Press "Enter" to skip to content

“বাংলায় প্রশ্ন করার কি দরকার”? এটাই হচ্ছে হট টপিকস,আসল ঘটনা না জেনে প্রচুর ট্রোলিং হয়েছেন বাংলার জনপ্রিয় নায়ক….।

Spread the love

সুদীপা চৌধুরী : মেদিনীপুর, ১১ জুলাই, ২০২৫। আমরা কত তাড়াতাড়ি জাজমেন্টাল হয়ে পড়ি , তাই না?? গত কয়েকদিন ধরেই একটি পোস্ট ঘুরে বেড়াচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। এই বাংলার বিশিষ্ট অভিনেতা প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় মুম্বাইয়ে একটি সর্বভারতীয় সিনেমার সাংবাদিক সম্মেলনে এক সংবাদিক কে বলেছেন এখানে “বাংলায় প্রশ্ন করার কি দরকার”? এটাই হচ্ছে হট টপিকস, প্রচুর ট্রোলিং হয়েছেন এই অভিনেতা এই কথা বলার পর। অবশেষে তিনি নিজেও মুখ খুলেছেন এই বিতর্কের অবসান ঘটানোর জন্য। মুম্বাই শহরে বেশিরভাগ মানুষ হিন্দিটাই বোঝেন, যেহেতু সাংবাদিক সম্মেলন ওখানে হচ্ছে, ওখানকার মানুষ কে কিন্তু বোঝাতে হবে কথাগুলো সে ক্ষেত্রে উনি বাংলাটা বললে বাকিরা তো হাঁ করে চেয়ে থাকবে। আর এই চিন্তা ধারা নিয়ে যদি বাংলার মানুষ থাকে তাহলে তো বাংলার মানুষের বিদেশে গিয়েও বাংলায় কথা বলা উচিত সবার সাথে।
একটা কথা বলি অন্য রাজ্যে গিয়ে কেউ বাংলা বলছে কিনা আমরা এটা নিয়ে কি মাথা ব্যথা করছি! আবার কারা মাথা ব্যথা করছি, যাদের ওনার সমান পারদর্শিতা দক্ষতা যোগ্যতা খ্যাতি এগুলো কোনটাই নেই। যদিও এগুলো থাকলে একজন মানুষকে সঠিক মানুষ বলা যায় না। কিন্তু ওনার কর্ম ক্ষেত্রে উনি সাফল্যের চূড়ায় বসে আছেন এটা অস্বীকার করার কোনো জায়গা নেই। একবারও কি ভেবে দেখেছি আমাদের নিজেদের রাজ্যে আমরা প্রত্যেকেই দিনরাত প্রতিটি মুহূর্তে শুধু হিন্দি কেন ইংরেজিতেও অনেক কথা বলি। ফেসবুক দিয়েই প্রথম শুরু করি, সকালে ফেসবুক খুললেই ‘Good Morning’ এর ঝড় বয়ে যায় তুলনায় ‘শুভ সকাল’ টা কিন্তু অনেক কম থাকে। চোখ খুলেই হাতে যেটা নেওয়া হয় সবাই ‘মোবাইল’ বলেই সেটাকে সম্বোধন করি, এটিও একটি ইংরেজি শব্দ, তারপর প্রয়োজন পড়ে নিউজ পেপারের , তখন কিন্তু খবরের কাগজ খুব কম বলি, বড়োজোর পেপারটা কোথায়? এরকম কথাই বলি। বাজারে গেলে বাজারের ব্যাগ ব্যাগটা কিন্তু ইংরেজি শব্দ থলি কিন্তু খুব কম বলি বা বলিই না। ঘরে কি কেউ চেয়ার কে কেদারা বা গ্লাসের বাংলা করে কথা বলি। টিভি দেখছি হোয়াটসঅ্যাপ করছি ফেসবুক দেখছি এমনি হাজারো উদাহরণ সারাটা দিন চলতে থাকে ইংরেজি শব্দের ব্যবহার করেই। তখন বাংলা ভাষার অপমান হয় না? শুধু অন্য কেউ বোঝার সুবিধার্থে যদি অন্য রাজ্যে গিয়ে বাংলা ভাষায় কথা না বলে তখনই আমরা তাকে বাংলা ভাষার অপমান হয়েছে তথা মাতৃভাষার অপমান করেছে বলতে এক সেকেন্ডও সময় নি না।
আমারা আসলে সত্যিই মাতৃভাষার অপমান নিয়ে কথা বলি না, শুধু মানুষটাকে সমালোচনার দৃষ্টিতে মানুষটার কি ভুল সেটাই খুঁজে বার করার চেষ্টা করি। বিশেষ করে যারা একটু বা বেশ উচ্চপর্যায়ে পৌঁছে যায় আমরা সর্বদাই চেষ্টা করি তাদেরকে কি করে টেনে নিচে নামানো যায়।

প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় এর খোলা চিঠি।

প্রত্যেকের কাছেই তার ভাষা তার মাতৃভাষা যথেষ্ট সম্মানের যথেষ্ট আদরের কিন্তু প্রয়োজনে তো আমরা সবাই অন্য ভাষা ব্যবহার করি তখন যদি কোন ভুল না হয়ে থাকে তাহলে শুধু শুধু এই একটা অহেতুক ব্যাপার নিয়ে এতো জটিলতা কেন সৃষ্টি করি। মানুষের জীবনে তো আরো অনেক কাজ আছে ,সেগুলো নিয়ে চিন্তাভাবনা কেন করি না। আমিও কিন্তু এই ঘটনা নিয়ে যারা সমালোচনা করেছেন, তাদের সমালোচনা করছি না আমি বিষয়টার প্রতিবাদ করছি। আমরা তো রোজ নিজের রাজ্যে নিজের ঘরেই অন্য ভাষার ব্যবহার করি সে ক্ষেত্রে উনি যদি মুম্বাইয়ে গিয়ে হিন্দিতে কথা বলতে বলেন সাংবাদিকদের তাহলে মাতৃভাষার অপমানটা কি করে হয়? আসলে কিছু মানুষের কাছে না কাজ খুব কম, মানে ভাল কাজ করার ইচ্ছা খুব কম তাই জন্য কি করে সর্বদা অন্যের দোষত্রুটি খুঁজে বের করব এই নিয়ে চিন্তাভাবনা করতে থাকে। যারা সমালোচনা করেন, দুদিন পর আবার তারা অন্যের পেছনে লাগার চেষ্টা করেন আসলে এই ধরনের কিছু মানুষ থাকে, তারা নিজেদের ভুল ত্রুটিগুলো এক্কেবারে দেখতে পায় না কিন্তু অন্যেরটা না থাকলেও খুঁজে বের করার চেষ্টা করে। মাতৃভাষার অপমান তখন হয় না যখন আমরা ফোন এলেই ‘হ্যালো’ বলি। আসল সত্যি কথা হচ্ছে আমরা বাঙালিরা না একে অপরকে কাঠি করতে খুব ভালোবাসি, যেটা অন্যান্যরা করেন বলে আমার মনে হয় না।

More from CinemaMore posts in Cinema »
More from EntertainmentMore posts in Entertainment »
More from InternationalMore posts in International »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Mission News Theme by Compete Themes.