ভালবাসার টেডি —
ভাস্কর ভট্টাচার্য : কলকাতা, ১০, ফেব্রুয়ারি, ২০২১। ভালবাসার সপ্তাহ। নরম হৃদয়ের উষ্ণতা মাখা আইসক্রিম, উষ্ণ আলিঙ্গন (হাগডে), ক্যাডবেরি মাখা এক ভালবাসার সপ্তাহ। ফেব্রুয়ারির ৭ থেকে ১৪। রোজ ডে, ক্যাডবেরি ডে, টেডি ডে, প্রোপস ডে, হাগ ডে। এইসব দিন পেরিয়ে আসবে ভালবাসার ভ্যালেন্টাইন। ভালোবাসায় মাখামাখি হবার ফাইনালের প্রস্তুতির পর্বে অনেকগুলি দিন। কাল ছিল ক্যাডবেরি ডে’ আজ
টেডি’ ডে।

ভালবাসার কাঙ্খিত প্রতীক হয়ে উঠেছে আজ এই টেডি ডে’। নরম তুলতুলে ফার দিয়ে তৈরি নানা ধরনের ভালুক। তা গ্রিজলি ভালুক হোক, মেরু ভালুক হোক বা পান্ডা হোক। এই টেডি বিয়ারই ভালোবাসার প্রতীক। নরম তুলতুলে এই টেডি বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলার সঙ্গী। শিশু থেকে কিশোরী এমনকি মেয়েদের কাছে অনেক বড় বয়স পর্যন্তও সঙ্গী হয়ে ওঠে এই টেডি। কারণ এই টেডির মধ্যেই লুকিয়ে আছে এক গোপন স্পর্শানুভূতির কামনা।

যা একজন প্রেমিকা পেয়ে থাকে একজন প্রেমিকের কাছ থেকে। এই টেডিই আবার ছোটদের সবচেয়ে জনপ্রিয় উপহারগুলির একটি। খেলনা হলেও টেডির মধ্যেই শিশু যেমন পায় খেলার সাথী, মায়া-মমতা, আন্তরিকতা শেখার সুযোগ, টেডি শিশুদের শেখায় লালন-পালন ও অপরের প্রতি যত্ন নেওয়ার কথা। সেই টেডির মধ্যেই একজন প্রেমিকা খুঁজে পায় তার দূরে থাকা বয় ফ্রেন্ডটিকে। তার অনুপস্থিতির অভাব পূরণ করে এই টেডি। টেডিবিয়ারই প্রতিটি মেয়ের প্রথম প্রেম এর শিহরন। যে টেডির মধ্য দিয়ে সে এক সখ্যতা খুঁজে পায়। আদর করে জড়িয়ে ধরে অনুভব করে প্রিয় পুরুষের উষ্ণতা। সেই উষ্ণতা নিয়েই আসে ভাল
বাসার টেডি ডে’। এর পেছনে আছে এক গল্প।

ভাগ্যিস সেদিন প্রেসিডেন্ট থিয়োডর রুজভেল্ট শিকার করতে ব্যর্থ হয়েছিলেন। ভাগ্যিস সেদিন তাঁর মনে হয়েছিল কোনো মৃত ভালুক মেরে গরিমা অর্জন করবেন না। আর সেই ঘটনাটিকেই সে সময়ের কার্টুনিস্ট মরিজ মিচম (Morris Michom) রাজনৈতিক ব্যঙ্গচিত্রের ছবি এঁকে সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন। ১৯০২ সালে ওয়াশিংটন পোস্টে প্রকাশিত সেই ছবিই ব্যবসায়ীদের হাত ধরে আজ ভালবাসার টেডি ডে’। সেটা ১৯০২ সাল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট মিসিসিপিতে থিয়াডর টেডি রুজভেল্ট গেছেন শিকার করতে।

কিন্তু অন্য সঙ্গীরা শিকার করতে পারলেও টেডি কোনো শিকার ধরতে পারেননি। টেড ছিল রুজভেল্টের ডাক নাম। সঙ্গী সাথীরা মজা করে একটা গাছের ডালে শিকার করা আধ মড়া এক ভালুককে ঝুলিয়ে রেখে বলেছিল এটাই তুমি শিকার করেছ। রুজভেল্ট মানতে চাননি। এমনকি নির্দেশ দিয়ছিলেন আধমরা ওই প্রাণীটিকে মেরে ফেলতে। এই ঘটনাটিকে কেন্দ্র করেই সেদিন এক মজার কার্টুনের রসিকতা ছড়িয়ে পডেছিল ওয়াশিংটন পোস্টের মতো সংবাদপত্রে।

আর সেই ঘটনাটিকেই কার্টুনের ছবির মতোই ফার দিয়ে এক নরম তুলতুলে খেলনা বানিয়ে ফেললেন নিয়ইয়র্ক স্টোর্সের মালিক ও তাঁর স্ত্রী। সঙ্গে
সেই খেলনা ভালুকটির নামই দিলেন টেডিস বিয়ার’। সেই টেডিস বিয়ারই আজ ভালবাসার `টেডি’ ডে।


Be First to Comment