কিশোর ভট্টাচার্য : ১০, ফেব্রুয়ারি, ২০২১।। ” মাঘ মাসের চতুর্দশী সংযুক্ত অমাবস্যায় রটন্তী কালীপূজা হয়। শ্রীরাধা বনে শ্রীকৃষ্ণের সাথে লীলা করতেন বলে তাঁর শ্বাশুড়ি জটিলা এবং ননদিনী কূটিলা শ্রীরাধার নামে কলঙ্ক রটিয়ে ছিলেন এবং তা প্রমাণ করার জন্য একদিন গোপনে তারা আয়ান ঘোষকে সাথে নিয়ে শ্রীরাধার পশ্চাৎ অনুসরণ করেন। আয়ান ঘোষের আরাধ্যা দেবী ছিলেন কালী। অন্তর্যামী শ্রীকৃষ্ণ জটিলা কূটিলার গোপন অভিপ্রায় জানতে পেরে স্বয়ং কালীরূপ ধারণ করেছিলেন। শ্রীরাধাও কালীরূপী শ্রীকৃষ্ণকে কদম্ব বৃক্ষের মূলে ফল, ফুল দিয়ে পূজা করেছিলেন। এদৃশ্য দেখে জটিলা, কূটিলা ও আয়ান ঘোষের ভূল ভাঙ্গে এবং শ্রীরাধা যে স্বয়ং আদ্যাশক্তি তা বুঝতে পেরেছিলেন। এই ঘটনাটি স্মরণ করেই ভক্তজন রটন্তী কালীপূজা করে থাকেন।”
দেবীর রটন্তী যাত্রা তথা রটন্তী কালী পূজো। “রটনা” শব্দ থেকে এই শব্দ এসেছে। রটনা শব্দের অর্থ প্রচার হওয়া। আজকের দিনে দেবীর মহিমা চতুর্দিকে রটে যায়। অর্থাৎ মায়ের কৃপাশীষ চতুর্দিকে বর্ষিত হয়- তাই এই তিথি রটন্তী অমাবস্যা নামে কথিত। মুক্তকেশী মায়ের মহিমা এই তিথিতেই সর্বস্তরে রটিত হয়ে থাকে। আজ দেবী ছিন্নমস্তার আবির্ভাব তিথি। দেবী পার্বতী তাঁর সহচরীদের ক্ষুধা মেটানোর জন্য নিজ মুণ্ড কেটে ত্রিধারায় রক্তবারি প্রকট করেছিলেন। দু ধারা ডাকিনী বর্ণিনীর মুখে ও একটি ধারা দেবী ছিন্নমস্তার মুখে- এমনই স্বরূপ। পদতলে সকামরত মদনরতি দলিতা এই দেবী ব্রহ্মচর্যের প্রতীক রূপে পূজিতা হন।
আবার এই মাঘ মাসের চতুর্দশী সংযুক্ত অমাবস্যায় রটন্তী বগলাদেবীর আবির্ভাব। সত্যযুগে প্রলয় ঝড় থামানোর জন্য ভগবান বিষ্ণু হরিদ্রা সরোবরে গিয়ে শ্রীবিদ্যার উপাসনা করলে, দেবী তখন বগলামুখী রূপে প্রকট হন। এই দেবীকে পীতাম্বরি নামেও ডাকা হয়। এই দেবীর কৃপায়, ভগবান বিষ্ণু সেই প্রলয় ঝড়কে স্তম্ভন করেছিলেন।


Be First to Comment