Press "Enter" to skip to content

বিড়াল প্রেশার কমায় ও হার্টের জন্যও ভালো, মিনেসোটা স্ট্রোক ইনস্টিটিউটের সমীক্ষা বলছে বিড়াল পুষলে হার্ট এটাকের ঝুঁকি এক-তৃতীয়াংশ কমে…… ৷

Spread the love

ডাঃ দীপালোক বন্দোপাধ্যায় : ৫ জানুয়ারি ২০২১।

” বিড়াল (CAT) “!

” Pussy cat , pussy cat , where have you been?
I’ve been to London to see the Queen .
Pussy cat , pussy cat , what did you do there?
I frightened a little mouse under her chair “.
( ম্যাও পুষি , ম্যাও পুষি ,
গিয়েছিলে কোথায় ?
লন্ডনে গিয়েছিলাম
রাণীর সভায় !
ম্যাও পুষি, ম্যাও পুষি ,
করলে সেথায় কি ?
ছোট্ট এক নেঙটিকে
ভয় পাইয়েছি !)
শৈশবে প্রায় সবার পড়া এই ছড়াটি অনেকের প্রিয় ৷তেমনই অনেকে আমাদের মত যারা ভালোবাসে বিড়াল
পুষতে ৷তাই বোধহয় টম জেরির কার্টুনের বিশ্ব জুড়ে জনপ্রিয়তা ৷ টি এস এলিয়ট ” Old possum’s book of practical cats ” – এ বলেছেন সব বিড়ালের একটা ভালো নাম থাকা উচিত ৷ আমাদের এই ছবির বিড়ালটার নাম ছিল ” পুষা /পুষি” ৷ তারপর পুষেছি “মিনি” আর এখন “পেকু” কে ৷ আমাদের বাড়ীতেই এদের জন্ম ৷ নাম ধরে ডাকলে কিংবা আমরা বাড়ী ঢুকলেই ম্যাও ম্যাও করতে করতে হাজির হয় ৷আমাদের বাড়ীর সবাই বিড়াল প্রেমী ৷ ৮ আগস্ট আন্তর্জাতিক বিড়াল দিবস পালন করি ৷আমাদের বাড়ীর বিড়ালের জন্যও সেদিন ভাল মাছ নিয়ে আসি ৷প্রাণীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশীরকম শব্দ করতে পারে ৷আমরা না পারলেও বিড়াল আল্ট্রাসাউন্ড শুনতে পারে ৷বিড়ালের মস্তিষ্কের গতি অসাধারণ ৷ ২০১৫ সালে তা একটি প্রতিযোগিতায় সুপার কম্পিউটারকে পরাস্ত করে প্রমাণ করেছিল ৷ কুকুর যেখানে মাত্র দশ রকম শব্দ করতে পারে সেখানে বিড়াল পারে ১০০ রকম শব্দ করতে ৷ তবে , মানুষের সাথে যোগাযোগের জন্য মিউ মিউ আওয়াজ করে ৷ বিড়ালরা মানুষের মত ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখে ! একটি বিড়াল তার উচ্চতার প্রায় সাত গুণ লাফাতে পারে ৷ প্রতিটি মানুষের হাতের ছাপ যেমন আলাদা ৷ অর্থাৎ ফিঙ্গার প্রিন্ট দেখে যেকোন মানুষকে চেনা যায় ৷ প্রতিটি বিড়ালের নাকের প্যাটার্ন আলাদা ৷ যা সঠিক বিড়ালকে চিনিয়ে দেয় ৷ একজন বিড়াল প্রেমী হিসাবে দেখেছি অধিকাংশ মিনি বা মেয়ে বিড়াল ডান হাতি ৷ আর ছেলে বিড়ালরা হয় ন্যাটা বা বাঁ হাতি !
