Press "Enter" to skip to content

ফুটবল ক্যারিয়ারে মেসির প্রাপ্তি ও সাফল্যের শেষ নেই। অপ্রাপ্তি বলতে শুধু নিজ দেশ আর্জেন্টিনার হয়ে বড় কোন শিরোপা জিততে না পারা……।

Spread the love

শুভ জন্মদিন লিওনেল আন্দ্রেস ‘মেসি’

বাবলু ভট্টাচার্য : ফুটবল বিশ্বের এক নতুন বিস্ময় তিনি। একের পর এক পায়ের জাদুতে সৃষ্টি করে চলেছেন বিস্ময়। তাক লাগিয়ে দিচ্ছেন পৃথিবীকে। যে ম্যাচে তাকে দেখা যায়, ফুটবল অনুরাগী মাত্রই নড়েচড়ে বসেন। শুধু তাই নয়, বিপক্ষ শিবিরেও তিনি এক আতঙ্কের নাম। তিনি লিওনেল আন্দ্রেস মেসি।

রোজারিওর ছোট্ট মেসি এখন বিশ্ব ফুটবলের বড় জাদুকর- হুবহু এমন না হলেও গত এক যুগে হাজারবার কাছাকাছি সব শিরোনামে উদ্ভাসিত হয়েছেন আর্জেন্টিনার তারকা ফুটবলার লিওনেল আন্দ্রেস মেসি কুচেত্তিনি। আর্জেন্টিনার রোজারিও শহর থেকে যিনি এখন পৌঁছে গেছেন পুরো বিশ্বের মানুষের মনে।

ফুটবল ক্যারিয়ারে মেসির প্রাপ্তি ও সাফল্যের শেষ নেই। অপ্রাপ্তি বলতে শুধু নিজ দেশ আর্জেন্টিনার হয়ে বড় কোন শিরোপা জিততে না পারা। এর খুব কাছাকাছি গিয়েছিলেন মেসি। ২০১৪ সালের ফুটবল বিশ্বকাপ, ২০১৫ ও ২০১৬ সালের কোপা আমেরিকায় দলকে তুলেছিলেন ফাইনালে।

কিন্তু তিন ফাইনালের একটিতেও শেষ হাসি হাসতে পারেননি মেসি। তিনবারই আটকা পড়েছেন শেষ বাধায়। তবে ব্যক্তি খেলোয়াড় হিসেবে মেসি ছিলেন টুর্নামেন্টের সেরা। ২০১৪ সালের বিশ্বকাপে গোল্ডেন বল, ২০১৫ সালের কোপায় টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ ৪ বার জেতেন ম্যাচসেরার পুরস্কার।

এ তো গেলো অপ্রাপ্তির কথা। জাতীয় দলের হয়ে কোন শিরোপা না জিতলেও গোলসংখ্যায় ঠিকই দেশের সবাইকে ছাড়িয়ে গেছেন মেসি। এরই মধ্যে আর্জেন্টিনা দলের হয়ে তার গোলসংখ্যা ৭০। শীর্ষ পর্যায়ে ১৩৮ ম্যাচ খেলে ৭০ গোল করেছেন মেসি।

জাতীয় দলের কথা শেষে ক্লাব ফুটবলে ফিরলে মেসির শ্রেষ্ঠত্ব নিয়ে আর কারও কোন সন্দেহ থাকার কোন উপায় নেই। বার্সেলোনা অধিনায়ক লিওনেল মেসি এখানে যেন অদ্বিতীয়। ব্যক্তিগত কিংবা দলীয়- সব দিক থেকেই তিনি এগিয়ে অন্য যে কারোর চেয়ে। নিজে যেমন বারবার জিতেছেন সেরার পুরস্কার, তেমনকি বার্সেলোনাকেও এনে দিয়েছেন দারুণ সব সাফল্য।

বার্সেলোনা তো বটেই স্প্যানিশ ক্লাব ফুটবলের সকল রেকর্ডও রয়েছে মেসির দখলে। এখনও পর্যন্ত বার্সেলোনার হয়ে ৭২২ ম্যাচ খেলে করেছেন ৬২৯টি গোল। একইসঙ্গে রয়েছে প্রায় দুই শতাধিক এসিস্ট। স্প্যানিশ লা লিগায় ৪৪০ গোল ও ১৭৭ এসিস্ট- দুটিই রেকর্ড।

