Press "Enter" to skip to content

বহুমুখী প্রতিভার অনন্যসাধারণ অধিকারী জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ছিলেন স্ত্রী- স্বাধীনতার প্রবক্তা, অশ্বারোহী, বহুভাষাবিদ্‌, সার্থক নাট্যকার…..।

Spread the love

জন্মদিনে স্মরণঃ জ্যো তি রি ন্দ্র না থ ঠা কু র

বাবলু ভট্টাচার্য : ভারতের নবজাগরণে জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়ীর অপরিমেয় অবদান ঐতিহাসিক সত্য। প্রিন্স দ্বারকানাথ থেকে আরম্ভ করে সৌম্যেন্দ্রনাথ পর্যন্ত এই পরিবারে মনীষার ধারা ছিল অব্যাহত। এমনই এক স্বল্প-আলোচিত অথচ অসাধারণ মনীষী জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর।

বহুমুখী প্রতিভার অনন্যসাধারণ অধিকারী জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ছিলেন স্ত্রী- স্বাধীনতার প্রবক্তা, অশ্বারোহী, বহুভাষাবিদ্‌, সার্থক নাট্যকার, সফল অনুবাদক, আদর্শ জমিদার, নিপুণ চিত্রশিল্পী, অভিনেতা, গীতিকার, সুরশিল্পী, দেশপ্রেমিক, ধর্মনেতা, দার্শনিক, স্বদেশী শিল্প ও দেশীয় বাণিজ্যের পথিকৃৎ, কল্পনা ও উদ্ভাবনাশক্তির অনন্য সাধারণ অধিকারী এমন বিস্ময়কর চরিত্র।

জ্যোতিরিন্দ্রনাথ, দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের পঞ্চম পুত্র। রবীন্দ্রনাথ তাঁর থেকে বারো বছরের ছোট ছিলেন। ছোটভাই রবি’র প্রতিভার বিকাশে তিনি বিশেষ ভূমিকা পালন করেছিলেন।

রবীন্দ্রনাথের ‘জ্যোতিদাদা’ ১৮৬৪ সালে হিন্দু স্কুল থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এরপর প্রেসিডেন্সি কলেজে ফার্স্ট আর্টস পড়ার সময় থিয়েটারে আকৃষ্ট হয়ে পড়াশোনা ছেড়ে দেন। ছাত্রাবস্থাতেই নাটকের প্রতি আকৃষ্ট হন। ১৮৭৪ সালে স্থাপন করেন ‘বিদ্বজন সমাগম’ নামে সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান। বিভিন্ন ভাষার বই, বিশেষ করে নাটক তিনি বাংলা ভাষায় অনুবাদ করেন।

তিনি পিয়ানো, হারমনিয়ম, ভায়োলিন ও সেতার বাজাতে দক্ষ ছিলেন। ঠাকুরবাড়ির সঙ্গীত বিপ্লবে মূল ভূমিকা ছিল জ্যোতিরিন্দ্রনাথের। তিনি ১৮৭৯ সালে ‘বিনাবাদিনী’ নামে সঙ্গীত বিষয়ক ম্যাগাজিন চালু করেন যা বাংলা ভাষায় প্রকাশিত প্রথম ম্যাগাজিনগুলোর মধ্যে অন্যতম। তিনি ১৮৯৭ সালে ‘ভারতীয় সঙ্গীত সমাজ’ প্রতিষ্ঠা করেন। অঙ্কন ও স্কেচ করার দিকে তিনি আগ্রহী ছিলেন।

১৮৬৯-১৮৮৮ সাল পর্যন্ত তিনি আদি ব্রাহ্ম-সমাজের সম্পাদক ছিলেন। তাঁর রচিত নাটকগুলি হল– ‘পুরবিক্রম’, ‘সরোজিনী’, ‘অশ্রুমতি’, ‘স্বপ্নময়ী’, ‘কিঞ্চিত জলযোগ’, ‘হঠাৎ নবাব’ এবং ‘অলীকবাবু’। অলীকবাবু নাটকে বিধবা বিবাহের সামাজিক পরিস্থিতি ফুটে উঠেছে।

জ্যোতিরিন্দ্রনাথের সঙ্গে কাদম্বিনী দেবীর বিবাহ হয় ১৮৬৮ সালের ৫ জুন। তাঁর বিবাহিত জীবন সুখের হয়নি। ১৮৮৪ সালের ১৯ এপ্রিল কাদম্বিনী দেবী আত্মহত্যা করেন। স্ত্রী’র মৃত্যুর পর জ্যোতিরিন্দ্রনাথ নিজেকে গুটিয়ে নেন। কলকাতা ছেড়ে চলে যান রাঁচি। নির্জনবাসে বাকি জীবন কাটিয়ে দেন।

লোকচক্ষুর অন্তরালে এই প্রতিভাদীপ্ত পুরুষ পরলোক গমন করেন‌ ১৯২৫ সালের ৪ মার্চ রাঁচিতে।

জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৮৪৯ সালের আজকের দিনে (৪ মে) জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন।

More from CultureMore posts in Culture »
More from InternationalMore posts in International »
More from MusicMore posts in Music »
More from Theater/DramaMore posts in Theater/Drama »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Mission News Theme by Compete Themes.