“আধুনিক মনোবিজ্ঞানের জনক সিগমুন্ড ফ্রয়েড” ( জন্ম -৬মে ১৮৬৫ – মৃত্যু ২৩ সেপ্টেম্বর ১৯৩৯) :-
ডাঃ দীপালোক বন্দোপাধ্যায় : ৬ মে ২০২২। মনোবিজ্ঞানের ইতিহাসে সবচেয়ে জনপ্রিয় অথচ বির্তকিত নাম ” সিগমুন্ড ফ্রয়েড “( Sigmund
Freud) ৷ তিনি সাইকোলজির “মনো সমীক্ষণের”
( Psychoanalysis) বিভাগের উদ্ভাবক৷ মানব সত্বার “অবচেতন”, “ফ্রয়েডিয় স্খলন”, “আত্মরক্ষণ প্রক্রিয়া ” এবং “স্বপ্নের প্রতীকি বিশ্লেষণ” কিংবা ” ইডিপাস কমপ্লেক্স” আজও ভাবায় ৷ তিনি একজন স্নায়ু রোগ চিকিৎসক হিসাবে রোগী দেখে মানুষের অবচেতন
মন ও সহজাত প্রবৃত্তি নিয়ে একবারে ভিন্ন ব্যাখ্যা দেন। তিনি “The interpretation of dreams ” ও
“Psychology of everyday life ” এ মানসিক রোগীর মনের ঠিকানা খুঁজেছেন ৷ বহু ভাষাবিদ
ফ্রয়েড জার্মান , হিব্রু , ল্যাটিন , গ্রিক , ফরাসি , ইংরেজি, ইতালীয় এবং স্পেনীয় জানতেন ৷ গ্রিক পুরাণের থিয়েভের রাজা ইডিপাসের নাম অনুযায়ী
“ইডিপাস কমপ্লেক্স” তত্বে তিনি শুদ্ধতম সর্ম্পকের সঙ্গে যৌনতাকে মেলানোয় অনেকে অবশ্য অরুচিকর মনে করেছেন ৷ তিনি বলেছেন ছেলে সন্তানের প্রথম আকাঙ্খিত নারী তার মা এবং মেয়ের কাছে তার বাবা ৷ তাই নাকি ছেলেরা প্রেমিকার মধ্যে মাকে এবং মেয়েরা বাবার মধ্যে স্বপ্নের পুরুষকে খোঁজে ! কামনার অবদমন থেকে নাকি ছেলেদের মায়ের প্রতি ভালোবাসা এবং
বাবার প্রতি ঈর্ষাবোধ জন্মায় ৷
এই ইলেকট্রা কমপ্লেক্স তত্ব সাহিত্য , সিনেমা , নাটক ,মার্ক্সবাদী ও নারীবাদীদের মধ্যে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে ৷ তিনি হয়ে ওঠেন আধুনিক মানবের গুরু ! চিকিৎসক হিসাবে আমাদের কাছে অনেক রোগী স্বপ্নের গল্প বলেন৷ যার ব্যাখ্যা খুঁজে পাওয়া যায় ফ্রয়েডের তিনরকম মনের ব্যাখ্যায় ৷ পরে যার নাম হয়েছে “ফ্রয়েডিয়ানিজম “৷ ব্যক্তিত্বের ত্রিগুণ কাঠামোর ধারণা৷ প্রথমতঃ at অর্থাৎ “এটি “- অজ্ঞান স্তরে ঘটে ৷ মূলত যৌনতা ৷ দ্বিতীয়তঃ -“আমি” ৷
অচেতন ও অবচেতন স্তরে তৈরী হয় ৷ তৃতীয়তঃ -“সুপার সেলফ” – যদি কেউ দীর্ঘসময় ধরেও এখান থেকে না বের হতে পারে কথোপকথনের মাধ্যমে এই শক্তি থেকে বেরিয়ে আসার ও নিজেকে সৃজনশীলতার প্রমাণ করার পরামর্শ দেন ৷ কোন ব্যক্তি ভবিষ্যতে যাতে ভীষণ যন্ত্রণাকে নিউরোসিসে পরিণত করতে না পারে ফ্রয়েড মানব মনের সেই সংঘাতকে দমন করার পথ দেখিয়েছেন ৷ ফ্রয়েডিয়ানিজমের মূল দিকনির্দেশনা – উদ্বেগ , আগ্রাসন ও যৌনতা ৷ স্মৃতি , আকাঙ্খা ও ধারণার সাথে দ্বন্দ্ব থেকে মানসিক রোগ হয় ৷আমাদের মন সবচেয়ে গতিমান ৷
এটা সচেতন( Conscious) , অবচেতন (Subconscious) এবং অচেতন ( Unconscious) তিনরকম ৷ তাঁর মতে “স্বপ্ন” হলো অবচেতন মনের কারসাজি ৷ ফ্রয়েডের মতে , কোন স্বপ্নই নিজে থেকে তৈরী হয় না ৷”No Dreams without link ” ! এর কারন ধারনা , কল্পনা ও না পাওয়ার বেদনা ৷ যা ঘুমের মধ্যে স্বপ্ন হয়ে ভীড় জমায় ৷
যে স্বপ্নে নিজের মনের কামনা বাসনা পূর্ণ হয় তাকে আমরা বলি ভালো স্বপ্ন ৷ আবার স্বপ্ন বেদনা দায়ক হলে বলি খারাপ স্বপ্ন ৷ যে কথা তাঁর “স্বপ্নের প্রতীকি ব্যাখ্যা” – য় রয়েছে ৷ তাঁর বইতে লিপিবদ্ধ এ সব তথ্য আমাদের ভাবায় ৷ তিনি প্রথমে ভিয়েনায় “Hysteria” নিয়ে গবেষণা করেছেন ৷ ১৯১০ এ মূলতঃ তাঁরই অনুপ্রেরণায়
তৈরী হয় “International Psychoanalytic association ” ! কিন্তু , তিনি ও মুখের ক্যান্সারের
যন্ত্রণা না সহ্য করতে পেরে আত্মহত্যা করেন ৷
Be First to Comment