদের মধ্যে অন্যতম। তিনি মনে করতেন অহিংসায় নয়, উদারতায় নয়, শক্তি প্রয়োগ করেই ব্রিটিশকে ভারত থেকে তাড়াতে হবে। এই মন্ত্রকে ধারণ করেই তিনি লড়াই- সংগ্রাম চালিয়েছেন ব্রিটিশ শাসন-শোষণের বিরুদ্ধে।

সুভাষ চন্দ্র বসু। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের অবিসংবাদিত পুরুষ। কিংবদন্তি নেতা। পরম পূজনীয় ব্যক্তিত্ব। তিনি ‘নেতাজী’ নামে সমধিক পরিচিত। সুভাষ চন্দ্র বসুর বিখ্যাত উক্তি হলো, ‘তোমরা আমাকে রক্ত দাও, আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব।’ তাঁর আরেকটি বিখ্যাত উক্তি হলো ‘জয় হিন্দ’-যা ভারতবাসীকে ব্রিটিশ শাসকদের বিতাড়নে উদ্বুদ্ধ করেছিল।

সুভাষচন্দ্র বসুর বাবা কটকপ্রবাসী বিশিষ্ট বাঙালী আইনজীবী জানকীনাথ বসু এবং মা প্রভাবতী দেবী। ছাত্রজীবনে সুভাষ অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র ছিলেন। ষষ্ঠ শ্রেণী পর্যন্ত তিনি কটকের একটি ইংরেজী স্কুলে, পরে কটকের কলেজিয়েট স্কুলে পড়াশোনা করেন। ১৯১১ সালে ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষায় কলকাতা থেকে প্রথম স্থান অধিকার করেন তিনি। ১৯১৮ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে দর্শনে সম্মানসহ বিএ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। পরে তিনি কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিজউইলিয়াম হলে উচ্চ শিক্ষার্থে ভর্তি হন। সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় ভাল নম্বর পেয়ে নিয়োগপত্র পান। কিন্তু বিপ্লব- সচেতন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে সেই নিয়োগ প্রত্যাখ্যান করেন।

সুভাষ চন্দ্র পরপর দুইবার ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচিত হন। বলা হয় মহাত্মা গান্ধীর সঙ্গে আদর্শগত সংঘাত এবং কংগ্রেসের বৈদেশিক ও অভ্যন্তরীণ নীতির প্রকাশ্য সমালোচনা করার জন্য তাঁকে পদত্যাগ করতে হয়। সুভাষ চন্দ্র মনে করতেন গান্ধীজীর অহিংস নীতি ভারতের স্বাধীনতা আনার ক্ষেত্রে যথেষ্ট নয়। এই লক্ষ্যে সুভাষ চন্দ্র ফরওয়ার্ড ব্লক নামক একটি রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা করেন।

ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে নাৎসি ও অন্য যুদ্ধবাদী শক্তিগুলোর সঙ্গে মিত্রতা স্থাপনের জন্য কোন কোন ইতিহাসবিদ ও রাজনীতিবিদ সুভাষ চন্দ্রের সমালোচনা করেছেন; এমনকি কেউ কেউ তাঁকে নাৎসি মতাদর্শের প্রতি সহানুভূতিসম্পন্ন বলে অভিযুক্ত করেছেন। তবে ভারতের স্বাধীনতাকামী মানুষ তাঁর পথপ্রদর্শক সামাজিক ও রাজনৈতিক ভাবাদর্শের প্রতি সহানুভূতি পোষণ করেছেন।

বিশ বছরের রাজনৈতিক জীবনে সুভাষচন্দ্র ১১বার গ্রেফতার হয়েছিলেন। ইংরেজ সরকারের কাছে নেতাজী ছিলেন মূর্তিমান আতঙ্ক। বন্দী জীবনে তাঁকে ভারত ও রেঙ্গুনের বিভিন্ন জায়গায় রাখা হয়েছিল। ১৯৩০ সালে তাঁকে ইউরোপে নির্বাসিত করা হয়।

বিপ্লবী এই মহান নেতার মৃত্যু নিয়ে রহস্য আজও রয়ে গেছে। তবে মনে করা হয়, ১৯৪৫ সালের ১৮ আগস্ট তাইওয়ানে বিমান দুর্ঘটনায় তাঁর মৃত্যু হয়।

নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু ১৮৯৭ সালের আজকের দিনে (২৩ জানুয়ারি) ওড়িষ্যার কটক শহরে জন্মগ্রহণ করেন।

More from GeneralMore posts in General »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Mission News Theme by Compete Themes.