মুনমুন ভৌমিক : সোদপুর, ২৯, ডিসেম্বর, ২০২০। নারী ছাড়া সমাজ কল্পনা করা কি সম্ভব? না, সম্ভব না। নারী ছাড়া কি মানবজাতির অস্তিত্ব রক্ষা করা সম্ভব? না, তাও সম্ভব না। নারী কি আসলেই সমাজ থেকে তার পূর্ণ অধিকার পায়? পূর্ণ অধিকার বলতে ঠিক কতটুকু অধিকার? নারী সমাজে কীভাবে টিকে আছে? তার মর্যাদাই বা কতটুকু? পুরুষের সাথে তাঁর পার্থক্যই বা কী? প্রচলিত ধারণা বাদ দিয়ে একদম ভিন্ন চোখে আলোচনা করার ইচ্ছাতেই এই প্রবন্ধটি লিখতে বসলাম।
প্রসঙ্গত, সমরেশ মজুমদারের ‘মনের মতো মন’ উপন্যাস থেকে ছোট্ট একটা কাহিনী উল্লেখ করার লোভ সামলাতে পারছি না। উপন্যাসের নায়িকা আহির আর নায়ক স্বপ্নাশীষ। আহিরের ইউটেরাস ও ব্রেস্টে টিউমার ধরা পড়ে। তো হাসপাতালে যখন আহিরকে ভর্তি করানো হলো এবং অপারেশানের দিন স্বপ্নাশীষ আহিরের কাছে যেয়ে বলে, “আহির, তোমার আজ অপারেশন।”
“শুনেছ? আমার সব বাদ দেবেন ডাক্তার।”
“সব! সব কি বাদ দেওয়া যায়?”
“পুরুষরা তো মেয়েদের সর্বস্ব বলতে এই বোঝে।”
অর্থাৎ সমাজ নারী বলতে মানুষ বোঝে না। বোঝে শুধু একটা জরায়ু, একজোড়া স্তন। এতটুকুই তো বোঝে। নারী যে এর থেকেও বেশি কিছু হতে পারে, সেটা ভাবতে সমাজের পুরুষদের আরও অধিক কল্পনাশক্তির প্রয়োজন হয়।।
তবে এই কথাটি স্বীকার্য বর্তমান সময়ে নারী অনেক মুক্ত, স্বাধীন। অনেক পুরুষই এখন নারীর মুক্তি চায়। নারী, যাকে কখনো মা-রূপে, কখনো বধূ-রূপে, কখনো আবার কন্যা-রূপে দেখা যায়। নারী মাতৃমূর্তি, প্রেমিকামূর্তি, কন্যামূর্তি। নারী একজন মানুষ। যার পুরুষের মতোই হাত-পা আছে, চোখ আছে, কথা বলতে পারে। তবে নারী গর্ভধারণ করতে পারে। তার পুরুষের চেয়ে শক্তি বরং বেশি। পুরুষদের থেকে নারীরা বাঁচেও বেশি। নারী-পুরুষ দু’জনই সমান শক্তিশালী। সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি, ব্যক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গি, প্রজাতির দৃষ্টিভঙ্গির কারণে নারীরা এখনো একধাপ পিছিয়ে রয়েছে। আর সমাজ ও গণমাধ্যম নারীকে পণ্য বানিয়ে বিক্রি করছে। এক্ষেত্রে সুশীল সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি বদলানো খুবই প্রয়োজন।
প্রতিটি বিষয়ে নারীদের সমঅধিকার জরুরি। বর্তমানে নারীদের অনেক বিষয়েই পরিবর্তন এসেছে। এমনকি সবক্ষেত্রে নারীদের কোটা সিস্টেমও উঠিয়ে দেয়া উচিত। এতে নারীরা নিজেদের দক্ষতায় আরো বেশি উন্নতি করতে পারবে। নারীরা নিজেদের যোগ্যতায় সফল হচ্ছে। তাই তাদের কোটার মধ্যে বন্দি রাখার কোনো প্রয়োজন নেই।
Be First to Comment