” Felinae” গোত্রের ” Felis catus” বাঘের মাসী বললেও সবচেয়ে আদরের মাংসাসী প্রাণী ৷ খ্রিঃপূঃ
সাড়ে সাত হাজার বছর থেকে মানুষ পুষে আসছে ৷ ইঁদুরের হাত থেকে বাঁচতে পাঁচ হাজার বছর আগে থেকে চীনের চাষীরা বিড়াল পুষতেন ৷ ইংরেজি ” cat” শব্দটি এসেছে লাতিন ” catt” থেকে ৷ কুকুর বা অন্য যে কোন প্রাণীর চেয়ে সারা পৃথিবীতে মানুষ বেশী বিড়াল পোষে ৷ চিকিৎসক হিসাবে পড়েছি বিড়াল পুষলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে ৷ এদের সুন্দর মিউ মিউ আওয়াজ হাড় ও পেশীর চিকিৎসায় থেরাপি হিসাবে কাজ করে ৷ আর মিঁউ শব্দ ঘুমতো ভাঙায়ই না বরং গভীর করে ৷ অনেকের ধারনা বিড়াল থেকে এলার্জি হয় ৷ আসলে ঠিক উল্টো বরং এলার্জির ঝুঁকি কমায় ৷ রাগ , উদ্বেগ ও মানসিক চাপ কমায় বলে সাইকোলজির ছাত্র হিসাবে পড়েছি ৷ বিড়াল প্রেশার কমায় ও হার্টের জন্যও ভাল ৷ মিনেসোটা স্ট্রোক ইনস্টিটিউটের সমীক্ষা বলছে বিড়াল পুষলে হার্ট এটাকের ঝুঁকি এক-তৃতীয়াংশ কমে ৷তাহলে তো এটা প্রমাণ হলো বিড়াল অন্য প্রাণীর চেয়ে এলার্জেনিক হওয়া সত্বেও এর ফলে ইমিউন রেসপন্স হার্ট এটাকের উপর এমনটা প্রমাণ হল কি করে ! অনেক বিড়ালের ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স থাকে ৷ তাই , গরুর দুধ পছন্দ করলেও এদের সর তোলা দুধ ছাড়া দিতে নেই ৷ এদের জিভে মিষ্টি স্বাদের রিসেপ্টর না থাকায় এরা মিষ্টি স্বাদ গ্রহণ করতে পারেনা ৷ তবে , লবণাক্ত জল পান করতে পারে ৷বিড়াল স্বাধীন চেতা হলেও একা থাকলে তারা উদ্বেগে থাকে ৷ বাড়ীর অন্যদের আশপাশে আরামে থাকে ৷বিড়াল আমাদের সময় কাটানোর সঙ্গী ৷ যাদের সঙ্গ ব্যায়ামের কাজ করে ৷ বিড়ালের purring এর মাধ্যমে ২০-৪০ hz vibration তৈরী অনেক রোগের উপশম করে ৷ উচ্চ রক্তচাপ ও কোলেস্টেরলের ঝুঁকি কমায় ৷

মানুষকে মানবিক , ধৈর্যশীল ও মহানুভব করে ৷ তাইতো বিড়াল আমাদের কোলে কোলে ঘোরে ৷ শীতে বিছানায় লেপ /কম্বলের তলায় নিয়ে ঘুমাই ৷ একটাই অসুবিধা যতই বিড়াল বলুক মাছ ছোঁবো না হাঁড়ি খাবো না কাশী যাবো ৷ তবু , খেতে পেলেও সে ছুক ছুক করে ৷ চুরিও করে ৷ সে যখন গড়াগড়ি খায় তখন বুঝি সে আমাকে চায় ৷ তখন তার সাথে খেলতে হয় ৷ বিড়াল , কুকুরের মত পোষ্যদের নিয়ে ঘুমালে ঘুম ভালো হয় ৷ পাওয়া যায় নিরাপত্তার আশ্বাস ৷ ব্রিটিশ গবেষকরা বলেছেন সেজন্য অবিবাহিত , একা থাকা মানুষের মধ্যে পোষ্য নিয়ে ঘুমানো বহু গুণ বেড়ে গেছে ৷ যেখানে ইংল্যান্ডে ২০০২ সালে এক ভাগ মানুষ প্রিয় পুষি বা ডগি নিয়ে ঘুমাতেন ৷ ২০১৫ সালে সংখ্যাটা পৌঁছেছে ৫৬ শতাংশে ৷ ভালবেসে নয় ভাল ঘুমের জন্য সেখানকার ৪১ শতাংশ মানুষ পোষ্য নিয়ে ঘুমান ৷ এক বৈজ্ঞানিক গবেষণায় জানা গেছে যাঁরা কুকুর পছন্দ করে পোষেন তাঁরা হন বর্হিমুখী ও বিবেকবান ৷ আর যাঁদের পছন্দ বিড়াল তাঁরা হন রোমাঞ্চকর ও সংবেদনশীল ৷
