ডঃ পি সি সরকার : (জুনিয়র) বিশ্বখ্যাত জাদুশিল্পী ও বিশিষ্ট লেখক। ৩০, ডিসেম্বর, ২০২০। ভারতীয় জাদু বিদ্যার সম্ভারে চৌষট্টী কলার মধ্যে শুধু ঐন্দ্রজাল বিদ্যার কথা জেনে বা শুনে অনেক পণ্ডিত ব্যক্তি, ভুল মন্তব্য করে জাদুর আলোচনায় জট, পাকিয়ে দিয়ে গেছেন। হস্তলাঘব বিদ্যা, সূত্রক্রীড়া, বৈনয়িকী বিদ্যা ইত্যাদি যে একদম আলাদা আলাদা শ্রেণীর জাদু-কলা তা তাঁরা বুঝতে পারেন নি। খুবই স্বাভাবিক সেটা। এসব ব্যাপারে তিনি বা তাঁরা অভ্যস্ত নন বা চর্চা করেন নি !! এটা তাঁর সাবজেক্টই নয়। উকিলকে দিয়ে যদি ডাক্তারী করানো যায় তাহলে সেটা যে রকম হবে, ঠিক তাই হয়েছে। ওদিকে তাঁরা উঁচু মাপের ব্যক্তি, সেজন্য প্রতিবাদ করাতেও বাঁধছে।
একজন প্রখ্যাত ব্যক্তি তাসের ম্যাজিক পছন্দ করেন না। তাঁর পছন্দ ইলিউশন, স্টেজের বড় মাপের ম্যাজিক। সেটা হতেই পারে। “পসন্দ্ আপনা -আপনা।” কিন্তু তাই বলে তিনি তাসের ম্যাজিককে হেয় করতে পারেন না। বা উল্টোটাও পারেন না। সৈন্যদলের লড়াই এর সাথে একক কুস্তির লড়াই এর তুলনা করা ঠিক নয়। এটা তাঁরা বোঝেন না। সেকারনেই হয়তো আমাদের সমাজের মধ্যে লীডার এত কম। বিভিন্ন রত্নকে এক সূত্রে তাঁরা বাঁধতে পারেননি, ভাবতেও অসুবিধে হয়েছে।
কিন্তু একথা ঠিক যে সিনেমা, নাটক, বিচিত্রানুষ্ঠানের সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে ওই টেবিলে বসে সুন্দর একটা তাসের ম্যাজিক দেখতে লোকে লাইন দেবেন না। এটা বাস্তব। কিন্তু সেজন্য ” তাসের ম্যাজিক ভালোনা” বলাটাও ভুল হবে।
যাই হোক, বাবা দেখলেন বড় স্টেজ ম্যাজিকের সঙ্গে সঙ্গীতের সঠিক মূর্ছনা যদি রাখা যায়, তাহলে আরো হৃদয়কে স্পর্শ করতে পারা যাচ্ছে। ব্যাস্ উনি পুরো একটা সিম্ফনি অর্কেস্ট্রা বাহিনীকে তৈরি করে গেঁথে জুড়ে দিলেন তাঁর ইন্দ্রজাল প্রদর্শনীতে। এই আবেগের মিশ্রণ তাঁরই অবদান। সেই ধারা আমি, আমার মেয়ে মানেকা বহন করে চলেছি।
ছবিতে বাবার সর্বপ্রথম নিজস্ব স্টাফ অর্কেস্ট্রার শিল্পী দের দেখা যাচ্ছে। তাঁরা উচ্চাঙ্গের ভারতীয় সঙ্গীত বাজাতেন , প্রচুর রেওয়াজের পর। সেজন্য পাশ্চাত্যের মতো সামনে কাগজে নোটেশন লিখে বাজাবার প্রয়োজনীয়তার বোধ করতেন না। এটাও ছিলো আমাদের বিশ্বজয়ের এক অবাক করার হাতিয়ার। মঞ্চসজ্জা, আলোকসম্পাত, কোরিওগ্রাফি,জাদুর মায়া, ব্যক্তিত্ব তো আছেই।
Be First to Comment