শু ভ জ ন্ম দি ন প রা ণ ব ন্দ্যো পা ধ্যা য়
বাবলু ভট্টাচার্য : সত্যজিৎ রায়ের ছেলে সন্দীপ রায় তাকে টেলিভিশনের জন্য করা ‘সাধন বাবুর সন্দেহ’তে প্রথম অভিনয়ের সুযোগ দেন। তখন থেকেই অগণিত সিনেমা, থিয়েটার ও টেলিভিশনের কাজে দেখা গিয়েছে বর্ষীয়ান এই অভিনেতাকে।
‘টিনটোরেটোর যীশু’, ‘বোম্বাইয়ের বোম্বেটে’, ‘চিরদিন চিরকাল’, ‘গোসাইবাগানের ভূত’ কিংবা ‘ভূতের ভবিষ্যৎ’-এর মতো চলচ্চিত্রগুলো যারা দেখেছেন, তাদের কাছে সুপরিচিত চরিত্র পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। দুই বাংলার জনপ্রিয় শো ‘মীরাক্কেল’ দর্শকদের কাছেও পরিচিত মুখ তিনি।
সবার কাছে তিনি আদরের পরাণ দা। বুড়ো থেকে ছোট, সবাই তাকে এই নামেই ডাকেন। তিনিও সাড়া দেন সদা হাস্যোজ্জ্বল মুখে। বলছি এই বাংলা তথা কলকাতার বিখ্যাত অভিনেতা পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা।
জীবনের এত দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়েও সুস্থ-সবল প্রাণ নিয়ে বেঁচে আছেন ওপার বাংলার অভিনয়ের পরাণ। এখনো তিনি নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছেন সিনেমা-নাটকে কখনো কুটিল বৃদ্ধ, কখনো প্রতিবাদী যুবক, কখনো-বা মাঝবয়সি খিটখিটে বাড়িওয়ালার চরিত্রে।
শৈশবেই মা-বাবাকে হারিয়ে অনিশ্চিত জীবনের মুখোমুখি হন পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। পরে কলকাতার দমদমে তিনি তার পিসির কাছে মানুষ হন। কলেজে পড়াকালীন বিভিন্ন দলের সাথে যুক্ত থেকে গণনাট্য, নাটক, যাত্রা, থিয়েটার করার মধ্য দিয়ে অভিনয়ের জগতে প্রবেশ করেন।
মঞ্চে কাজ করার সেইসব দিনগুলো ছিলো সংগ্রামের। অভাবের সঙ্গে, নানা সংকটের ভিড়ে টিকে থাকার সঙ্গে। ক্যারিয়ারকে শক্ত অবস্থানে নিয়ে যাওয়ার সেই সংগ্রাম। সে সংগ্রামে তিনি জয়ী হয়েছেন পরিশ্রম, ধৈর্য ও সাধনায়।
তিনি প্রথম বড় পর্দায় হাজির হন ২০০০ সালে ‘দেখা’ নামক একটি শর্ট ফিল্ম দিয়ে। তারপর একে-একে ‘মন্দ মেয়ের উপাখ্যান’, ‘বোম্বাইয়ের বোম্বেটে’, ‘হচ্ছেটা কি’, ‘টিনটোরেটোর যিশু’, ‘দ্য জাপানিজ ওয়াইফ’, ‘গোঁসাইবাগানের ভুত’, ‘রয়্যাল বেঙ্গল রহস্য’, ‘বিন্দাস প্রেম’, ‘প্রলয়’, ‘চলো পটল তুলি’, ‘ভুতের ভবিষ্যৎ’, ‘যেখানে ভুতের ভয়’, ‘কিডন্যাপার’, ‘বাদশাহী আংটি’-র মতো বহু বিখ্যাত ছবিতে সাবলীল অভিনয় দিয়ে দর্শক মাতিয়েছেন।
তার অনবদ্য হাস্যকৌতুক ভরা সংলাপ মুগ্ধ করেছে জি বাংলায় জনপ্রিয় রিয়েলিটি শো ‘মিরাক্কেল’-এর মঞ্চে। তার মুখে ‘ভালো হয়েছে তবে আরও ভালো করতে হবে’- সংলাপটি খুবই জনপ্রিয়।
পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ১৯৪০ সালের আজকের দিনে (১৮ অক্টোবর) বাংলাদেশের যশোরে জন্মগ্রহণ করেন।
Be First to Comment