Press "Enter" to skip to content

নটসূর্য অহীন্দ্র চৌধুরী ১৯২৩ সালে ‘কর্ণার্জুন’ নাটকে প্রথম অভিনয় করেন। ‘চিরকুমার সভায়’ রসিকের ভূমিকায় রবীন্দ্রনাথের পরিকল্পিত চরিত্রটি নিপুণভাবে ফুটিয়ে তুলেছিলেন……………

Spread the love

জন্মদিনে স্মরণঃ নটসূর্য অহীন্দ্র চৌধুরী।

বাবলু ভট্টাচার্য : চরিত্র চিত্রায়ণে অহীন্দ্র চৌধুরীর সমতুল্য কোন অভিনেতার নামকরা সত্যিই দূরূহ। মঞ্চ, বেতার ও চলচ্চিত্র- এই তিন ক্ষেত্রেই অহীন্দ্র চৌধুরী ছিলেন সমভাবে সমুজ্জ্বল। নাটক সম্পর্কে তার উৎসাহ ছেলেবেলা থেকেই। তাই অভিনয়কে পেশা হিসেবে গ্রহণ করেন। অভিনয়ে অসামান্য দক্ষতার জন্য তিনি সাধারণের নিকট ‘নটসূর্য’ নামে পরিচিত ছিলেন। তিনি লন্ডন মিশনারি স্কুলে কিছুদিন লেখাপড়া করেন। কিন্তু অল্প বয়সেই অভিনয়ের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়াশোনা বাদ দিয়ে তিনি থিয়েটার ও যাত্রাভিনয়ে যোগ দিয়ে এখানে সেখানে শখের থিয়েটার দলে অভিনয় করে বেড়াতেন। ১৯২৩ সালে ‘কর্ণার্জুন’ নাটকে তার প্রথম অভিনয়। এছাড়া ‘শ্রীরামচন্দ্র’, ‘অশোক’, ‘চক্রব্যূহ’, ‘সাহজাহান’, ‘মহারাজ নন্দকুমার’, ‘চন্দ্রগুপ্ত’, ‘মিশরকুমারী’ ইত্যাদি নাটকে অভিনয় করে তিনি স্মরণীয় হয়ে আছেন। ‘চন্দ্রগুপ্ত’ নাটকে যে অভিনেতা রণপরিচালক সেনানায়ক সেলুকাসের ভূমিকায় আশ্চর্যভাবে বিশ্বাসযোগ্য, তিনিই আবার ‘শাহজাহান’ নাটকে বৃদ্ধ সম্রাটের অবিকল প্রতিমূর্তি। আবার ‘চিরকুমার সভায়’ রসিকের ভূমিকায় যখন নেমেছেন, তখন রবীন্দ্রনাথের পরিকল্পিত চরিত্রটি নিপুণভাবে ফুটিয়ে তুলেছিলেন। তার শেষ অভিনীত নাটক ‘সাহজাহান’ মঞ্চস্থ হয় ১৯৫৭ সালে মিনার্ভা থিয়েটার মঞ্চে। এই নাটকে তিনি নাম-ভূমিকায় অভিনয় করেন।

১৯২১ সালে ফটো প্লে সিন্ডিকেট নামে একটি প্রতিষ্ঠান যখন তারই লেখা ‘সোল অব দি স্লেভ’ বইখানি চিত্রায়িত করেন, তখন তিনি তাতে ধর্মদাসের ভূমিকায় অভিনয় করেন। সাধারণ লোকসমাজে এবং সমালোচকদের নজরেও বইখানি যথেষ্ট প্রশংসা পায়। ১৯২২ সালের মার্চ মাসে কর্নওয়ালিস থিয়েটারে ছবিটি মুক্তি লাভ করে। অহীন্দ্র চৌধুরী ১৯৩১-৫৪ সাল পর্যন্ত ১২৫টিরও বেশি সবাক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন।অহীন্দ্র চৌধুরীর অভিনীত উল্লেখযোগ্য ছবিগুলো হচ্ছে- ‘সোল অব দি স্লেভ’, ‘বিষবৃক্ষ’, ‘প্রেমাঞ্জলি’, ‘মিসর রানী’, ‘দুর্গেশ নন্দিনী’, ‘শাস্তি কী শান্তি’, রাজসিংহ’, ‘ঋষির প্রেম’, ‘প্রহলাদ’, ‘বিষ্ণুমায়া’, ‘চাঁদ সওদাগর’, ‘রূপলেখা’, ‘সম্রাট অশোক’, ‘মহুয়া’, ‘দক্ষযজ্ঞ’, ‘ভক্ত কী ভগবান’ (হিন্দি), ‘কবীর’ (হিন্দি ও বাংলা), ‘বিদ্রোহী’, ‘কণ্ঠহার’, ‘প্রফুল্ল’, ‘বলিদান’, ‘তরুবালা’, কৃষ্ণসুদামা’, ‘পরপারে’, ‘রজনী’ ‘দেবী ফুল্লরা’, ‘শ্রাবণ সন্ধ্যা’।অভিনয়ে অসামান্য দক্ষতার জন্য ১৯৫৮ সালে সঙ্গীত-নাটক আকাদেমি কর্তৃক তিনি পুরস্কৃত হন এবং নাট্য শতবার্ষিকী উপলক্ষে ‘স্টার থিয়েটার পদক’ (১৯৭২) লাভ করেন। এছাড়া রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক সম্মানসূচক ডিলিট উপাধি প্রাপ্ত হন।

নটসূর্য ১৯৭৪ সালের ৫ নভেম্বর কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন।

নটসূর্য অহীন্দ্র চৌধুরী ১৮৯৫ সালের আজকের দিনে (১২ আগস্ট) কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন।

More from GeneralMore posts in General »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Mission News Theme by Compete Themes.