তবে , মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানলি মেডিক্যাল রির্সাচ ইনস্টিটিউটের একটা গবেষণায় দেখা গেছে বিড়ালের শরীরে “টক্সোপ্লাজমা গন্ডি ” বলে একরকম পরজীবী বাসা বাঁধতে পারে ৷ এই জীবাণু থেকে মানুষের হতে পারে সিজোফ্রেনিয়া ও বাইপোলার ডিসঅর্ভারের মত মানসিক রোগ ৷ বেশির ভাগ বিড়ালের দেহে এই জীবাণু থাকতে পারে ৷ যদিও বিড়াল তার জীবনের ৩০-৫০% সময় নিজেকে পরিষ্কার রাখতে ব্যয় করে ৷ পোষা বিড়াল থেকে শিশু কিশোরদের মধ্যে এই জীবাণু সংক্রমিত হয়ে ঐ রোগ দুটি হতে পারে ৷ শৈশবে বিড়াল পোষার অভ্যাস ছিল এমন ছেলে মেয়েদের পরবর্তীতে মানসিক রোগের ঝুঁকি রয়েছে ৷ তাই পোষা বিড়ালকে আবদ্ধ রাখা ও তাদের পরিচ্ছন্নতায় জোর দিলে ঝুঁকি কমানো যায় ৷ বিড়াল আহ্লাদী , আয়েশি , আদুরে ও ঘুমকাতুরে প্রাণী ৷ অনেকদিন থেকে বাড়ীতে বিড়াল থাকায় আমরা সবাই তাদের ভাষা বুঝি ৷ যখন বিড়াল আনন্দে থাকে তখন তার লেজ স্থির থাকে , কান খাড়া থাকে , চোখের পাতা পুরো বা আধ বন্ধ রাখে ও গায়ের লোম ফুলে না থেকে সমান থাকে ৷ মেঝেতে নখ ঘষে ৷ মনিবের দিকে পিটপিট করে তাকায় এবং শরীরে আলতোভাবে মাথা বা পিঠ ঘষে ৷ ৷ গলায় গরগর আওয়াজ করে ৷ঐ সময় একপাশে কাত হয়ে বা পিছনে হেলান দিয়ে শুয়ে থাকে ৷ কোনো খেলনা বা জিনিস নিয়ে খেলে ৷যেন শিকারে কত ওস্তাদ ! আর যখন পিঠ ও লেজ টানটান করে নিজেকে ফুলিয়ে তোলে তখন বুঝি আমাদের পুষি বা পেকু ভয় পেয়েছে ৷ ভয়ে তারা বাইরে পায়খানা , প্রস্রাব করে ফেলে ৷আবার কাউকে আক্রমণ করার তারা লেজটি সোজা রাখে বা আছড়াতে থাকে ৷ ঐ সময় তাদের থেকে দূরে থাকা উচিত ৷অনেকক্ষণ একটানা বিড়ালের দিকে তাকাতে নেই ৷ তাহলে ওরা ভাবে হুমকি দিচ্ছে ৷ বিড়াল খুব অলস ৷ তিনের দু ভাগ তারা ঘুমিয়ে কাটায় ৷ বিড়াল কোন দূষিত খাবার বা বেশি খেয়ে অস্বস্তি অনুভব করলে ঘাস খেয়ে বমি করে ৷গা চুলকালে ঘাসে গড়াগড়ি দেয় ৷বিড়ালকে ক্রিমির ওষুধ খাওয়ানো উচিত ৷পারলে ট্রাইক্যাট ও রেবিস ভ্যাকসিন দেওয়াতে হয় ৷ মাঝে মাঝে হাল্কা গরম জলে ভেজা ন্যাকড়া দিয়ে বা সাবান মাখিয়ে পরিষ্কার করতে হয় ৷যা আমরা বাড়ীর বিড়ালকে করাই ৷ বিড়ালরা মলমূত্র ত্যাগ করে মাটি বা বালি চাপা দেয় ৷ ফ্লাট বাড়ীতে তাই স্যান্ড বেড বা ঐ পাত্র রাখতে হয় ৷ বিড়ালের কান্না হল একটি শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া ৷ যৌনমিলনের পর এমনটা বেশি হয় ৷ সঙ্গমে পূর্ণ সুখ অনুভব হলেও সহবাসের পর পুরুষ বিড়াল তাদের পুরুষাঙ্গে ছোট ছোট কাঁটার মত অংশ থাকায় সহজে তা বের করতে পারে না ৷ এতে মেনি বিড়ালেরও জরায়ু ও যোনিপথ ক্ষত বিক্ষত হয় ৷ এই সময় বিড়াল কাঁদে ৷বিড়াল ৬০-৭০ দিনের মধ্যে বাচ্চা প্রসব করে ৷খাদ্য না পেলেও এরা কান্নার মত শব্দ করে ৷ তাই এটা অমঙ্গলদায়ক ভাবার কোন কারণ নেই ৷ স্রেফ বেঁচে থাকার শারীরবৃত্তীয় সংগ্রাম ৷বিড়াল সাধারণ ভাবে ১৪-১৬ বছর পর্যন্ত বাঁচতে পারলেও “ক্রিম পাফ” নামের একটি বিড়াল ৩৮ বছর বেঁচেছিল ৷বিখ্যাত গোমড়ামুখী বিড়াল “গ্রাম্পি ক্যাট ” ৷ যার আসল নাম টারডার সস ৷মাদাম তুসোর জা যাদুঘরেও তার মোমের মূর্তি করা আছে ৷ খাবার টেবিলে বসা “স্মাজ ক্যাট ” বিড়ালটির ছবি লাজুক ও আদুরে হিসাবে বিশ্ববিখ্যাত ৷ আমেরিকার “লিটল বব” নামের একটি বিড়ালের ভেংচি কাটার ছবিও সর্বত্র প্রচলিত ৷গিনেস বুকে নাম তোলা ক্যালিফোনিয়ার “নালা ক্যাট” বিড়ালটিকেও অনেকে ছবিতে দেখেছেন ৷পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী বিড়াল খ্যাতি পেয়েছে জাপানী একটি বিড়াল “শিরোনেকো” ৷চীনা সামাজিক মাধ্যম উইবেতে লক্ষ লক্ষ ফলোয়ার আছে “স্নুপি” নামের চীনের সিচুয়ান রাজ্যের চেঙ্দুর বিড়ালটির ৷তুরস্কের ওজকোক হুলিয়ার “গারফি” বিড়ালটি সবচেয়ে রাগী বিড়ালের শিরোপা জিতেছে ৷ যুক্তরাষ্ট্রের সান জোসের “হ্যামিল্টন” বিড়ালটির খ্যাতি তার দীর্ঘ গোঁফ জোড়া ৷ইউটিউবে সবচেয়ে জনপ্রিয় স্কটিশ বিড়াল “মারু” নামের একটি ফোল্ডেড ক্যাট ৷ডেনিশ তালুকাটা বিড়াল ” মন্টি” র ছবি দেখিয়ে শারীরিক অক্ষম বিড়াল প্রতিপালনের প্রচার করা হয় ৷বহু বিখ্যাত ব্যক্তির প্রিয় শখ বা পোষ্য ছিল বিড়াল ৷ যেমন হজরত মহম্মদের “মুযেজ্জা”, মার্ক টোয়েনের “বাম্বিনো” , চার্লস ডিকেন্সের “উইলিয়াম “৷ কবি এডওয়ার্ড লিয়রের “ফস” , সাহিত্যিক এডগার এলান পোর ” ক্যাটরিনা,ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেলের ” মি. বিসমার্ক”, ” ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী চার্চিলের “মার্গেট” ও “নেলসন” , মার্কিন প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকনের “ডিক্সি “,রুজভেল্টের “স্লিপার্স” , অভিকর্ষজ ত্বরণের মত ক্যাট ফ্লাপের আবিষ্কারক আইজাক নিউটন , আবার লিওনার্ডো দ্য ভিঞ্চির বিখ্যাত চিত্রকর্ম “ম্যাডোনা উইথ দ্য ক্যাট “৷ ফ্লোরিডায় রয়েছে আর্নেস্ট হেমিংওয়ের “বিড়াল যাদুঘর “৷বিড়ালের পশমে বিদ্যুতের উপস্থিতি আঁচ করে নিকোলা টেসলা তড়িৎ বিজ্ঞানে যুগান্তকারী আবিষ্কার করেন ৷বিড়ালকে যাঁরা ভয় পান তাঁদের বলা এলুরোফোবিক ৷ বিড়ালে বাড়ীর কারো এলার্জি আছে কিনা দেখে নেওয়া উচিত ৷বিড়ালের লোম থেকে জয় বাংলা বলে পরিচিত চোখের রোগ কনকাংটিভাইটিস ও হাঁপানি হতে পারে ৷ রোগীদের চোখ দেখি বলে আমি জানি খুব কম মানুষের দুই চোখের আইরিশের রঙ দু রঙের হয় ৷ মেলানিনের ভিন্নতা হয়ে ৮- এইচ টি পি পথে কিছু জিনের প্রভাবে এবং ক্রোমোজোমের জন্য এমনটা হলে আমরা চিকিৎসকরা বলি হেটেরোক্রোমিয়া ৷ মানুষের ক্ষেত্রে দুর্লভ হলেও বিড়াল , কুকুর , গবাদি পশুর মধ্যে এটা বেশি হয় ৷বিড়ালের দৃষ্টিশক্তি তীক্ষ্ণ হলেও নাক ও থুতনির নিচে কোন কিছু তারা