Press "Enter" to skip to content

প্রদীপের সঙ্গে আলাপ= প্রলাপ…। (পর্ব- ০০৪)

Spread the love


ডঃ পি সি সরকার (জুনিয়র) বিশ্বখ্যাত জাদুশিল্পী ও বিশিষ্ট লেখক। কলকাতা, ২, ডিসেম্বর, ২০২০। আজ থেকে বহু বছর আগে, আমাদের দেশ তখন সবে স্বাধীন হয়েছে, বিভিন্ন প্রদেশের যখন প্রথম মন্ত্রীসভা গড়ে উঠছে, তখন স্থির হয়, আমাদের বঙ্গের ‘প্রধানমন্ত্রী’ হবেন ফজলুল হক সাহেব। তখন ‘মূখ্য মন্ত্রী’কে বলা হতো ‘প্রধানমন্ত্রী’। কে কোন মন্ত্রকে বসবেন সব ঠিক হবার পর দুপুরের খাওয়া-দাওয়ার সময় হক সাহেব আমার বাবাকে অনুরোধ করেন একটা ম্যাজিক দেখাতে। বাবা বলেন, আমি নিশ্চয়ই দেখাবো কিন্তু তাতে আপনাদের সবাইকে সিরিয়াসলি সহযোগিতা করতে হবে। সবাই কথা দিলেন সহযোগিতা করবেন। বাবা তখন একটা সাদা কাগজ নিয়ে হক সাহেবকে একটা কিছু লিখে সই করে দিতে বললেন। উনি কিসব লিখে-টিখে সই করে দিলেন। তারপর বাবা সেই কাগজটা নিয়ে অন্যান্য সব মন্ত্রীদের সই করতে বলেন, সাক্ষ্মি হিসেবে। তাঁরা একে একে সই করে দিলেন।


বাবা তখন সেই কাগজটা উঁচু করে তুলে বললেন “আপনারা সবাই অন্তর থেকে সি করেছেন তো?” সবাই সমস্বরে বলেন “হ্যা, হ্যা, তাই”।
বাবা কাগজটা খুলে হক সাহেবকে বললেন, “দেখুন কি লিখে সবাই মিলে সই করেছেন!!”
পড়ে দেখা গেলো, ওনারা লিখে সই করে দিয়েছেন,” আমরা সদলবলে, সজ্ঞানে এই মুহুর্তে পদত্যাগ করলাম। এখন থেকে মাননীয় পি সি সরকার মহাশয়কে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মানলাম।”
হৈ হৈ সৃষ্টি হয়। সবাই আঁৎকে উঠেছেন। বাবা তখন বললেন, “যার যা কাজ সে সেটাই করাই ভালো। আমি জাদুকর…মন্ত্রী নই…আমি ম্যাজিকই দেখাবো। আপনারা নিশ্চিন্তে কাজ করুন”, বলে কাগজটা ছিঁড়ে কুচি কুচি করে হক সাহেবের হাতে দিয়ে দিলেন। সবাই হাততালি দিয়ে উঠলেন। হক সাহেব বাবাকে জড়িয়ে ধরলেন।
মধুরেণ সমাপয়েৎ।


বাবা পাঁচ মিনিটের জন্য প্রধান মন্ত্রী হয়েছিলেন।
বাবার এই ম্যাজিকটা মালয়েশিয়াতে আমিও করে দেখিয়ে ছিলাম। মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে ওদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ‘দাতুক হুসেন অন’ মহাশয়কেকে ওই রকমই এক ভোজসভায় আমি একটা সাদা কাগজ দিয়ে সই করিয়ে ,পুরো মন্ত্রীসভাকে পদত্যাগ-পত্র লিখিয়ে সই করিয়ে ছিলাম। উনি খুব চমকে গেছিলেন। সেই কাগজ হাতে ফেরত পেয়ে উনি তাড়াতাড়ি পকেটে রাখেন। সই করতে দেবার সময়কার ছবি এখানে প্রকাশ করলাম।

পত্র পত্রিকায় ছাপা হয়। পরদিন উনি আমাকে বাড়িতে নিমন্ত্রণ করে খাইয়ে হ্যাণ্ডশেক করে বললেন “খুব ভয় পেয়েছিলাম।”
আমি বলেছি, “দু দেশের বন্ধুত্ব যুগ যুগ জিও।” উনি বলেন- “নিশ্চয়ই”।
তখনকার ছবিও এখানে প্রকাশ করলাম।

More from GeneralMore posts in General »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Mission News Theme by Compete Themes.