জন্মদিনে স্মরণঃ ওম পুরী
বাবলু ভট্টাচার্য : অভিনয়ের প্রচণ্ড ইচ্ছে কিন্তু চেহারা খারাপ– এমন ব্যক্তিদের জন্য ওম পুরি এক প্রেরণার নাম ৷ তিনি দেখিয়ে দিয়েছেন দক্ষতা, সামর্থ্য ও আকাঙ্ক্ষা থাকলে চেহারা কোন বিষয় হয়ে দাঁড়ায় না৷ গুটি বসন্তের ভয়াবহ দাগ মুখে নিয়েও রূপালি পর্দায় দাপটের সঙ্গে অভিনয় করা যায় ৷ দেখতে হিরো সুলভ না হলেও, বলিউডে এক অন্য ঘরানার ছবির মুখ হয়ে উঠেছিলেন ওম পুরি। বিশ্বের দরবারে ভারতীয় ছবিকে এক উচ্চ আসনে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন তিনি। পুরো নাম ওম রাজেশ পুরি। তিনি পুনের ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউট থেকে গ্রাজুয়েশন করে চলচ্চিত্রে পা রাখলেও প্রাথমিক জীবনে তাঁকে সংগ্রাম করতে হয়েছে দারিদ্রের সঙ্গে। পরিবারের আর্থিক অস্বচ্ছলতা দূর করার জন্য তিনি কয়লার ফার্মে কাজ করেছেন। তারপর সাত বছর বয়সে হোটেলে কাজ নেন। সেখানে বাসন মাজার কাজ করতেন তিনি।

এরপর নানা চড়াই উতরাই পেরিয়ে ওম পুরি মারাঠি চলচ্চিত্র দিয়ে রঙিন দুনিয়ায় পা রাখেন। ‘ঘাঁসিরাম কোতোয়াল’ নামের ছবিটি তাঁর অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র। এরপর থেকে একে একে ‘অর্ধ সত্য’, ‘আক্রোশ’, ‘গোধুলী’, ‘অরবিন্দ দেশাই কি আজিব দাস্তান’, ‘সদগতি’, ‘চান পরদেশি’সহ আরো অনেক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্রের মধ্যে ‘গান্ধী’, ‘চার্লি উইলসনস ওয়ার’, ‘দ্য হান্ড্রেড ফুট জার্নি’, ‘সিটি অফ জয়’, ‘ইস্ট ইজ ইস্ট’, ‘দ্য রিলাকটেন্ট ফান্ডামেন্টালিস্ট’ এর মতো বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্র এবং কিছু ধারাবাহিকে তাঁর অভিনয় দাগ কেটেছে দর্শকদের মনে৷ জুলিয়া রবার্টস ও টম হ্যাঙ্কসের সঙ্গে ‘চার্লি উইলসন ওয়ার’ চলচ্চিত্রে জেনারেল জিয়াউল হকের চরিত্রে অভিনয় করে সমালোচকদের প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন তিনি৷

ওম পুরি ১৯৯০ সালে ভারতীয় বেসামরিক ‘পদ্মশ্রী’ উপাধিতে ভূষিত হন। এছাড়া তিনি বেশ কয়েকবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ডসহ অসংখ্য পুরস্কার অর্জন করেন। এ ছাড়া ব্রিটিশ চলচ্চিত্রে অবদান রাখার জন্য ব্রিটিশ সরকার তাঁকে অর্ডার অব দ্য ব্রিটিশ এম্পায়ার (ওবিই) উপাধিতে ভূষিত করে।

ওম পুরি ৭ জানুয়ারি ২০১৭ সালে মুম্বাইতে মৃত্যুবরণ করেন।
ওম (রাজেশ) পুরি ১৯৫০ সালের আজকের দিনে (১৮অক্টো) ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশের পাতিয়ালায় জন্মগ্রহণ করেন।

Be First to Comment