শু ভ জ ন্ম দি ন প ন্ডি ত শি ব কু মা র শ র্মা
বাবলু ভট্টাচার্য : একটা সময় ছিল-যখন প্রাচীন ভারতের পশ্চিম দিকটায় শাসন করত পারস্য; মানে, ইরান। তেমনটা হলে যা হয়— বিজিত অঞ্চলের জীবনধারার ওপর আগ্রাসি পক্ষের সভ্যতা -সংস্কৃতির নিদারুণ প্রভাব পড়ে।
ভারতবর্ষের ক্ষেত্রেও তাই-ই হয়েছিল এবং প্রাচীন ইরানের সে প্রভাব অনিবার্যভাবেই প্রাচীন ভারতের পশ্চিম দিকের সংগীতের ক্ষেত্রেও পরিলক্ষিত হয়েছিল।
পারস্যের সন্তুর বাদ্যযন্ত্রটি ভারতের পশ্চিমাঞ্চলে ভীষণই লোকপ্রিয় হয়ে উঠেছিল। এভাবে সন্তুর বাদ্যযন্ত্রটি আজও পারস্যশাসনের স্মৃতি বহন করছে। তবে বাদ্যযন্ত্রের বিবতর্নের ধারাটি অত সরল নয়— বরং বেশ জটিল। কাজেই, সন্তুরের ওপর পারস্যের সন্তুর ছাড়াও প্রাচীন শততন্ত্রী বীণার প্রভাবও সংগীততত্ত্ববিদ্যার অধ্যাপকগণ লক্ষ করেছেন।
যা হোক। দীর্ঘদিন ধরে সন্তুর ভারতবর্ষে— বিশেষ করে জম্মু ও কাশ্মিরে শুধুমাত্র লোকবাদ্যযন্ত্র হিসেবেই পরিচিত ছিল। ৫০-এর দশক থেকে ভারতের প্রতিভাবান একজন সঙ্গীতজ্ঞ— পন্ডিত শিবকুমার শর্মা সন্তুরের সেই সীমাবদ্ধ গন্ডিটি ছাড়িয়ে সুরেলা ঐ তারের বাদ্যযন্ত্রটিকে নিয়ে গিয়েছেন লোকোত্তর এক উচ্চতায়— সন্তুরকে দান করেছেন এক গভীরতম স্বর্গীয় মহিমা। সেই সঙ্গে পেয়েছেন বিশ্বের সংগীতপিপাসু মানুষের অকৃত্রিম অফুরন্ত শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।
বাবা প্রখ্যাত গায়ক পন্ডিত উমাদত্ত শর্মা। পাঁচ বছর বয়সে তবলায় ও কন্ঠে তালিম শুরু। পন্ডিত উমাদত্ত শর্মা সন্তুর নিয়ে ভাবতেন। ইচ্ছে, ছেলে যেন সন্তুরে ভারতীয় রাগসংগীত বাজিয়ে সন্তুরকে সারাবিশ্বে জনপ্রিয় করে তোলে। তেরো বছর বয়েসে শিবকুমারের সন্তুর শেখা শুরু। বাবার স্বপ্ন সফল করতে হবে। পন্ডিত উমা দত্ত শর্মার স্বপ্ন সফল হয়েছিল।
১৯৫৫ সালে তৎকালীন বোম্বে শহরে প্রথম এক অনুষ্ঠানে সন্তুরে রাগ বাজিয়ে দশর্কশ্রোতাদের মুগ্ধ করেন পন্ডিত শিবকুমার শর্মা।
পন্ডিত শিবকুমার শর্মা ১৯৩৮ সালের আজকের দিনে (১৩ জানুয়ারি) জম্মুতে জন্মগ্রহণ করেন।
Be First to Comment