Press "Enter" to skip to content

প্রথাগত বিদ্যা না থাকা সত্ত্বেও মেকানিক থেকে ফোর্ড কোম্পানির মালিক হয়ে ছিলেন হেনরি ফোর্ড……….

Spread the love

————-জন্মদিনে স্মরণঃ হেনরি ফোর্ড———-

বাবলু ভট্টাচার্য : ‘একবার না পারিলে দেখ শতবার’— এই প্রবাদ বাক্যটিকে পুঁজি করে যে কয়জন ব্যক্তি জীবনে বড় হয়েছেন তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন ‘হেনরি ফোর্ড’। একবার কিংবা দুইবার নয়, পর পর পাঁচবার ব্যর্থ হয়েও তিনি হাল ছাড়েন নি। শেষ পর্যন্ত বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ গাড়ি কোম্পানি ‘ফোর্ড কোম্পানি’র মালিক হয়েছিলেন তিনি। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার ছিটেফোঁটাও তার মধ্যে ছিল না। হেনরি ফোর্ড-এর বাবা উইলিয়াম ফোর্ড পেশায় ছিলেন একজন কৃষক। আর মা মেরি ফোর্ড খুব সাধারণ একজন গৃহিণী। ছোট থাকতেই বাবা-মা কে হারান ফোর্ড। এরপরের জীবন কাটে এক প্রতিবেশীর কাছে। ১৮৬৮ সালে স্কুলে ভর্তি করে দেয়া হলেও দুষ্টুমি করার কারণে স্কুল থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়। এরপর তিনি বাড়িতে লেখাপড়া করেন। মায়ের মৃত্যুর কারণে সেটিও খুব বেশিদিন হয় নি। হেনরি ফোর্ড হচ্ছেন বিশ্ববিখ্যাত গাড়ির কোম্পানি ‘ফোর্ড কোম্পানি’র মালিক। অনেকে তাকে ভুল করে গাড়ির আবিষ্কারক মনে করেন। তিনি মূলত উদ্ভাবন করেছিলেন গাড়ি ব্যবসায়ের। তার হাত ধরেই মানুষের কাছে পৌঁছে গেছে চার চাকার এই যানটি।

একটা সময় গাড়ি ছিল অনেক জটিল ও অনির্ভরযোগ্য একটি যন্ত্র। ছিল অনেক দাম আর সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে। হেনরি ফোর্ড তার মেধা দিয়ে দূর করেন গাড়ির ওইসব জটিলতা আর তা নিয়ে আসেন সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে। ১৮৭৬ সালে মা মারা গেলে ভীষণভাবে ভেঙে পড়েন তিনি। পড়াশোনাও বন্ধ হয়ে যায়। জীবিকার জন্য খামারে কাজ করতে হতো। কিন্তু যন্ত্রপাতির মিস্ত্রীর কি খামারে কাজ করতে মন চাইবে? ফোর্ডের বেলায়ও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। খামারে কাজ করা ছেড়ে দিয়ে ১৯৭৯ সালে জীবিকার সন্ধানে ডেট্রয়েটে গিয়ে মেকানিকের কাজ নেন। এ সময় তিনি জানতে পারেন বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীরা যান্ত্রিক গাড়ি বা মোটর চালিত গাড়ি আবিষ্কারের জন্য গবেষণা করে যাচ্ছেন। যন্ত্রের প্রতি ছেলেবেলা থেকেই আগ্রহী ছিলেন ফোর্ড। তিনি সিদ্ধান্ত নেন অবসর সময়ে মোটর গাড়ি উদ্ভাবনের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাবেন। এই লক্ষ্যেই বিজ্ঞানী টমাস আলভা এডিসনের ‘এডিসন লাইটিং কোম্পানি’তে যোগ দেন। এখানে তিনি রাতের শিফটে কাজ করতেন। আর দিনের বেলা চলতো গাড়ি নিয়ে গবেষণা। এভাবে প্রায় দুই বছর চলে তার এই প্রচেষ্টা। একসময় তিনি আয়ত্ত করে ফেলেন গাড়ি উদ্ভাবনের সকল কলাকৌশল। তাই এবার পুরো সময়টাকেই এই গাড়ি উদ্ভাবনের পেছনে ব্যয় করার লক্ষ্যে ছেড়ে দেন চাকরি।

১৮৯৩ সালের প্রথম দিকে সফলতার মুখ দেখেন হেনরি ফোর্ড। সে বছরের প্রথম দিকের কোনো রাতে নিজের উদ্ভাবিত গাড়ি নিয়ে রাস্তায় বের হন হেনরি ফোর্ড। প্রাথমিকভাবে সফলতা পাওয়ার পর এবার তার উদ্ভাবিত গাড়িটিকে আরও উন্নত করায় মনোযোগ দেন তিনি। এভাবে একসময় ডেট্রয়েটের শহরতলিতে মাত্র ২৮,০০০ ডলার পুজি নিয়ে গড়ে তোলেন ‘ফোর্ড মোটর কোম্পানি’। ৬৬৫ একর জমির ওপর নির্মিত এ কারখানা থেকে হেনরি ফোর্ডের সময় প্রতি বছর মোটর গাড়ি ছাড়াও নির্মিত হতো দশ লাখ ট্রাক্টর। একশ’টি রেলপথ দিয়ে সেগুলো বিভিন্ন দেশে পাঠানো হতো।

ফোর্ড মোটর কোম্পানির সব শ্রেণীর কর্মচারীর জন্য তিনি চালু করেন স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল, কল্যাণ ফান্ড, বৃত্তি ও অন্যান্য সেবাধর্মী কর্মকাণ্ড। তার প্রতিষ্ঠিত ফোর্ড ফাউন্ডেশন আজও বিশ্বের উন্নতিতে অর্থ সাহায্য করে যাচ্ছে।

হেনরি ফোর্ড ১৮৬৩ সালের আজকের দিনে (২৯ জুলাই) মিশিগানের গ্রিনফিল্ড টাউনশীপের একটি খামার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন।

More from GeneralMore posts in General »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Mission News Theme by Compete Themes.