Press "Enter" to skip to content

বিমল রায় ১৯৩৫ সালে প্রমথেশ বড়ুয়া পরিচালিত ‘দেবদাস’ ছবিতে ক্যামেরাম্যান ছিলেন। ১৯৪৪ সালে প্রথম পরিচালিত ছবি ‘উদয়ের পথে’………….

Spread the love

————–জন্মদিনে স্মরণঃ বিমল রায়———–

বাবলু ভট্টাচার্য : বি এন সরকারের নিউ থিয়েটার্সে যে সব বিখ্যাত চিত্র- পরিচালকের হাতে খড়ি হয়েছিল, তাঁদের অন্যতম হলেন বিমল রায়। সম্ভ্রান্ত পরিবারের ছেলে বিমল রায় ফটোগ্রাফি ভালোবাসতেন। নিউ থিয়েটার্সে তিনি যোগ দেন ক্যামেরাম্যান হিসেবে। ১৯৩৫ সালে প্রমথেশ বড়ুয়া পরিচালিত ‘দেবদাস’ ছবিতে তিনি ক্যামেরাম্যান ছিলেন। পরে প্রমথেশ বড়ুয়ার ‘মুক্তি’ ছবিতেও ক্যামেরাম্যানের দায়িত্ব পালন করেন বিমল রায়। কিন্তু ইচ্ছে ছিল পরিচালক হবার। সে সুযোগ এলো ১৯৪৪ সালে ‘উদয়ের পথে’ ছবিতে। পরের বছর এই বাংলা ছবিটি হিন্দীতে তোলা হল ‘হামরাহী’ নাম দিয়ে। ছবিটি অসামান্য সাফল্য লাভ করল। নিউ থিয়েটার্স বন্ধ হয়ে যাবার পর বিমল রায় মুম্বাইয়ে হিমাংশু রায়-দেবিকা রাণী প্রতিষ্ঠিত ‘বোম্বে টকিজ’-এ যোগ দেন। সেখানে ‘মা’ ও শরৎচন্দ্রের ‘পরিণীতা’ ছবি করার পর নিজেই একটি ছবির কোম্পানি খোলেন।

‘বিমল রায় প্রডাকশনস’-র প্রথম ছবি ছিল ‘দো বিঘা জমিন’। ইতালির নিওরিয়ালিস্টিক ধাচে তোলা এই ছবি বক্স অফিসে খুব একটা সাফল্য লাভ না করলেও দেশি-বিদেশি চিত্র- সমালোচকদের অকুণ্ঠ প্রশংসা পায়। ১৯৫৩ সালে কান, কার্লোভি ভেরি এবং ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসব থেকে ‘দো বিঘা জমিন’ পুরস্কার লাভ করেছিল।বিমল রায়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় ছবি নিঃসন্দেহে ‘মধুমতী’। ঋত্বিক ঘটকের লেখা কাহিনি, সুরকার ছিলেন সলিল চৌধুরী। নিছক বিনোদনের জন্য এই ছবি- ক্যামেরার কাজ আর সুরের জন্য হিন্দি সিনেমা জগতে চিরস্থায়ী আসন করে নেয়। অনেকের মতে, সুরকার হিসেবে ‘মধুমতী’ই সলিল চৌধুরীর শ্রেষ্ঠ কীর্তি।

তবে বিমল রায়ের মধ্যে সব সময়েই ছিল একটা সমাজ-সচেতনতা। ‘দো বিঘা জমিন’ দিয়ে নিজের প্রডাকশনস শুরু করেছিলেন, ১৯৫৮ সালে ‘মধুমতী’ মুক্তি পাবার পর সেই সচেতনতাই তাকে উদ্বুদ্ধ করল সুবোধ ঘোষের উপন্যাস অবলম্বনে ‘সুজাতা’ চিত্রায়িত করতে। ১৯৫৯ সালে ‘সুজাতা’ মুক্তি পায়। সংবেদনশীল মন নিয়ে বিমল রায়ের সুসংযত পরিচালনা ও নায়িকা নূতনের অপূর্ব অভিনয় ‘সুজাতা’ ছবির সম্পদ। নূতনের অভিনয় প্রতিভাকে তিনি আবার কাজে লাগালেন জরাসন্ধের ‘লৌহকপাট’ উপন্যাস থেকে নেওয়া গল্প ‘বন্দিনী’ ছবিতে। মস্কোয় ১৯৫৯ সালে প্রথম আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের বিমল রায় অন্যতম জুরি ছিলেন। তিনি কিছুকাল ‘ফিল্ম গিল্ড অফ ইন্ডিয়া’র সহকারী সভাপতি এবং ভারতীয় চলচ্চিত্র প্রযোজক সমিতির সভাপতি হয়েছিলেন। বাংলা চলচ্চিত্রের দুর্ভাগ্য যে বিমল রায় বাংলা ছবি আর করলেন না। তবে বাংলা গল্প ও উপন্যাসের স্বাদ তিনি বহু অবাঙালির কাছে পৌঁছে দিয়েছেন হিন্দি ছবির মাধ্যমে।

১৯৬৬ সালে এই বিখ্যাত চলচ্চিত্রকারের মৃত্যু হয়।

বিমল রায় ১৯০৯ সালের আজকের দিনে (১২ জুলাই) কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন।

More from GeneralMore posts in General »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Mission News Theme by Compete Themes.