Press "Enter" to skip to content

পাশ হলো কৃষি বিল। সময়টা খুব খারাপ যাচ্ছে আশি কোটি ভারতবাসীর……..

Spread the love

জিষ্ণুদীপ বর্মন : বিশিষ্ট সাংবাদিক ও চলচ্চিত্র পরিচালক, ২৩, সেপ্টেম্বর,২০২০। একে করোনা ভাইরাস -এর ভয়, তার ওপর দারিদ্র। কাজ নেই, পকেটে অর্থ নেই। সামনের দিনগুলো কী করে চলবে তার সঠিক ভাবনাও নেই। ঠিক এই সময় লোকসভা অধিবেশনে পাস হয়ে গেল “কৃষি বিল”। এই দেশের আম কৃষকদের বিরোধী বিল। কয়েক হাজার কোটি টাকার মালিকদের স্বপক্ষে এই বিল কথা বলবে । কৃষকরা এই বিলের বিরোধিতা করতে রাস্তায় নেমে পড়েছেন প্রায় সব রাজ্যে । হরিয়ানার বয়স্ক মহিলারা সবার প্রথমে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করেছেন। এ তো পুঁজিবাদের পুনরুত্থান ? ধনীদের সুবিধার্থে দেশের প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীজির নব- নবজাগরণ! এ তো সেই পুরনো জমিদারি প্রথার নতুন সংস্করণ ? আবার আমরা কি তাহলে দু’কদম এগিয়ে, চার কদম পেছনে হাঁটতে শুরু করেছি ? হাসি পাচ্ছে ডায়ালগ শুনে, “দেশ এগিয়ে চলেছে”। এ তো অনেকটা মিনি বাসের কন্ডাক্টরের মতো ডায়ালগ,”পেছনের দিকে এগিয়ে যান”। যা বাসে উঠলেই হামেশাই শোনা যায়। এই হচ্ছে “অচ্ছে দিন, অচ্ছে ভারত”-এর নমুনা। সত্যি কথা বলতে কী, শুধু কৃষকরা নয়, ছাত্র -যুব- মহিলা -বেকার -হকার সবাই এখন পথে নামতে বাধ্য। এছাড়া আর কোনও উপায় নেই । “পথে হবে এবার পথ চেনা”। শ্রী নরেন্দ্র মোদীজি কি ভেবেছেন, এতো সহজেই দরিদ্র ভারতবাসী ছেড়ে দেবেন? এতো সাহস পেলেন কোথা থেকে? কে কে এসবের প্রেরণা দাতা ? তাঁর সঙ্গী সাথী কে কে ? আমরা তাঁদের নাম জানতে চাই।
মোদী জি আপনার জেনে রাখা দরকার, কৃষকরা যদি এই মুহূর্তে চাষবাস বন্ধ করে দেয়, তা হলে আগামী দু বছর ভারতে দুর্ভিক্ষ লেগে যাবে। চারিদিকে খাবার নিয়ে হাহাকার লেগে যাবে । আর হবেও তাই। আপনাকে এই জনবিরোধী কৃষি বিল প্রত্যাহার করতেই হবে। আর তা না হলে গদি আপনাকে ছাড়তেই হবে । হবেই। তার ওপর আজকেই ঘোষণা হয়েছে, আলু, পেঁয়াজ, শস্য, ভোজ্য তেল নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য নয়। সাধারণ মানুষ, দরিদ্র ভারতবাসী বুঝে দেখুন, কত গভীর চক্রান্ত দেশের আশি কোটি ভারতবাসীর বিরুদ্ধে ? বাকি ২০ কোটি তো ধনীলোক। আর ১৪০ কোটির দেশে ৪০কোটি লোক মুসলিম। মুসলিমরা এখন আর সংখ্যালঘু নেই। তাই তাদের সরকারি সুযোগ সুবিধে, হজে যাওয়ার জন্য অর্থ অনুদান দেওয়া বন্ধ হোক। কোথায়, হিন্দুরা তো তীর্থভ্রমণ করতে গেলে অনুদান পায় না ? চাষিভাইদের বলছি, আপনারা দল বেঁধে এক জোট হয়ে
সবাই রাস্তায় নামুন যত শীঘ্র সম্ভব। তা না হলে বাঁচার রাস্তা নেই। কলকাতায় অনেক আম্বানি, আদানি আছেন। তাঁদের ওপরেও নজর রাখা একান্ত দরকার। চারিদিকে ছাঁটাই তো চলছে। বহু কল -কারখানা বন্ধ। তার ওপর আমাদের রাজ্যে এখনও লোকাল ট্রেন চালু হচ্ছে না। এর জন্য দায়ী রাজ্য সরকার। সাধারণ মানুষ নিরন্ন। আর মাত্র কয়েকদিন পরেই আমাদের সকলের প্রিয় দুর্গোৎসব শুরু হবে অথচ সাধারণ মানুষের হাতে পয়সা নেই। সাধারণ মানুষ দুবেলা পেটপুরে খেতে পাচ্ছেন না। করোনা ভাইরাসের ভয় করলে জীবন চলবে না! দীর্ঘ ছয়মাস হয়ে গেছে সাধারণ মানুষ বর্তমানে সকলেই সতর্ক আছেন, আর সকলেই নিজের নিজের দায়িত্বে যাওয়া -আসা করবেন।
