Press "Enter" to skip to content

ধনঞ্জয় ভট্টাচার্য আধুনিক বাংলা ও হিন্দি গান দিয়ে সঙ্গীত জীবন শুরু করেন……।

Spread the love

জন্মদিনে স্মরণঃ ধনঞ্জয় ভট্টাচার্য

“যদি ভুলে যাও মোরে জানাবোনা অভিমান / আমি এসেছিনু তোমার সভায় দুদিন গাইতে গান”- এই অঙ্গিকার করে ১৯৪০ সালে ১৮ বছরের যে তরুণটি প্রথম গান রেকর্ড করেছিলেন এবং এই গান প্রচারিত হওয়ার পর যিনি সঙ্গীত জগতে তাঁর স্বর্ণসিংহাসনের ভিত্তি প্রস্তর নিজের হাতে গেথে তুলেছিলেন, তাঁর নাম ধনঞ্জয় ভট্টাচার্য।

ধনঞ্জয় ভট্টাচার্যের পিতা সুরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। মাতা অন্নপূর্ণা দেবী সুন্দর গান গাইতেন। পড়াশোনা করেছেন বালির রিভার্স টম্পসন স্কুলে। আর পারিবারিক ও ধর্মীয় ভাবেই তার সঙ্গীত শিক্ষা ও সাধনা শুরু হয়েছিল। সঙ্গীতের তালিম নেন গোকুল নাগ, পণ্ডিত সত্যেন ঘোষাল প্রমুখের কাছে।

ধনঞ্জয় ভট্টাচার্য আধুনিক বাংলা ও হিন্দি গান দিয়ে সঙ্গীত জীবন শুরু করেন। ১৯৪০ সালে প্রণব রায়ের কথায় ও সুবল দাশগুপ্তর সুরে পাওনিয়ার রেকর্ডে গাওয়া তার প্রথম গান ‘যদি ভুলে যাও মোরে/ জানাবো না অভিমান- অসম্ভব জনপ্রিয়তা পায়। ‘শহর থেকে দূরে’ ছবিটিতে ‘রাধে ভুল করে তুই চিনলে না তোর প্রেমিক শ্যাম রায়’ গানটি গেয়ে তিনি পাদপ্রদীপের সামনে চলে আসেন।

বাংলা গান থেকে শুরু করে নজরুলগীতি, শ্যামা সঙ্গীত, উচ্চাঙ্গ সংগীতের সব শাখাতেই তার সমান দক্ষতা ছিল। বহু জনপ্রিয় গানের তিনি সুরকার ছিলেন। ‘মহাপ্রস্থানের পথে’ চলচ্চিত্রে তার দেওয়া সুর এক ইতিহাসের সৃষ্টি করেছিল। অনেক বাংলা ছবির নেপথ্য গায়ক ছিলেন তিনি।

১৯৫৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘সাধক রামপ্রসাদ’ ছবিতে ২৪টি গানের মধ্যে ২৩টি গানই তিনি গেয়েছেন। হিন্দি ছবি ‘মহাপ্রভু চৈতন্য’ তে তার গাওয়া গানগুলি বিশেষ উল্লেখযোগ্য।

দীর্ঘ পাঁচ দশকের সঙ্গীত জীবনে তিনি প্রায় ৫০০টি গানের রেকর্ড করেন। নিজে লিখেছেন প্রায় ৪০০টি গান। গীতিকার হিসাবে তিনি ‘শ্রীপার্থ’ ও ‘শ্রীআনন্দ’ ছদ্মনামে পরিচিত ছিলেন।

‘নববিধান’, ‘পাশের বাড়ি’, ‘লেডিজ সিট’ সহ পাঁচটি ছবিতে অভিনয় করেছেন। ‘পাশের বাড়ি’ ছবিতে সলিল চৌধুরীর কথায় ও সুরে ‘ঝির ঝির ঝির ঝিরঝিরি বরষায়’ গানটি জনপ্রিয় হয়।

ধনঞ্জয় ভট্টাচার্য বিবাহ করেন রেখাদেবীকে। তাঁদের তিন সন্তানের মধ্যে দীপঙ্কর ভট্টাচার্যই পিতার সঙ্গীত-ধারার একমাত্র উত্তরাধিকারী।

প্রবাদপ্রতিম শ্যামা সঙ্গীত শিল্পী অকালপ্রয়াত পান্নালাল ভট্টাচার্য ছিলেন তার সর্বকনিষ্ঠ ভ্রাতা। ধনঞ্জয় ভট্টাচার্য মা কালীর তথা ভবতারিণী দর্শন পেতেন, কিন্তু তার অনুজ পান্নালালের কোনদিন সে রকম মাতৃদর্শন হয়নি। সে কারণে শিশুর মতো কাঁদতে কাঁদতে মা-কে ডাকতেন। দেবীদর্শন না করতে পাওয়ার অবসাদে, অতৃপ্তি নিয়ে তিনি শেষ পর্যন্ত আত্মহনন করেন।

২৭ ডিসেম্বর ১৯৯২ সালে ৭০ বছর বয়সে কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন।

ধনঞ্জয় ভট্টাচার্য ১৯২২ সালের আজকের দিনে (১০ সেপ্টে) পশ্চিমবঙ্গের হাওড়া জেলার বালিতে জন্মগ্রহণ করেন।

More from MusicMore posts in Music »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Mission News Theme by Compete Themes.