আজ ‘উনিশে এপ্রিল’
বাবলু ভট্টাচার্য : ‘উনিশে এপ্রিল’ একটি চলচ্চিত্রের নাম। ১৯৯৪ সালের মার্চে ঋতুপর্ণ ঘোষের এই চলচ্চিত্রটি মুক্তি পেয়েছিল। শুরু হয়েছিল সত্যজিৎ রায়, মৃণাল সেন, তপন সিনহা, তরুণ মজুমদারের পরবর্তী যুগ।
বাংলা ছায়াছবির আবার নবজাগরণের সূচনা এই ‘১৯ শে এপ্রিল’-এর হাত ধরেই।
‘১৯ শে এপ্রিল’ ঋতুপর্ণ ঘোষের দ্বিতীয় ছবি। তার প্রথম ছবির নাম ছিল ‘হিরের আঙটি’ (এটি একটি শিশুতোষ চলচ্চিত্র)। অনেকে তাই ‘১৯শে এপ্রিল’কেই ঋতুর প্রথম ছবি হিসেবে জানে।
নাচ-গান না রেখেও, আউটডোর শ্যুট না করেও যে একটি সফল বাণিজ্যিক ছবি করা যেতে পারে- সেটাই যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছিলেন পরিচালক ঋতুপর্ণ ঘোষ।
খ্যাতিমান এক নৃত্যশিল্পী উচ্চ পর্যায়ের একটি সম্মাননা পেলেন। সদ্য ডাক্তারি পাশ করে মেয়ে ফিরলো মায়ের কাছে। মা-মেয়ের সুখের আলাপন আর আনন্দ অশ্রুতে মুখর হওয়ার বদলে উস্কে উঠতে শুরু করলো দ্বন্দ্বের আগুন। দু’জনের মনের আকাশে দীর্ঘদিন ধরে জমতে থাকা মেঘ যেন কালবৈশাখীর রূপ পেতে চাইলো। এটাই ছিল ঋতুপর্ণর ‘১৯শে এপ্রিল’ চলচ্চিত্রের ইতিহাস।
মা, সরোজিনী ও মেয়ে অদিতির ভূমিকায় অপর্ণা সেন ও দেবশ্রী রায় ছিলেন অনবদ্য। স্বার্থপর ও হৃদয়হীন প্রেমিকের চরিত্রে প্রসেনজিৎ ছিলেন পুরোপুরি মানানসই। দীপংকর দে এবং চিত্রা সেনের অভিনয় ছিল বাস্তবানুগ। ছবিটির সংগীত পরিচালক ছিলেন জ্যোতিষ্ক দাশগুপ্ত। চিত্রগ্রাহক সুনীষ্মল মজুমদার।
‘উনিশে এপ্রিল’ ১৯৯৫ সালে ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার আসরে সেরা ছবি হিসেবে স্বর্ণকমল জয় করে। সেরা অভিনেত্রী হিসেবে দেবশ্রী রায় রৌপ্যকমল জয় করেন।
অসাধারণ পরিচালনা ও অনবদ্য অভিনয়ে বাংলা ভাষার চলচ্চিত্র ধারায় ক্ল্যাসিক হিসেবে স্থান করে নিয়েছে ‘উনিশে এপ্রিল’। এই ছবির হাত ধরেই পরিচালক ঋতুপর্ণ হয়ে উঠলেন দর্শকদের নয়নেরমনি। ঋতুপর্ণ চিরতরে চলে গেলেও রয়ে গেল তার অমর সৃষ্টি।
Be First to Comment