সুস্মিতা দাস : কলকাতা, ৩১ জুলাই, ২০২০।। বেত নামটার সাথে আমরা সবাই প্রায় কমবেশি পরিচিত। হ্যাঁ, আমি সেই বেত সম্পর্কে বলছি যে বেত দিয়ে নানা রকম শৌখিন দ্রব্য এবং সাধারণ ছাতার হ্যান্ডেল তৈরি করা হয়। এই বেত গাছের ও ফল হয় আর সেই ফল খাওয়া যায়। আপনাদের অনেকের মতো আমার ও বিস্তারিত জানা ছিল না। আমি যতটা এই ফল সম্পর্কে জানতে পেরেছি সেগুলো আপনাদের সামনে তুলে ধরবার চেষ্টা করছি।
বেতফল সম্পর্কে কিছু তথ্য –
বেতফলের আঞ্চলিক অনেক নাম রয়েছে, যেমন – বেতগুলা, বেতুইন, বেথুন, বেথুল ইত্যাদি। এই ফলের বৈজ্ঞানিক নাম ‘Calamus tenuis’. এছাড়াও আরো অনেক বৈজ্ঞানিক নাম রয়েছে। বেতগাছ এক রকম সপুষ্পক উদ্ভিদ। ক্রান্তীয় ও উপক্রান্তীয় অঞ্চলে বেশি দেখতে পাওয়া যায়। এই গাছ ভেজা ও নিচু জমিতে ভালো জন্মায়।
বেতগাছ চির সবুজ প্রকৃতির এবং কাঁটা ঝোপ আকারে হয়। মজার বিষয় একটি বেতগাছ টানলে সব গাছ নড়ে ওঠে। এদের কান্ড সরু, লম্বা, শক্ত ও কাঁটাময় হয়। প্রতিটি কান্ডের আগা থেকে নতুন পাতা গজায়। কান্ড বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নিচের অংশ শক্ত হতে থাকে।
এই গাছে ফুল আসে অক্টোবর মাসে। ঐ সময় এই ফুল থেকে সুন্দর মিষ্টি গন্ধ বাতাসে ভেসে বেড়ায়। আর এই গন্ধে আকৃষ্ট হয়ে মাছি, মৌ-মাছি, প্রজাপতি ও পিঁপড়েরা ফুলের রস খেতে বেতগাছে ভিড় জমায়। ফল পাকে মার্চ- এপ্রিল মাস নাগাদ। এটি একটি অপ্রচলিত ফল হলেও অনেকেরই প্রিয়। বেতফল ছোট গোলাকার বা একটু লম্বাটে। কাঁচা ফল সবুজ ও পাকলে সবুজাভ ঘিয়ে বা সাদা হয়। এর খোসা শক্ত ধরনের, ভেতরটা নরম রসালো। এই ফলের ভিতরে একটি শক্ত বীজ থাকে। এই ফল থোকায় থোকায় ধরে। একটি থোকায় প্রচুর ফল হয়।
অনেকটা খেজুরের মতো। স্বাদে কষযুক্ত টকমিষ্টি হয়। ভারত তথা বাংলাদেশ, লাওস, থাইল্যান্ড, মায়ানমার, জাভা, সুমাত্রা, ভুটান, ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া প্রভৃতি দেশে এই গাছ হয়ে থাকে।
উপকারিতা –
এখনো বহু গ্রামে এই গাছ দেখতে পাওয়া যায়। বেতগাছ প্রধানত ব্যবহার করা হয় এর বেতের জন্য। বহুকাল ধরে বেত দিয়ে আমরা নানা রকম শৌখিন দ্রব্য তৈরি করি।
এছাড়াও এই গাছে ভেষজ গুণ রয়েছে। বেতগাছের ফল ও মূল নানা রোগে ঔষধ হিসাবে কাজ করে। দাঁতের গোড়া শক্ত করতে, আমাশয় সারাতে,পিত্তশূল দূর করতে,শুক্রবৃদ্ধি করতে, শুক্রতারল্য প্রশমিত করতে সাহায্য করে।
আজ এই খানেই শেষ করছি,আবার আসবো অন্য কোন ফলের তথ্য নিয়ে। সবাই ভালো থাকবেন।
ছবি ~ গুগল থেকে সংগ্রহ করা।
*লেখা ভালো লাগলে কমেন্ট করবেন।
Be First to Comment