Press "Enter" to skip to content

বাঘা যতীন কোনো অস্ত্রের সাহায্য ছাড়াই খালি হাতে বাঘ হত্যা করার পর তাকে ‘বাঘা যতীন’ নামে অভিহিত করা হয় বলে কথিত আছে……….

Spread the love

স্মরণঃ বাঘা যতীন (যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়)

বাবলু ভট্টাচার্য : বিপ্লবী ও ভারতে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের একজন সক্রিয় কর্মী। তাঁর প্রকৃত নাম যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়। এ ব্রিটিশবিরোধী বিপ্লবী নেতা ‘বাঘা যতীন’ নামেই সবার কাছে সমধিক পরিচিত। কেন এ ধরনের নামকরণ? তিনি কোনো অস্ত্রের সাহায্য ছাড়াই খালি হাতে বাঘ হত্যা করার পর তাকে ‘বাঘা যতীন’ নামে অভিহিত করা হয় বলে কথিত। অবশ্যই বাস্তবে তিনি ছিলেন ব্রিটিশ তাড়ানিয়া বাঘ। বাঘা যতীন ছিলেন বাংলার প্রধান বিপ্লবী সংগঠন ‘যুগান্তর’ দলের প্রধান নেতা। বাঘা যতীন ১৮৭৯ সালের ৭ সেপ্টেম্বর কুষ্টিয়া জেলার কয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম উমেশচন্দ্র মুখোপাধ্যায় এবং মায়ের নাম শরৎশশী। ঝিনাইদহ জেলায় পৈতৃক বাড়িতে তার ছেলেবেলা কাটে। পাঁচ বছর বয়সে বাবার মৃত্যু হলে মা এবং বড় বোন বিনোদবালার সঙ্গে তিনি মাতামহের বাড়ি কয়া গ্রামে চলে যান। যতীন শৈশব থেকেই শারীরিক শক্তির জন্য বিখ্যাত ছিলেন। যতীনের মা বিধবা শরৎশশী দেবী ছিলেন স্বভাবকবি। পরোপকারী, সত্যনিষ্ঠ, নির্ভীক চিন্তায় ও কর্মে অভ্যস্ত যতীন পড়াশোনা এবং খেলাধুলার পাশাপাশি কৌতুকপ্রিয়তার জন্যও সমাদৃত ছিলেন। ১৮৯৫ সালে এন্ট্রান্স পাস করে তিনি কলকাতা সেন্ট্রাল কলেজে (বর্তমানের ক্ষুদিরাম বোস সেন্ট্রাল কলেজ) ভর্তি হন। এখানে বিবেকানন্দের সংস্পর্শে এসে তিনি দেশের স্বাধীনতার জন্য আধ্যাত্মিক বিকাশের কথা ভাবতে শুরু করেন। যতীনকে হাওড়া-শিবপুর ষড়যন্ত্র মামলায় গ্রেফতার করা হয় এবং তার সঙ্গে অন্য যারা গ্রেফতার হন তাদের ‘যতীন গ্যাং’ নামে অভিহিত করা হয়। সাক্ষ্য-প্রমাণের অভাবে যতীন এ মামলা থেকে মুক্তি পান। জেলে থাকা অবস্থায় যতীন এবং নরেন সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের এক দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। পাশাপাশি বহির্বিশ্বে বিশেষ করে জার্মানির সশস্ত্র ও আর্থিক সহায়তা পাওয়ার প্রচেষ্টা চালান। তারা দেশপ্রেমিক বিভিন্ন দলকে ঐক্যবদ্ধ করার পরিকল্পনা করেন এবং এ উদ্দেশ্যে নরেন সন্ন্যাসীরূপে ব্যাপকভাবে সারা ভারত ভ্রমণ করে বাংলাসহ বিভিন্ন এলাকার বিপ্লবীদের সংগঠিত করেন। শুধু তাই নয়, ভারতবর্ষের বাইরেও বিপ্লবীদের সংগঠিত করার প্রচেষ্টা গ্রহণ করা হয়। এরই মধ্যে যতীনকে বিপ্লবী দলগুলোর কমান্ডার ইন চিফ করা হয়। এদিকে যতীনকে উড়িষ্যার বালেশ্বরে গুপ্ত অবস্থায় রেখে এমএন রায় বাটাভিয়া যান জার্মান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে জাহাজে অস্ত্র প্রেরণ ও অর্থনৈতিক সাহায্য বিষয়ে আলোচনা করতে। এরই মধ্যে পুলিশ ধানক্ষেতে যতীনের গুপ্ত আশ্রয়ের সন্ধান পায়। ১৯১৫ সালের ৯ সেপ্টেম্বর পুলিশের সঙ্গে তাদের ব্যাপক গুলিবিনিময় হয়। তাতে শহীদ হন বিপ্লবী বাঘা যতীন।

যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় ১৯১৫ সালের আজকের দিনে (১০ সেপ্টেম্বর) ওড়িষ্যার বুড়িবালামের তীরে মৃত্যুবরণ করেন।

More from GeneralMore posts in General »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Mission News Theme by Compete Themes.