দেখতে পায় না ৷পুরো শরীর নয় বিড়ালের শুধু থাবার নিচটা ঘামে ৷তাই মাটিতে ঘামের ভেজা ছাপ পড়ে ৷ বিড়াল সূর্যের আলোর দিক বুঝতে পারে ও পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রের ব্যবহার করতে পারে ৷ অনেক দূরে ছেড়ে দিলেও তাই মালিকের বাড়ী চিনতে পারে ৷ বমি , মল ও মূত্র থেকে টাইফায়েডের জীবাণু ঢোকার আশঙ্কা থাকে ৷বিড়াল কামড়ালে বা আঁচড় দিলে রেবিস নামের একরকম আর এনএ ভাইরাসের মাধ্যমে জলাতঙ্ক হতে পারে ৷ এছাড়া বিড়ালের মুখের লালায় প্রচুর ব্যাকটেরিয়া বিশেষত প্যাসট্যুরেলা মাল্টোসিডা নামের একপ্রকার উচ্চ প্যাথজেনিক ব্যাকটেরিয়া থাকে ৷ তাই বিড়ালে কামড় দিলে আক্রান্ত স্থানে ঘা হতে পারে ৷ ফুলে যায় , ব্যথা হয় এমনকি সংক্রমণটি আশপাশের টিস্যুগুলির মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে সেলুলাআটিস বা রক্তের মাধ্যমে শরীরের অন্য স্থানে রক্তপাত , সেপ্টিসিমিয়া , জ্বর ইত্যাদি হতে পারে ৷৷আমি পশু চিকিৎসক নই ৷ তবু , একজন চিকিৎসক ও বিড়াল প্রেমী হিসাবে দেখেছি অসুস্থ হলে তাদের খাদ্য ও জলের প্রতি অনীহা দেখা যায় ৷বিড়াল প্রজাতির প্রাণীদের পূর্বপুরুষ মরু অঞ্চলে থাকত ৷ সেখানে বৃষ্টি কম ৷ এখনও বিড়ালরা তাই জল খুব একটা খায়না ৷ স্নান করতে চায় না ৷ ইষৎ উষ্ণ গরম জলে এদের স্নান করাতে হয় ৷ মলমূত্র ত্যাগ করে ৷ মুখ খুলে শ্বাস নেয় এবং তখন গড়গড় আওয়াজ হয় ৷ খোঁড়াতে থাকে ৷ তখন তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করি ৷ তারা তো শিশুর মতই বাড়ীর একজন ৷ বিড়াল গোত্রের একধরনের প্রাণীকে কফি বীজ খাওয়ানো হয় ৷ তারপর সে মলত্যাগ করলে সেই বীজটি গুঁড়িয়ে তৈরী হয় পৃথিবীর সবচেয়ে দামী কফি ! বিড়াল নিয়ে নানা দেশে হরেক জনশ্রুতি ৷সাদা বিড়ালকে সহ্যশক্তি , সৌভাগ্য ও নিয়ন্ত্রণের প্রতীক ভাবা হয় ৷অনেক জায়গায় বিড়ালকে ধৈর্য্য , কামুকতা , রহস্য , কৌতুহল , স্বাধীনতা ও পুনর্জন্মের সঙ্গে যুক্ত করা হয় ৷কেউ কেউ ভাবে বাড়ীতে সাদা বিড়াল এলে আর্থিক লাভ হয় ৷ ভবিষ্যতে সাফল্য আসে ৷ ভূমধ্য সাগরীয় দেশগুলিতে সাদা বিড়াল পুষলে সন্তানের মঙ্গল ও জীবনে উন্নতি হবে বিশ্বাস করা হয় ৷ আবার কেউ কেউ ভাবে এদের মধ্যে আধ্যাত্মিক ক্ষমতা থাকে ! তবে , কোন কোন দেশে সাদা বিড়ালকে অশুভ ভাবা হয় ৷ যেমন আমাদের দেশে অনেকে কালো বিড়ালকে অশুভ শক্তির প্রতীক ভাবেন ৷ কালো বিড়াল রাস্তা ডিঙ্গিয়ে গেলে পথচারী এমনকি গাড়ীও থেমে যায়৷ পরে পার হয় ৷ এমন সংস্কার বা কুসংস্কার প্রতিটি দেশেই নানা ক্ষেত্রে দেখা যায় ! বিজ্ঞানের এত উন্নতিতেও !

More from GeneralMore posts in General »
More from InternationalMore posts in International »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Mission News Theme by Compete Themes.