স্পেনের ক্লাবটির হয়ে দেড় দশকের ক্যারিয়ারে ১০টি লা লিগা, ৪টি উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ এবং ৬টি কোপা দেল রেসহ মোট ৩৪টি শিরোপা জিতেছেন মেসি। চলতি মৌসুমে সুযোগ রয়েছে ট্রফির সংখ্যা আরও বাড়িয়ে নেয়ার।

ব্যক্তিগত অর্জনেও মেসির সমানে নেই বিশ্বের আর কোন ফুটবলার। একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে তিনি জিতেছেন ছয়টি ব্যালন ডি অর এবং ছয়টি ইউরোপিয়ান গোল্ডেন বুট। এর বাইরে স্পেনের ঘরোয়া ফুটবলের অজস্র পুরস্কার রয়েছে মেসির ট্রফি কেবিনেটে।

সবমিলিয়ে আর্জেন্টিনা জাতীয় দল ও বার্সেলোনার মূল দলের হয়ে মেসির গোলসংখ্যা এখন ৬৯৯ (৭০+৬২৯)। অর্থাৎ আর মাত্র একটি গোল হলেই পেশাদার ক্যারিয়ারে ৭০০ গোলের মাইলফলক ছুঁয়ে ফেলবেন মেসি।

মেসির বাবা হোর্হে হোরাসিও মেসি স্টিল কারখানায় কাজ করতেন এবং মা সেলিয়া মারিয়া কুচ্চিত্তিনি ছিলেন একজন পার্ট-টাইম ক্লিনার। তার পৈতৃক পরিবারের আদি বাসস্থান ছিল ইতালির আকোনা শহরে। পাঁচ বছর বয়সে, মেসি স্থানীয় ক্লাব গ্রান্দোলির হয়ে ফুটবল খেলা শুরু করেন, যার কোচ ছিলেন তার বাবা হোর্হে।

১১ বছর বয়সে, মেসির গ্রোথ হরমোনের সমস্যা ধরা পড়ে। স্থানীয় ক্লাব রিভার প্লেট মেসির প্রতি তাদের আগ্রহ দেখালেও, সেসময় তারা মেসির চিকিৎসার খরচ বহন করতে অপারগ ছিল। যার পরিমাণ ছিল প্রতি মাসে ৯০০ মার্কিন ডলার। বার্সেলোনার তৎকালীন ক্রীড়া পরিচালক কার্লেস রেক্সাচ মেসির প্রতিভা সম্পর্কে জানতে পারেন। তিনি মেসির খেলা দেখে মুগ্ধ হন। হাতের কাছে কোন কাগজ না পেয়ে একটি ন্যাপকিন পেপারে তিনি মেসির বাবার সাথে চুক্তি সাক্ষর করেন।

বার্সেলোনা মেসির চিকিৎসার সমস্ত ব্যয়ভার বহন করতে রাজী হয়। এরপর মেসি এবং তার বাবা বার্সেলোনায় পাড়ি জমান। সেখানে মেসিকে বার্সেলোনার যুব একাডেমী লা মাসিয়াতে নথিভুক্ত করা হয়।

মেসি অন্যান্য খেলোয়াড়দের তুলনায় অধিক ক্ষিপ্র এবং তিনি অতি দ্রুত গতিপথ পরিবর্তন করতে পারেন। এছাড়াও তিনি কৌশলে ট্যাকল এড়িয়ে যেতে পারেন। তার ছোট ও শক্তিশালী পায়ের কারনে অতি অল্প সময়ে তিনি অধিক গতি অর্জন করতে পারেন। তার দ্রুতগতির পা তাকে গতিশীল অবস্থায়ও ড্রিবলিং করার সক্ষমতা প্রদান করে।

লিওনেল আন্দ্রেস মেসি ১৯৮৭ সালের আজকের দিনে (২৪ জুন) আর্জেন্টিনার রোজারিওতে জন্মগ্রহণ করেন।

More from GeneralMore posts in General »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Mission News Theme by Compete Themes.