স্মরণঃ আ য়ে শা আ খ তা র
বাবলু ভট্টাচার্য : বাংলাদেশের নাট্যজগতের ৫০ দশকের সুপরিচিত ও জনপ্রিয় নাট্যাভিনেত্রী ছিলেন আয়েশা আখতার।
মঞ্চনাটকের মাধ্যমে অভিনয় জগতে প্রবেশ করেন তিনি। তখনকার সময়ে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, টংগী, জয়দেবপুর’সহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় বহু মঞ্চ নাটকে অভিনয় করেছেন।
তৎকালীন পাকিস্তান আমলে, রেডিও পাকিস্তান ঢাকা কেন্দ্র থেকে প্রচারিত অত্যান্ত জনপ্রিয় অনুষ্ঠান ‘বুনিয়াদি গণতন্ত্রের আসর’ (বাংলাদেশের স্বাধীনতাপর সম্ভবত নাম ছিল ‘আমার দেশ’)-এ ‘মজিদের মা’ নামক মূখ্য চরিত্রে অভিনয় করে, জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌছেছিলেন আয়েশা আখতার।
আয়েশা আখতার ১৯৩১ সালের ১ জানুয়ারী নরসিংদী জেলার মনোহরদী থানার চকতাতারদী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৪৫ সালে এসএসসি পাস করে, জিটি ট্রেনিং লাভ করেন তিনি। প্রথমে ঢাকা মিউনিসিপ্যালিটির কয়েকটি প্রাইমারি স্কুলে শিক্ষকতা করেন।
জনপ্রিয় গুণী অভিনেত্রী আয়েশা আখতার মমতাময়ী মায়ের চরিত্রে অসংখ্য চলচ্চিত্রে দাপটের সাথে অভিনয় করেছেন। একজন স্নেহময়ী জননী হিসেবে চলচ্চিত্রের পর্দায় আয়েশা আখতার আজও জীবন্ত। আদর্শ মায়ের চরিত্রে যে সাবলীল অভিনয় দক্ষতা তিনি দেখিয়েছেন, দর্শক-শ্রোতাদের আবেগে আপ্লুত করেছেন, তা অত্যন্ত বিরল।
জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী বহু চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন নাটকে অভিনয় করেছেন। আয়েশা আখতার অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রসমূহ- ‘আসিয়া’, ‘লালন ফকির’, ‘ঝড়ের পাখি’, ‘সংগ্রাম’, ‘জানোয়ার’, ‘ওয়াদা’, ‘নয়নমনি’, ‘অমর প্রেম’, ‘তুফান’, ‘অলংকার’, ‘দিন যায় কথা থাকে’, ‘জীবন নৌকা’, ‘মানসী’, ‘সওদাগর’, ‘দুই পয়সার আলতা’, ‘আলী আসমা’, ‘নতুন বউ’, ‘জাদু মহল’, ‘জীবন ধারা’।
এছাড়া তিনি আরও অভিনয় করেন- ‘মায়ের দোয়া’, ‘ভাই ভাই’, ‘সেলিম জাভেদ’, ‘রাজা সাহেব’, ‘ভাঙ্গাগড়া’, ‘স্বামীর ঘর’, ‘অনুরাগ’, ‘মাটির ঘর’, ‘সুলতানা ডাকু’, ‘সাক্ষী’, ‘জন্ম থেকে জ্বলছি’, ‘ভাঙাগড়া’, ‘স্বামীর ঘর’, ‘গাঁয়ের ছেলে’, ‘ভাগ্যলিপি’, ‘নতুন বউ’, ‘রজনীগন্ধা’, ‘বৌমা’, ‘এই নিয়ে সংসার’, ‘নরম গরম’, ‘নদীর নাম মধুমতী’ উল্লেখযোগ্য।
আয়েশা আখতার ১৯৮২ সালে ‘রজনীগন্ধা’ চলচ্চিত্রে পার্শ্ব চরিত্রে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।
অভিনেত্রী আয়েশা আখতার ২০০৩ সালের আজকের দিনে (২৮ ফেব্রুয়ারি) ৭২ বছর বয়সে ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।
Be First to Comment