Press "Enter" to skip to content

বনেদি বাড়ির পুজোর গল্প- উৎসব এর পরে…….

Spread the love

গোপাল দেবনাথ : কলকাতা, ৩, সেপ্টেম্বর, ২০২০। বিশ্বজুড়ে করোনা মহামারীর প্রকোপে সব ধরণের কাজকর্ম এক প্রকার বন্ধ ছিলো। ধীরে ধীরে একটু একটু করে সাধারণ কাজকর্মের সাথে সাথে বিনোদনের বিভিন্ন মাধ্যম ধীরে সুস্থে পাখামেলে সবে উড়তে শুরু করেছে। ইতিমধ্যে সরকারি বিধিনিষেধ মেনে বিভিন্ন ধারাবাহিকের শুটিং শুরু হয়েছে। সংখ্যায় অল্প হলেও সিনেমার শুটিং ও রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে শুরু হয়েছে। আজ ঠিক তেমনই এক শুটিং এর সাক্ষী থাকলাম। উত্তর কলকাতার বেলগাছিয়া অঞ্চলে বিশাল এক রাজবাড়িতে।

উৎসবের পরে শুটিং এর ফাঁকে

বাড়ি গেট দিয়ে ঢোকার মুখেই দুটো বড় কলা গাছ। চারি দিকটা বেশ সাজানো গোছানো। আম গাছের পাতা তার সাথে কদম ফুল দিয়ে সাজানো।সবটাই শরৎ কালের সাথে মানানসই, কেমন যেন পুজো পুজো গন্ধ। পরের মাসেই বাঙালির বহু প্রতীক্ষিত দুর্গা পূজা। এই সিনেমার গল্পের বিষয়বস্তু ও ঠিক তাই। দোতলায় উঠে মনটা খুব ভারাক্রান্ত হয়ে গেল, দেখতে পাওয়া গেলো একটি অল্পবয়সী মিষ্টি মেয়ে মেঝেতে শুয়ে আছে তার গায়ে সাদা চাদর দিয়ে ঢাকা! মনে হলো মা দুর্গার সাথে এই মেয়েটির ও বুঝি বিসর্জন হয়ে গেছে! বৃদ্ধ বৃদ্ধা ছোট বড় কিশোর কিশোরী সবার চোখে জল। এই বনেদি পরিবারের সকল সদস্য বারান্দায় দাঁড়িয়ে স্থির হয়ে গেছে। না এর চেয়ে বেশি বলা সম্ভব নয়।

পুজো বাড়ির মুডে – শ্রেয়া, ঐশ্বর্য্য ও ঋতব্রত।

এই সিনেমার পরিচালক অভিনন্দন দত্ত সাংবাদিকদের বলেন, ন’ এর দশকের শেষদিকে যে সকল বাঙালি দর্শক সিনেমা হল থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন, সেই সকল দর্শকদের ঋতুপর্ণ ঘোষ দাঁড় করিয়ে ছিলেন নন্দনের বাইরে লম্বা লাইনে। ঋতুপর্ণ নিটোল গল্প নিয়ে বাংলা সিনেমার এক ধারা তৈরি করে ছিলেন। ২০০০ সালে মুক্তি পেয়েছিল “উৎসব” সিনেমাটি। বনেদি বাড়ির পুজোর গল্প, এটা বলার মতো নতুন কিছু নয় এর আগেও বহু সিনেমা, সিরিয়াল ও উপন্যাস লেখা হয়েছে পুজো বাড়ির প্রেক্ষাপটে।

কৌশিক সেন

এটা ২০২০। করোনা ভাইরাসের মহামারীর ভয়ে আমরা সকলেই কমবেশি ঘরবন্দী। মুক্তির অপেক্ষায় সবাই ছটফট করছি। সিনেমা, থিয়েটার সহ সব ধরণের বিনোদন বন্ধ হয়ে আছে। আদৌ দুর্গোৎসবে ঠাকুর দেখা হবে কিনা এই মুহূর্তে কারও পক্ষে বলা সম্ভবপর নয়। ঠিক কুড়ি বছর পর প্রয়াত পরিচালক ঋতুপর্ণ ঘোষ কে ট্রিবিউট জানিয়ে এবার পুজোয় আসছে ‘উৎসবেরপরে”। দেখা যাবে আড্ডাটাইমস এর পর্দায়।

শ্রেয়া ভট্টাচার্য

পরিচালক অভিনন্দন গল্পটা একটু ছোট করে উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, মল্লিক বাড়িতে বছর ছয়েক পর বিদেশ থেকে উৎপল (কৌশিক সেন) এসেছে তার পরিবার নিয়ে, পুজো বাড়িটা এবার জমজমাট। পুজো মানেই কি শুধু গান বাজনা হৈ হৈ ? কিন্তু, এই মল্লিক বাড়ির অন্দরে লুকিয়ে আছে অনেক গোপন তথ্য, ইতিহাস। কালের নিয়মে যা চাপা পড়ে গিয়েছিল। হটাৎ করে বেরিয়ে পড়ে অন্দর মহলের সেই নিষিদ্ধ প্রেম ও রাজনৈতিক পালা বদলের ইতিহাস। স্বাধীনতা থেকে নকশাল আন্দোলন কিংবা আজকের এই অস্থির সময়, একই ছাদের নিচে সহাবস্থান। অভিনন্দন বলেন, কলেজ জীবনে উৎসব সিনেমা দেখার পর ছয় পাতার একটা গল্প লেখা হয়েছিল। যেহেতু গল্প লেখার মূল ভাবনা ছিল ঋতুদার উৎসব সিনেমা, তাই সেই গল্পের রেশ ধরেই এই ওয়েব সিরিজ। এই ওয়েব সিরিজ টি আট পর্বে দেখা যাবে।

ঋতব্রত

অভিনয় করেছেন কৌশিক সেন, ঋতব্রত, বিমল চক্রবর্তী, সেঁজুতি মুখোপাধ্যায়ের, অবন্তী দত্ত, পারমিতা, ঐশ্বর্য্য সেন, ঈশানি সেনগুপ্ত, শ্রেয়া ভট্টাচার্য সহ এক ঝাঁক তরুণ অভিনেতা ও অভিনেত্রী। গত মাসের ২২শে আগস্ট থেকে বেলগাছিয়া রাজবাড়িতে শুটিং চলছে।

ঐশ্বর্য্য সেন

‘উৎসবেরপরে’ আট পর্বের সিনেমায় ক্যামেরার দায়িত্বে আছেন- মৃন্ময় নন্দী। শিল্প নির্দেশনায়- আছেন বাবলু সিনহা। সংগীতে- ময়ূখ মৈনাক। মেকআপে-বাপ্পা মুন্সী। কেশ সজ্জায় – সুপ্রিয়া মন্ডল। প্রোডাকশন – রোল ক্যামেরা একশন। কো-প্রোডাকশন – ধাগা প্রোডাকশন।

উৎসবের পরে – প্রধান কলা কুশলী।

More from GeneralMore posts in General »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Mission News Theme by Compete Themes.