প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দল এখন ভোট নিয়ে ব্যস্ত। সাধারণ মানুষের কথা ভাবুন একবার ? রাজ্য সরকার হঠাৎ ঘোষণা করলো, আমফানে ক্ষতি গ্রস্ত সিনেমা হল মালিকদের দুই লাখ টাকা করে সাবসিডি দেওয়া হবে। হল মালিকরা সমস্ত কাগজপত্র তৈরি করে ফাইল জমা দিতে দিতে নভেম্বর মাস লেগে যাবে। তারপর পুলিশ ভেরিফিকেশন হবে। সেই রিপোর্ট জমা পড়ার পরে রাজ্য সরকার পূর্ণাঙ্গ ফাইল নিয়ে বসবে। তারপর ফাইল পাস হলে অর্থ দপ্তরে যাবে। এসব করতে করতেই মার্চ মাস ২০২১এসে যাবে। তখন তো বিধানসভা নির্বাচনের হাওয়া? কে দেবে টাকা? তাই এটাও একটা চূড়ান্ত ঢপবাজি গল্প। খুড়োর কলের গল্প। ভোট পাওয়ার কৌশল। বরং EIMPA -র (অন্য কোন সংস্থার নয়) ছোট ছোট বাজেটের প্রযোজকদের ৫ লাখ টাকা করে সাবসিডি দেওয়ার কথা ভাবা যেতো। তাতে বাংলা সিনেমার পরিচালক ও কলাকুশলীদের উপকার হতো। দুবেলা দুমুঠো ভাত খেয়ে বাঁচতেন অনেকে। সিনেমা হলে আর কটা লোক কাজ করে ? আর হল বিক্রি করে মালিক অনেক টাকা পেয়ে যাবেন। ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির কর্মীরা কোথায় টাকা পাবেন ?
আর একটা বিষয়ে বলি, প্রত্যেক বছর কেন্দ্রীয় সরকার National Film Award-এর ব্যবস্থা করে । এবছর ৬৭তম NFA-এর ফলাফল 3 মে ২০২০ বের হওয়ার কথা ছিল । প্রত্যেক বছর এই তারিখেই ফলাফল ঘোষণা হয়। গত বছরও লোকসভা ভোটের জন্য পিছিয়ে ছিল । এবছর কোভিড -১৯ এর জন্য পিছিয়ে গেছে। কিন্তু আর কতদিন চলতে পারে এই গাফিলতি? সাত মাস হয়ে গেলো এখনও ফলাফল ঘোষণা হলো না । NFA.বলুন আর চাই IFFI বলুন, সবই তো মাছের তেলে মাছ ভাজা। ফিচার ফিল্ম -এ প্রতিটি প্রযোজকের কাছে নেওয়া হয় ১২০০০/- টাকা । সিনেমা জমা পড়ে প্রায় ৪৫০ থেকে ৫০০টি। প্রায় ৫-৬ কোটি টাকা । মোট পুরস্কার দেওয়া হয় ৭০ বা ৭৫লাখ টাকার। তা হলে কি এটা মাছের তেলে মাছ ভাজা নয় ?
আপনারাই বলুন ? গত বছর তো ৬৬তম NFA-তে কলকাতার কোনও সিনেমা দেখাই হয়নি । ৪ টে সিনেমা বাদ দিয়ে। আমরা যারা বাংলা সিনেমা পাঠিয়ে ছিলাম, (আমি পাঠিয়ে ছিলাম “বোলচাল -A Village Game”,ভাষা বাংলা ), কোনও সিনেমা দেখেইনি। কারণ যে DVD পাঠিয়ে ছিলাম, মজার কথা যেমন ভাবে পাঠিয়ে ছিলাম , ঠিক তেমন ভাবেই ফেরত আসে। সিলই খোলা হয় নি। সোজা কথায় বলতে গেলে গত বছর কলকাতাকে বয়কট করা হয়েছিল। কারণ আমরা তৃণমূল সরকার -এর রাজ্যে বাসকরি। এটাই আমাদের একমাত্র অপরাধ। রাজনৈতিক রেষারেষির জন্য আমরা হলাম বলির পাঁঠা। আর বাঙালি বলেও অনায়াসে অবহেলা করা যায়। তা
ছাড়া গত বছর বিগ বাজেটের সিনেমা কে পুরস্কার দেওয়া হয়েছে । ছোট বাজেটের সিনেমা বাতিল । জানি না এবছর কি হবে ?


১ নম্বর ছবিটি (নিচেরটি ) “Bolchaal-A Village Game” feature film -এর এক দৃশ্যে বিপ্রদাস ঘোষ, রূপাঞ্জলি রায়, সুরজিৎ মানা ও প্রদীপ দে। এই সিনেমাতে নারীর মাতৃত্ব লাভের অধিকার -এর পক্ষে কথা বলা হয়েছে। নারীর স্বাধীকার বিষয়ে আলোকপাত করা হয়েছে ।
২ নম্বর ছবিতে আমি পরিচালক জিষ্ণুদীপ বর্মন, ছবির নায়িকা রূপাঞ্জলি রায় ও চিত্রগ্রাহক অভিজিৎ বিশ্বাস।

JISHNUDEEP BARMAN, Journalist
ও Facebook সম্পাদক

More from GeneralMore posts in General »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Mission News Theme by Compete Themes.