শ্রীজিৎ চট্টরাজ / গোপাল দেবনাথ : ৮ ডিসেম্বর ২০২১। কোলকাতায় আই লিড ইনস্টিটিউট এর স্থাপনা ২০১০সালে। ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যত জীবনের ভিত গড়ে তোলার এক কর্মযজ্ঞ করে চলেছেন প্রদীপ চোপড়া। এই শিক্ষায়তন ইউনিভার্সিটি গ্র্যান্ড কমিশন স্বীকৃত মওলানা আবুল কালাম আজাদ ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির শিক্ষাক্রম অনুযায়ী পরিচালিত হয়।
এখানে সময়ের চাহিদা মেনে মাস কমিউনিকেশন ও মিডিয়া স্টাডিজের শিক্ষাক্রম অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।স্বাভাবিক ভাবেই নিজস্ব প্রযোজনার ক্ষেত্রে উৎসাহী হয়েছেন প্রতিষ্ঠানের প্রাণপুরুষ প্রদীপ চোপড়া। এর আগে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের ওপর তথ্য চিত্র নির্মিত হয়েছে।
চলতি বছরে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক বিজয়ের সেই ১৯৭১ সালের ঘটনার ৫০ তম পূর্তি উপলক্ষে আইলিডের তরফে একটি ছবি নির্মিত হয়েছে “১৯৭১ ইন্ডিয়াস্ ফাইনেস্ট আওয়ার” । যা আগামী ১৩ ডিসেম্বর কলকাতার পি ভি আর মনি স্কোয়ার মল এর প্রেক্ষাগৃহে প্রদর্শিত হবে।
ইতিমধ্যে ক্যান্সার রোগীদের ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের যে মানসিক ও শারীরিক প্রতিক্রিয়া হয়, তার প্রেক্ষিতে গড়ে তোলা হয়েছে পূর্ণ দৈর্ঘ্যের ছবি “বিফোর ইউ ডাই”। এক মিষ্টি প্রেমের গল্প। যেখানে নায়িকা ক্যান্সারে আক্রান্ত হবে। নায়ক ডাক্তারের পরামর্শে তাঁর জীবনসঙ্গিনীকে নিয়ে তাঁর মনের সব ইচ্ছাপূরণে ব্রতী হয়। কেননা সীমিত আয়ু নিয়ে এখন তো নায়িকার শুধু শেষ সময়ের অপেক্ষা।
তিনমাসব্যাপী শুটিং এর শেষে বিফোর ইউ ডাই ছবিটির সংগীত ও টিজার মুক্তি উপলক্ষে আই লিড এর কনফারেন্স হলে এক সাংবাদিক সম্মেলনে ছবির পরিচালক শুভেন্দু রাজ ঘোষ জানান, ছবিটি মুক্তি পেতে চলেছে আন্তর্জাতিক ক্যান্সার দিবস ৪ ফেব্রুয়ারি তে। সাংবাদিকদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয় নতুন সংগীত প্রতিভা দীপিকা ও তৃষা চ্যাটার্জি র সঙ্গে। বব এস এন এর সুরারোপিত এই ছবির দুটি গান গেয়েছেন এই কণ্ঠশিল্পী দুজন। অন্য কণ্ঠশিল্পীদের মধ্যে আছেন জুবিন নটিয়াল, পলক মুছল।
আইলিডের প্রাণপুরুষ প্রদীপ চোপড়া জানান, সম্প্রতি তাঁর মায়ের ক্যান্সার রোগে মৃত্যুর বেদনা তাঁকে এই ছবির কাহিনী লিখতে অনুপ্রাণিত করেছে। আমরা জানি না পরবর্তী পাঁচ মিনিটে আমরা বেঁচে থাকবো কিনা।কিন্তু ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগী ও পরিজন শুধু অপেক্ষা করেন মৃত্যুর ক্ষণের জন্য ।
ইতিমধ্যেই ছবিটি কান্সার রোগীদের দেখানো হয়েছে। এই ছবি মারফত বার্তা দেওয়া হয়েছে ক্যান্সার রোগী ও পরিজনের মনস্তত্ত্বের দৃঢতা কি ভাবে বাড়ানো দরকার।
এই ছবিতে মূল দুই চরিত্রে অভিনয় করেছেন নবাগত পুনিত রাজ শর্মা ও মিষ্টি মেয়ে কাব্য কাশ্যপ। অন্যান্য চরিত্রে জারিনা ওয়াহাব, মুকেশ ঋষি, মুস্তাখ খান, আরহা মহাজন, বাদশা মৈত্র, রীতা দত্ত প্রমুখ। ছবির টিজার দেখে বোঝা গেল, দার্জিলিংয়ের মনোরম লোকেশনে সুন্দর ফটোগ্রাফি করেছেন ডি ও পি অরবিন্দ নারায়ণ দোলই।
মর্মস্পর্শী বিষয় ক্যান্সার নিয়ে ১৯৭১ সালে হৃষিকেশ মুখোপাধ্যায় ছবি করেছিলেন আনন্দ। সে ছবিতেও দেখেছি হাতে গোনা দিনের জীবন নিয়ে নায়ক কি প্রাণশক্তিতে ভরপুর ছিলেন। সেই ছবির বিখ্যাত সংলাপ ছিল, বাবুমশাই, জিন্দেগি বড়ি হোনা চাহিয়ে। লম্বি নেহি। একই পরিচালকের মিলি ছবি। ১৯৭৫সালে। সেখানেও দেখেছি নায়ক প্রত্যক্ষ করেছেন ক্যান্সারে আক্রান্ত নায়িকার শেষ কয়েকদিনের জীবন। এরপর আঁখিয়ো কি ঝরোখো সে, এদিল হ্যায় মুশকিল, দিল বেচারা ইত্যাদি ছবিতেও পেয়েছি ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীর গল্প।
তবে আশার কথা, ক্যান্সার মানেই মৃত্যু নয়। প্রথম অবস্থায় ধরা পড়লে যেমন নতুন জীবন ফিরে পাওয়া যায়, তেমন রোগীকে যন্ত্রণা মুক্ত জীবনও চিকিৎসা বিজ্ঞানে মিলছে। সেক্ষেত্রে সচেতনা প্রচারে ইতিবাচক নামকরণ ছবির হওয়া উচিত। কিন্তু বিফোর ইউ ডাই নামকরণে একটা নেতিবাচক প্রভাব যেন কাজ করছে। তবে কলকাতায় বসে এমন একটা ঝকঝকে ছবি উপহার দেওয়ার জন্য পরিচালক শুভেন্দু রাজ ঘোষ এবং প্রযোজক ও অভিনেতা প্রদীপ চোপড়া দুজনেরই প্রশংসা প্রাপ্য।
Be First to Comment