Press "Enter" to skip to content

বেলুড় থেকে বেঙ্গালুরু রোজির হাত ধরে পৌঁছাচ্ছে মা দুর্গা……। 

Spread the love

বিশেষ প্রতিনিধি : কলকাতা, ৬ অক্টোবর ২০২১। ছোট বেলাটা কেটেছে পুরনো কলকাতার শ্যামবাজারে। বাবার হাত ধরে পাড়ার পুজোয় কাজ করা দিয়ে রোজির পথ চলা শুরু। তারপর কলকাতার বেলগাছিয়ার রোজি ব্যানার্জীর বিয়ে হয় বেলুড়ের পাল বাড়িতে।
ফলতার জমিদার এই পাল পরিবারের দীর্ঘদিনের বসবাস বেলুড়ে। সেই সূত্রে রোজি বেলুড় মঠের দুর্গাপুজোতেও অংশ নিতেন প্রতিবার। কিন্তু স্বামীর কর্মসূত্রে তাঁকে চলে যেতে হয় বেঙ্গালুরু। কিছুদিন স্বপরিবারে লন্ডনে বসবাসের পর এখন বেঙ্গালুরুর স্থায়ী বাসিন্দা রোজি পাল। তার উদ্যোগেই এবার বেঙ্গালুরুতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে একমাত্র বাড়ির পুজো।
এক কথায় পাল পরিবারের বধূ রোজির হাত ধরেই  এক টুকরো বিশুদ্ধ কলকাতার শারদোৎসবের স্বাদ পেতে চলেছে বেঙ্গালুরু। বেঙ্গালুরুর এইচ এ এল – এ তাই এখন সাজ সাজ রব। কলকাতা থেকে এসেছে ঠাকুর তৈরির মিস্ত্রী, হালুইকার, ময়রা থেকে সব কিছুই। পাল পরিবারের পেন্ট হাউসেই থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে ঢাকি, পুরোহিত ও ময়রাদের। একেবারে খাঁটি বাঙালিয়ানায় সেখানেই তৈরি হবে রকমারি পুজোর উপকরন থেকে হরেক পদের মিষ্টি।
রোজি জানান, এ বছর তাঁদের পুজো পা দিল দ্বিতীয় বর্ষে।
বাঙলা গানের মূর্ছনা, বাঙালি খাওয়াদাওয়ার রসনাতৃপ্তি আর বাঙালির বিখ্যাত নির্ভেজাল পুজোর আড্ডার মেলবন্ধনে মেতে উঠতে চলেছেন বেঙ্গালুরুর পাল পরিবারের এই দুর্গা পুজো।
তিনি জানান, বেলুড় থেকে চলে আসার পর ছোটো বেলার সেই দুর্গাপুজোর স্মৃতি খুব মিস করতেন। আর কলকাতা ছেড়ে যাওয়ার সময়েই তাঁরা ঠিক করেছিলেন পৃথিবীর যে প্রান্তেই থাকুক না কেন বাঙালিয়ানা ও বাংলার ঐতিহ্যকে সঙ্গে নিয়ে যাবে। সেই ভাবনা থেকেই বেঙ্গালুরুতে চলে আসার পর কয়েকবছর আগে দুর্গাপুজোর আয়োজন করেন সোসাইটির কমিউনিটি হলে।

পরে কিছু বছর লন্ডনে কাটানোর পর ফের বেঙ্গালুরু ফিরে এসে এখন ফ্ল্যাটের মধ্যেই দুর্গাপুজোর আয়োজন করা হয় কলকাতার আদলে, কলকাতা থেকে লোকজন এনে।
তাঁর মতে বেঙ্গালুরুতে এ বছর প্রায় একশটি দুর্গাপুজো হচ্ছে। কিন্তু সেগুলি সবই আবাসন বা অ্যাপার্টমেন্ট বা বারোয়ারী পুজো। তাঁদের পুজোটাই  একমাত্র বাড়ির পুজো।
রোজীর এই প্রবাসে দুর্গা পুজো করার পরিকল্পনাকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন পাল পরিবারের গৃহকর্তা  সিতাংশু  শেখর পাল ও তার স্ত্রী শিপ্রা পাল।
এই পাল দম্পতি জানান, এক অদ্ভুত সময়ের মধ্যে দিয়ে সকলে চলেছে। এটাই সঠিক সময় যখন সব ভয় কাটিয়ে উঠে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে হবে। ভয়কে জয় করতে হবে। আর মা তো বরাভয়দাত্রী। তাই ভয়কে জয় করতে গেলে দুর্গাপুজোর থেকে ভাল আর কী বা হতে পারে। মায়ের আশীর্বাদে সব কিছু ভালো হবে। দূর দূরান্ত থেকে যারা আসবেন তাদের জন্যে কোভিড বিধি মেনে চলারও সব রকম ব্যবস্থা থাকছে৷ যাদের মাস্ক নেই তাদের জন্যে রাখা হচ্ছে নতুন মাস্ক। মন্ডপ যেমন স্যানিটাইজ করা হবে তেমনি দর্শনার্থীদের জন্যও থাকছে স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা।
বেঙ্গালুরুর বিশিষ্ট পশু প্রেমী ও সমাজ সেবী রোজি জানান, মানব ধর্ম সবার আগে। সকলেই তো মায়ের সন্তান। আর এ তো মাতৃপূজা। তাই মায়ের সব সন্তানরাই যাতে এই পুজোয় অংশ নিতে পারে সেদিকে খেয়াল রেখে সবার জন্যে অবাধ প্রবেশ তাঁদের পাল বাড়ির পুজোতে।
ভিন রাজ্যে গিয়েও ঐতিহ্য আর নাড়ির টান ভোলেনি পাল পরিবার। তাই রোজির হাত ধরেই এবার বেঙ্গালুরু প্রত্যক্ষ করবে  দুর্গাপুজোর বনেদিয়ানা।

More from GeneralMore posts in General »
More from InternationalMore posts in International »
More from SocialMore posts in Social »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Mission News Theme by Compete Themes.