গোপাল দেবনাথ : কলকাতা, ৮ জুলাই, ২০২০। আমাদের দেশের আমজনতার ক্লাব বা সমিতির কথা শুনলেই তাদের মনে হয় ওটা একটা আনন্দ ফুর্তির জায়গা। সত্যি কি তাই! আমাদের রাজ্য তথা শহর কলকাতায় ক্লাব বা সমিতির কোনো অভাব নেই, কিন্তু সব ক্লাব বা সমিতি যে সারাবছর ধরে সেবামূলক কাজ করে তা কিন্তু নয়। এমনই এক সমিতি আছে উত্তর কলকাতায় যে সমিতি করোনা মহামারীর লকডাউনের সময়ে দিনের পর দিন শয়ে শয়ে দুঃস্থ মানুষের মুখে অন্ন তুলে দিয়েছে। এছাড়াও গত ২০মে ঘূর্ণিঝড় আমফানে ক্ষতিগ্রস্ত সুন্দরবন এলাকার মানুষের হাতে ত্রাণ তুলে দিয়েছে। ১৯২৮ সালে স্থাপিত উত্তর কলকাতার আমহার্স্ট স্ট্রীট থানা সংলগ্ন “মিলন সমিতি ক্লাব” (হৃষিকেশ পার্ক) কেবলমাত্র একটি সাধারণ ক্লাব নয়।
এই সমিতি ক্লাব তার বাইরে আরও অনেক কিছু। একদিকে ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগর মহাশয়ের বাসস্থান অন্যদিকে রাজা রামমোহন রায়ের। ক্লাবের জন্মলগ্ন থেকেই চলেছে নানা সমাজসেবামূলক কাজ। কখনো দুঃস্থদের ত্রাণ কখনো বা প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে আক্রান্তদের পাশে দাঁড়ানো। এই সব কথা জানালেন মিলন সমিতি ক্লাবের সম্পাদক উমাপতি দত্ত। তিনি আরও জানালেন আমরা উল্লিখিত সেবামূলক কাজ করে আত্মতুষ্টি তে ভুগতে চাই না, আমরা আগামী ১৯শে জুলাই, (রবিবার) আয়োজন করেছি ‘রক্তদান শিবিরের’। উদ্দেশ্য, এই দানে প্রাপ্ত রক্ত ব্যবহৃত হবে থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত মানুষদের জন্য, দুর্ঘটনায় আহত আর্ত মানুষের সেবায় এবং গর্ভবতী মায়েদের জন্য। আমাদের এই রক্তদান অনুষ্ঠিত হবে আমাদেরই ক্লাবের মাঠে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ৩ টা অবধি। যদি কোনো সহৃদয় মানুষ স্বেচ্ছা রক্তদানে সামিল হতে ইচ্ছা প্রকাশ করেন তাহলে নিমলিখিত নম্বরে (নাম রেজিস্ট্রেশন করতে পারেন 09836224907)। আমাদের এই মহতী উদ্যোগে মিলন সমিতির সঙ্গী হয়েছে সেন্ট পলস স্কুলের ১৯৮০ সালের ছাত্ররা। গত মাসে ও আমাদের সঙ্গী হয়েছিলেন সেন্ট পলস স্কুলের ১৯৮০ সালের ব্যাচের ছাত্ররা। গিয়েছিলেন ত্রাণ নিয়ে গঙ্গা সাগরস্থিত রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রম, মনসাদ্বীপে।
স্বামী বিবেকানন্দ বলেছিলেন বেঁচে থাকা শুধু নিজের জন্য নয়, বাঁচা তখনই সার্থক যখন আমরা বাঁচি অন্যের জন্য। জীবন আমাদের যখন সেই সুযোগ দিয়েছে, আসুন সকলে মিলে তা গ্রহন করে ধন্য হই।
Be First to Comment