নিজস্ব প্রতিনিধি : কলকাতা, ২৮ আগস্ট, ২০২৪। বুধবার বিধান শিশু উদ্যানে মহাসমারহে পালিত হল প্রয়াত জননেতা, ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা এবং বিধান শিশু উদ্যানের প্রাণপুরুষ অতুল্য ঘোষের ১২১ তম জন্মদিবস। উদ্যানের কয়েকশো সভ্য-সভ্যা নাচ, গান, আবৃত্তির মাধ্যমে তাদের প্রিয় দাদুকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করল। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে বিশিষ্ট শিল্পী নির্মলেন্দু মণ্ডল প্রদীপ প্রজ্বলনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা করেন। এদিনের অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ড. অমল কুমার মল্লিক। উপস্থিত ছিলেন ড. দেবপ্রসন্ন সিংহ।
‘অতুল্য ঘোষ স্মৃতি সম্মান ২০২৪’ প্রদান করা হয় বিশিষ্ট ভাওয়াইয়া সঙ্গীত শিল্পী শ্রীমতী গীতা রায় বর্মন এবং বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক শ্রী ঝণ্টু বড়াইক মহাশয়কে।
‘অতুল্য ঘোষ স্মৃতি পুরস্কার ২০২৪’ বিশেষ সম্মাননা পুরস্কার দেওয়া হয় ১০টি বিদ্যালয়কে। পুরস্কার প্রাপকদের তালিকায় ছিল লবণহ্রদ বিদ্যাপীঠ, বিধাননগর মিউনিসিপ্যাল স্কুল, দ্য স্কটিশ চার্চ কলেজিয়েট স্কুল, প্রফুল্ল প্রতাপ বিদ্যায়তন, রামকৃষ্ণ সারদা মিশন সিস্টার নিবেদিতা গার্লস স্কুল, ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী ইন্সটিটিউশন, কৃষ্ণপুর আদর্শ বিদ্যামন্দির, লেকটাউন গভর্নমেন্ট স্পনসর্ড গার্লস হাইস্কুল, শুঁড়া কন্যা বিদ্যালয় (গভঃ স্পনসর্ড), উল্টোডাঙা গভঃ স্পনসর্ড এইচ এস স্কুল ফর গার্লস।
অতিথিদের ভাষণে অতুল্য ঘোষ সম্পর্কে বিভিন্ন অজানা তথ্য জানা যায়।
দীর্ঘ পাঁচ বছর জাতীয় কংগ্রেসের কোষাধ্যক্ষ ছিলেন। এছাড়াও কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য হিসেবে প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু সর্বভারতীয় কংগ্রেসের সভাপতি কামরাজ নাদার, লালবাহাদুর শাস্ত্রী, মোরারজী দেশাই, এস নিজলিঙ্গপ্পা, বাবু জগজীবন রাম সহ বহু জননেতাদের সঙ্গে দেশের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে বিশেষ ভূমিকা নিয়েছিলেন। এছাড়াও পশ্চিমবাংলা সহ গোটা উত্তর-পূর্ব ভারতের দায়িত্ব ছিল অতুল্য ঘোষের কাঁধে। এজন্য অনেকেই তাঁকে ‘বঙ্গেশ্বর’ বলতেন।
ডা. বি. সি. রায় মেমোরিয়াল কমিটির সম্পাদক শ্রী গৌতম তালুকদার উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, বাঙালির দুর্ভাগ্য মানুষ হিসেবে অতুল্য ঘোষকে চিনতে আমরা ভুল করেছিলাম। স্বাধীনতা সংগ্রামে ইংরেজ পুলিশের অত্যাচারে তাঁর একটি চোখ চিরতরে নষ্ট হয়ে গিয়েছিল কিন্তু তাঁর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা তাঁকে ‘কানা অতুল্য’, ‘কানা বেগুন’ ইত্যাদি বলে আখ্যা দিতে ও কুণ্ঠাবোধ করেনি। যদিও তিনি কখনও এসবের বিরুদ্ধে একটি কটু কথাও বলেননি। এখানেই তাঁর মহত্ব। এখানেই তিনি সৌজন্যের প্রতীক। ১৯৫৪ সালের ২৮ আগস্ট ৮৩ বি, কারবালা ট্যাঙ্ক লেনের ভাড়া বাড়িতে তাঁর জন্মদিনে ছাত্র পরিষদ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। পণ্ডিত জওহরলাল নেহরু ছাত্রদের রাজনীতির অঙ্গনে আনার আপত্তি করেছিলেন। কিন্তু অতুল্য ঘোষ বিশ্বাস করতেন পশ্চিমবাংলায় বামপন্থী আন্দোলনের বিরুদ্ধে লড়তে হলে ছাত্রাবস্থা থেকেই তাদের জাতীয়তাবোধের পাঠ দিতে হবে। প্রথাগত শিক্ষা তাঁর ছিল না কিন্তু ইংরেজি সাহিত্যে ছিল তাঁর অসাধারণ পাণ্ডিত্য। অত্যন্ত সহজ সরল ভাষায় খানিকটা আত্মজীবনীমূলক লেখা ‘কষ্টকল্পিত’ পড়ে বহু বিদগ্ধ মানুষ একজন সাহিত্যিককে খুঁজে পেয়েছিলেন। একটা সময় রাজনীতি থেকে অবসর গ্রহণ করে বাংলার রূপকার ডা. বিধান চন্দ্র রায়ের স্মৃতিতে তৈরি করলেন একটি শিশু হাসপাতাল। পরবর্তীকালে তাঁরই হাত ধরে উল্টোডাঙায় নির্মিত হল শিশুদের স্বর্গরাজ্য বিধান শিশু উদ্যান। যেখানে দাঁড়িয়ে আমরা তাঁর ১২১ তম জন্মদিনে তাঁকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি।
অনুষ্ঠান শেষে সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ডা. বি. সি. রায় মেমোরিয়াল কমিটির সহ-সম্পাদক সঞ্জীব দত্ত মহাশয়। এরপর বিধান কয়্যার ও বিধান শিশু উদ্যানের কয়েকশত শিশু-কিশোর নাচ, গান, আবৃত্তি সহ যোগাসন, অ্যাথলেটিকস, তাইকুণ্ড ইত্যাদি বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তারা তাঁদের প্রিয় দাদুর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং এর মধ্য দিয়ে এদিনের অনুষ্ঠানের পরিসমাপ্তি ঘটে।
বিধান শিশু উদ্যানে সাড়ম্বরে পালিত হল অতুল্য ঘোষের ১২১তম জন্মদিন….।
More from GeneralMore posts in General »
- Campbell excited to be a part of Tata Steel World 25K Kolkata can’t wait for Sunday….
- গীতা জয়ন্তিতে গ্রামীন মহিলাদের সমবেত আরতি মন্মথপুরে….
- GO Everywhere Tours and Travels Celebrates 6th Anniversary with actor Anirban Bhattacharya Event at The Astor Hotel….
- State-of-the-Art Credmont International School Prepares to Open in Kolkata….
- ‘গ্লোবাল হিউম্যান রাইটস প্রটেকশান’ পুরষ্কারে ভূষিত হলেন কলকাতার বরুন কুমার দাশ….।
- ধানের উৎপাদন বাড়াতে এবার বর্ষাতেও চাষ হবে মিনিকিট চাল…..।….
Be First to Comment